অর্থনীতি
নতুন নোট পাওয়ার দিনক্ষণ
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্রেশ নোট বিনিময় স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ বঙ্গবন্ধুর ছবি বা প্রতিকৃতি সংবলিত নোট তারা আর ইস্যু করতে চায় না। এই সিদ্ধান্ত গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সঙ্গতিপূর্ণ হলেও এবার ঈদে জনগণ নতুন নোট থেকে বঞ্চিত হলো, যা গণঅভ্যুত্থানের নতুন স্পিরিটের সঙ্গে আবার সঙ্গতিহীন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা প্রতিদিন নতুন নোটের জন্য চাহিদা দিচ্ছে, তাদের ধারণা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরাতন কর্মী হিসেবে আমার পক্ষে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কিছু ফ্রেশ নোট বের করা সম্ভব। যারা গণঅভ্যুত্থানের অকৃত্রিম সমর্থক তারাও ফ্রেশ নোট চায়, বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট হলেও তাদের কোনো আপত্তি নেই। ফ্রেশ নোটের বিরাট চাহিদা চট্টগ্রামবাসীর, ফ্রেশ নোট না পেলে তাদের ঈদ অপূর্ণ থেকে যাবে, নতুন নোট তাদের কাছে মেজবানের মতো। ঈদে সেলামি দেয়া-নেয়ায় রীতিতে পুরাতন ও জরাজীর্ণ নোট একেবারেই অনুপযোগী ও অগ্রহণযোগ্য। ফ্রেশ নোট না থাকায় এবার শিশুরা সেলামি থেকেও হয়তো বঞ্চিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে এবার ঈদ উৎসবে ফ্রেশ নোটে লেনদেনের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্যেও ছেদ পড়ল।
উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণ: বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে
উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হবার জন্য যে তিনটি আবশ্যিক শর্ত পরিপালন করতে হয়, বাংলাদেশ তার সবই বেশ ভালোভাবে পূরণ করেছে। এরপর কয়েক বছর পর্যবেক্ষণে ছিল বাংলাদেশ। আগামী বছর (২০২৬) বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হবে। স্বাধীনতার পর থেকে এটাই হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অর্জন। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের চিরদিন ধরে রাখতে চায় না। প্রতিটি দেশেরই আকাঙ্ক্ষা থাকে কীভাবে এবং কত দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া যায়। একটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকলে উন্নত দেশগুলো থেকে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়; কিন্তু সেটা কোনোভাবেই মর্যাদাপূর্ণ নয়। বরং এক ধরনের করুণা থেকেই এটা করা হয়। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত বা দরিদ্র দেশ হিসেবে থাকতে চায় না। উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হতে পারা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাকর।
ফ্রেশনোট ঈদে না ছাড়লেও অন্য সময় ছাড়তে হবে
বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে এক প্রজ্ঞাপন ইস্যু করে তাদের সব অফিসকে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে ফ্রেশনোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রেখে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সব লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদন করতে নির্দেশ দিয়েছে। একই প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেও ফ্রেশনোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছে। অর্থাৎ আসন্ন ঈদুল ফিতরে কোনো ফ্রেশনোট ছাড়া হচ্ছে না; কিন্তু এই প্রজ্ঞাপন জারির কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৯ মার্চ থেকে ফ্রেশনোট ইস্যু করা হবে মর্মে ঘোষণা দিয়েছিল। অল্প সময়ের ব্যবধানে পরস্পরবিরোধী প্রজ্ঞাপন থেকে প্রতীয়মান হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের গৃহীত পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কর ফাঁকি দেয়ার সব রাস্তা বন্ধ করতে হবে
দেশ ও অর্থনীতির এই পর্যায়ে এসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘পুশ ফ্যাক্টর’র প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। যে কোনো মূল্যেই হোক রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নীত করার জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কর প্রদানের উপযোগী বিপুলসংখ্যক মানুষকে এখনো ট্যাক্স নেটওয়ার্কের আনা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সঠিক পরিমাণে কর ও শুল্কায়নযোগ্য যে সব খাত বাইরে আছে সেগুলোকে শুল্ক ও করের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই পরিশীলিত, সংস্কারকৃত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়ে একটা করদাতাবান্ধব ও স্বয়ংক্রিয় প্রণোদনামূলক পদ্ধতি গড়ে তোলা বা প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। অর্থাৎ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা কর প্রদান করছেন না, তাদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি কর ফাঁকি দেয়ার সব রাস্তা বন্ধ করতে হবে। কর দান ও আদায়ের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা বা জটিলতাসহ স্পর্শকাতরতা রয়েছে, তা দূর করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২০২৪ সালের জন্য প্রাইম ব্যাংকের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
২০২৪ সালের সমাপ্ত বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বেসরকারি প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। যার ১৭.৫০ শতাংশ নগদ এবং ২.৫০ শতাংশ শেয়ার লভ্যাংশ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কিছু কথা
আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাথমিক কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুন মাসের ৫ তারিখ প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে যেহেতু জাতীয় সংসদ কার্যকর নেই, তাই আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কাছে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে সামরিক শাসনামল এবং ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছর ছাড়া প্রতি বছরই বাজেট জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নানা কারণেই ভিন্নতর হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক সরকার আমলে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা থাকে। সেখানে দলীয় নেতাদের তোষণ করার জন্য এমন কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয় বাস্তবে যার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।
ব্যাংক নিয়ে অবিমৃষ্যকারী বক্তব্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সরল উক্তি, জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক বাঁচানো যাবে না। কেন বাঁচানো যাবে না? তার উত্তর হচ্ছে, কোনো কোনো ব্যাংক থেকে ঋণের ৮৭ শতাংশই নিয়ে গেছে একটি পরিবার, যা আর ফেরত আসবে না। এ ধরনের বক্তব্য নতুন নয়, তিনি গভর্নর হয়েই বলা শুরু করে দিলেন যে, কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। শুরু হলো অস্থিরতা, গ্রাহকদের আমানত তোলার হিড়িক। শাখা ব্যবস্থাপকরা ব্যাংক শাখার দরজা বন্ধ করে গ্রাহকদের চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেন, যারা কোমল হৃদয়ের তারা কান্নাকাটি করে গ্রাহকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করলেন। গভর্নর বললেন উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে তিনি কোনো ব্যাংককে এক টাকাও দেবেন না। আমানতকারীরা আরও বেশি হতাশ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ল। পরে বাস্তবতা উপলব্ধি করে দুর্বল ব্যাংকগুলোতে টাকা ঢালতে লাগলেন; কিন্তু কাজ হলো না। কারণ আতঙ্ক দূর করা এবং আস্থা ফিরিয়ে আনা সহজ নয়। কীভাবে ব্যাংক থেকে একটি পরিবার টাকা নিয়ে গেল, কারা সহযোগিতা করল- এসব কথা কেউ বলে না। এস আলম পরিবার ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে গেলেও পিস্তল ধরে লুট তো করেনি, নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছে। ঋণ প্রদানে অনিয়ম হলেও জামানত থাকার কথা; না থাকলে কেন নেই, অফসাইট-অনসাইট পরিদর্শনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলা ছিল কি না- তা নিয়ে কারও মুখে কোনো কথা নেই।
খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উৎপাদনের সঠিক পরিসংখ্যান দরকার
দেশে নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে নিয়মিত যে পরিসংখ্যান দেয়া হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বাস্তবতার সঙ্গে তার মিল থাকে কম। আমাদের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধির হার, মূল্যস্ফীতি, উৎপাদন, ভোগ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তাতে সাধারণ মানুষের পুরোপুরি আস্থা থাকে না। এই আস্থাহীনতা দূর করা দরকার। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে উপস্থাপন করা দরকার সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান। নতুবা যথাযথভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা যে গবেষণা করি তার জন্যও দরকার হয় সঠিক পরিসংখ্যান। নতুবা তার ফলাফল ইস্পিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হয় না। অনেক সময় গবেষকগণ তাদের বিশ্লেষণের মূল ভিত্তি নির্মাণ করেন নিজস্ব সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত থেকে। তবে তার পরিধি থাকে খুবই সীমিত। নির্দিষ্ট এলাকা ও নির্ধারিত নমুনার ভিত্তিতে প্রণীত হয় ওই সব পরিসংখ্যান। বৃহত্তর পরিসরে ও জাতীয়ভাবে তা অনেক সময় প্রযোজ্য হয় না। জাতীয়ভাবে প্রণীত পরিসংখ্যান মূলত দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ বা সংস্থা থেকে প্রকাশ করা হয়। তার ওপর প্রচ্ছন্নভাবে আধিপত্তমূলক প্রভাব থাকে ক্ষমতাশীন সরকারের। তারই ইঙ্গিতে কখনো পরিসংখ্যান হয় অতিরঞ্জিত, স্ফীত। আবার কখনো হয় কম মূল্যায়িত। নিকট অতীতে এ ধরনের আলোচনা-সমালোচনা বরাবরই আমরা শুনে এসেছি।
রমজান ও ঈদ কেনাকাটায় ব্র্যাক ব্যাংকের এক্সক্লুসিভ অফার
গ্রাহকদের জন্য এই রমজান এবং ঈদকে আরো আনন্দময় করে তুলতে দেশজুড়ে এক হাজার ২০০-এরও বেশি আউটলেটে ব্র্যাক ব্যাংক দিচ্ছে আকর্ষণীয় অফার।
পাঁচ মাসে বাজেট বাস্তবায়নের হার ২৪.৮৪ শতাংশ
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট দিয়েছিল, যা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও অব্যাহত। বাজেটের বড় দুটি অংশ হচ্ছে উন্নয়ন বাজেট এবং অনুন্নয়ন বা পরিচালন বাজেট। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় মোট ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। সার্বিকভাবে বাজেট বাস্তবায়নের হার মোট বরাদ্দের ২৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।