লেখালেখি
মাদকের কবলে হলিউড: গ্ল্যামারের আড়ালে তিক্ত সত্য
খ্যাতির লোভ অনেক সময় অন্ধকার জগতে ঠেলে দেয় সেলিব্রেটিদের। হলিউডের চকচকে গ্ল্যামারের মোহে পড়ে মিডিয়ার সজাগ দৃষ্টি, পাবলিক ইমেজ ও বিনোদন জগতের উচ্ছ্বাস টিকিয়ে রাখতে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন অনেকেই।
বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ ছোট হলেও অগুরুত্বপূর্ণ নয়
চলতি বছরের একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। গেল এপ্রিলে খবরটি বেশ চাউর হয়েছে। কমবেশি সবারই চোখে পড়েছে তা। সেটি হচ্ছে- ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা কাকার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ জানিয়েছেন তার সাবেক স্ত্রী ক্যারোলিন। কারণ হিসেবে ক্যারোলিন উল্লেখ করেছিলেন- কাকা মানুষ হিসেবে এতটাই পারফেক্ট (নিখুঁত) যে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বিচ্ছেদের। এমন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই নড়েচড়ে বসেছেন। কেউবা হয়তো ক্ষণিকের জন্য ভেবেছিলেন- ভুল পড়ছি না তো! সত্যিই তো, কেউ যদি পুরোপুরি নিখুঁতই হয়, তাহলে বিচ্ছেদইবা হবে কেন! এ তারকার বিচ্ছেদের বহু বছর পর এমন মন্তব্য করেছেন ক্যারোলিন যখন সাবেক এ দম্পতির দুজনই নতুন আরেকটি সম্পর্কে রয়েছেন।
সংস্কৃতি খাতে প্রস্তাবিত বাজেট বাড়লেও হতাশাজনক
গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার বাতিঘর বইয়ের দোকানে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল কয়েকজন লেখক-চিন্তকের সঙ্গে। বিদেশ-ফেরত এক অধ্যাপক ও লেখক বলছিলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি-চিন্তার ক্ষেত্র উন্নতি করতে হলে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি বই বাংলায় অনুবাদ করতে হবে। শুধু সাহিত্য নয়, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, গবেষণা, প্রযুক্তি সব বিষয়ের বই-ই প্রচুর অনুবাদ প্রয়োজন। তখন আরেক লেখক সরস মন্তব্য করেন, অনুবাদের জন্যই বাজেটে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকা উচিত। আরেক লেখক ভ্রুকুটি করে বলেন, ১ হাজার কোটি এখন কোনো টাকা!
সিনেমা: মুসলিম দেশগুলোতে
সিনেমা। এই শব্দটির ব্যাপকতা, প্রভাব ইদানীং অনেক বেশি। জনরুচির প্রাধান্য দিতে কিংবা জনরুচিকে প্রভাবিত করতে পারে এই মিডিয়াম। তাই সাধারণ মানুষের রুচি বা অভিরুচি মাথায় রেখেই বেশিরভাগ সিনেমা তৈরি হয় দেশে দেশে, বিশ্বে। কিছু সিনেমা আবার নির্মাতা নিজের ভালোলাগা, দর্শন, দায়িত্ব এবং দায়িত্ববদ্ধতার নিরিখে নির্মাণ করেন। তবে এসব সিনেমা ব্যাপকভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছায় না। একটা নির্দিষ্টসংখ্যক দর্শকের কাছে অজানাই থাকে। তবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্নরকম সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকে। থাকে ভ্যালুজ, ইডিওলজি, ট্যাবু এবং ধর্মীয় ইথিকসের বেড়াজাল, যা সিনেমার ভেতর স্বাধীনতাকে সংকুচিত করে দেয়। আমরা এটাও জানি, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম হয় না, হয় ব্যক্তির।
প্রিয় মানুষ: একজন এ বি এম হেলালের প্রতিকৃতি
মানুষমাত্রই তার অস্তিত্বকে প্রকাশ করে অন্যের আয়নায়। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহচারী, সহকর্মীদের চোখেই প্রধানত একজন মানুষের সারাজীবনের প্রতিকৃতি প্রতিবিম্বিত হয় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে। আর সে মানুষটি যদি একজন লেখক, গবেষক, ভ্রমণপিপাসু ও প্রকাশক হোন- স্বাভাবিকভাবেই তার আত্মপ্রকাশের পরিধি অনেক বেশি বিস্তৃত হয়। সঙ্গী, সহচারী হিসেবেও তিনি কাছে পান সেইসব বন্ধুবৎসল মানুষদের, যারা তার কর্ম, কৃতিকে শত পুষ্পের তোড়া বানিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন।
২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব: সবচেয়ে সফল উৎসবগুলোর একটি
আমার তারুণ্যে যে একটা চলচ্চিত্র উৎসব সম্পর্কে জানতাম, তা হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কথা। এখনো স্মৃতিতে ঝলঝল করে ছবি দেখার জন্য পাবলিক লাইব্রেরির খোলা চত্বরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। নতুন বিল্ডিং তুলবে বলে পাবলিক লাইব্রেরির পুরোনো বিল্ডিংটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। উৎসবের মূল ভেন্যু এখন জাতীয় জাদুঘর। নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে ঢুকতে হয় বলে সেখানে আর তেমন ভিড় হয় না। চলচ্চিত্র প্রেমিকরা স্বতন্ত্র প্রজাতির মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ছবি দেখবে, মাঝে মঝে গালগল্প করবে এই তাদের স্বভাব।
পুরস্কার বিতর্কের লাভ-ক্ষতি
সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন দুটি বিষয় খুব চলছে; ১. সপ্তম শ্রেণির একটি পাঠ্যবইয়ে মানুষের লৈঙ্গিক পরিচয়সম্পর্কিত একটি গল্প নিয়ে সৃষ্ট ধূম্রজালজনিত বিতর্ক এবং ২. বাংলা একাডেমির পুরস্কার। দুটির সঙ্গেই বই বা জ্ঞানের সম্পর্ক রয়েছে। এটি এক অর্থে ভালো লক্ষণ যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ বই তথা জ্ঞানের আলাপ করছে। যদিও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় এবার কারা বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেন, সেই আলোচনাকে ছাপিয়ে গেছে পুরস্কার গ্রহণের ১০ বছর পরে কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারের পুরস্কার ফেরত দেয়ার ঘটনাটি। ফলে এই নিবন্ধে আমরা বাংলা একাডেমির পুরস্কার-বিতর্কের লাভ-ক্ষতির দিকগুলো খতিয়ে দেখতে চাই।
শীতে যেমন জমলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমাদের দেশের আবহাওয়াটা তুলনামূলক শীত শীত থাকে। আর এ বছর শীতটা বিগত বছরগুলোর তুলনায় যেন বড্ড বেশি। শীতের মধ্যেই মেট্রোরেলে চড়ে শেওড়াপাড়া থেকে শাহবাগে গেলাম। উদ্দেশ্য একটাই–ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চলচ্চিত্র দেখা। শুধু যে চলচ্চিত্র দেখা ব্যাপারটা তা নয়। পরিচিত বন্ধুমহলের সঙ্গে সাক্ষাৎটাও যেন আরেকটা উদ্দেশ্য; কিন্তু এবারের মেলায় পরিচিত কাউকে তেমন বেশি একটা পেলাম না। আর উৎসবকর্মীর অনেকেই আমার জন্য নতুন মুখ। যেহেতু এবার টিকিটের কোনো বালাই নেই, শিডিউল দেখে সিনেমা দেখতে ভেতরে গেলাম। ভেতরে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বসার কোনো সিট খালি নেই। হাউসফুল যাকে বলে। চেষ্টা করে সিট পাওয়া গেল। সিনেমা শেষে বের হলে পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে দেখা, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল ভাইয়ের সঙ্গেও দেখা হলো।
শত জ্যোৎস্নার মাধুরী
তখন আমি মফস্বল সাংবাদিক। দুনিয়ার সবাইকে ড্যামকেয়ার করি। ইউএনও, ওসির সঙ্গে ঘুরে বেড়াই। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বেড়াই। নিউজ করার বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিই। চোরাকারবারিদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিই। আর লিখি কবিতা, পাশাপাশি গল্প। মাঝে মধ্যে লিখি নাটক। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সেসব নাটকের নির্দেশনা দিই। নাট্যদল নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরি, পরিবেশন করি নাটক। আর সম্পাদনা করি একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা। রবীন্দ্রনাথের লেখার খুঁত ধরে বেড়াই, নজরুলকে ছোট কবি বলে প্রচার করি, আর জীবনানন্দের কবিতা পড়ে কাঁদি। ভাবি, জীবনানন্দের পর আমিই বাংলা ভাষার সেরা কবি। আমার মতো মহান কবি জগতে দ্বিতীয়জন নেই।
রোকেয়ার ভাবনা আজকের পৃথিবীতে জেন্ডার সমতার সূত্র
বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ‘বেগম রোকেয়া’ নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম রোকেয়া খাতুন, যিনি বিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় মুসলিম নারী জাগরণ ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত। কোনোরকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, সম্পূর্ণ প্রতিকূল সামাজিক পরিবেশে, তিনি যেভাবে নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তির জন্য কাজ করেছেন, তা গোটা বিশ্বে বিরল। ‘লতা যেমন আপনিই আলোকের দিকে উন্মুখ হইয়া থাকে, যতই বাধা পাক এই নারীর জীবনে তেমনি সত্য ও সুন্দরের প্রতি একটি অনিবার্য প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।’ রোকেয়া প্রসঙ্গে এসব কথা লিখেছিলেন মোহিতলাল মজুমদার।