সম্পাদকীয় মতামত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের আরও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে
গত জুলাই-আগস্টের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে মূলত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা। শিক্ষার্থীদের ডাকেই সারা দেশের মানুষ সাড়া দিয়েছিলেন। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সাধারণ নারী-পুরুষ শিশুরা পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের নিঃস্বার্থ আত্মদান সারা দেশের মানুষকেই স্পর্শ করেছিল গভীরভাবে; কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে ছাত্ররা নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন। এর কারণ তারা বিচার হাতে তুলে নিচ্ছেন, নিজেরা নানাভাগে ভাগ হয়ে গেছেন; এবং যে কোনো অজুহাতে হঠাৎ হঠাৎ আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন- রাস্তা অবরোধ করছেন, সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতেও তারা দ্বিধাবোধ করছেন না। এতে করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নাজুক হয়ে গেছে, কারণ সরকারও তাদের সেভাবে কিছু বলছে না; কিন্তু এবার রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙ্চুরের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ১৪ জন গ্রেপ্তারের ঘটনাটি সত্যিই দেশের মানুষকে হতবাক করে দিল।
বাংলাদেশের নারীদের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হোক
আজ ৮ মার্চ, ২০২৫। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য- “অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন”। যদি প্রতিপাদ্যগুলোর দিকে তাকাই তাহলে অনিবার্যভাবেই প্রশ্ন আসবে- আজ বাংলাদেশে নারীর অবস্থান কেমন? তার অধিকার কতটুকু? সমাজে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা হলো কতখানি? নারীর ক্ষমতায়নই-বা হলো কতদূর? কন্যার উন্নয়নে আমরা কী ভূমিকা রাখতে পারছি সমাজে-রাষ্ট্রে?
মব সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায় এড়াতে পারে না
সাইকোলজিতে মব সহিংসতার সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে: মব সাইকোলজি হচ্ছে এমন কর্মকাণ্ড যেখানে ব্যক্তি তার নিজস্ব বিচারবোধ হারিয়ে ফেলে যৌথ-মনস্তত্ত্ব দ্বারা পরিচালিত হন এবং যৌথ মতামতের ভিত্তিতে বিচারের দায়ভার নিজের হাতে তুলে নিয়ে সহিংসতা সৃষ্টি করেন। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ভয়ংকর মব সহিংসতা দেখছে। আগের এর কিছু নজির দেখা গেছে, তবে এখন দিন দিন তা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
লরি ও জাহাজ থেকে তেল চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
বাংলাদেশের বিভিন্ন তেলের ডিপো থেকে যে কম-বেশি তেল চুরি হয়, এটা অনেকেই জানেন। অনেকবার এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবরও এসেছে খবর আসার পরে প্রশাসন কদিনের জন্য একটু নড়েচড়ে বসে, পুলিশ কিছু ধরপাকড় করে, তারপর দেখা যায় সেই চুরিদারি ফিরে যায় আগের নিয়মেই। এবার এমনই এক খবর এলো বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে।
বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ কেন?
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতালের বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সময় একজন চিকিৎসক যতটা আন্তরিক থাকেন, নিজের হাসপাতালে তা দেখা যায় না। আবার অনেক সময় হাসপাতালে না গিয়ে শুধু বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখার অভিযোগও বহুদিনের। এমন অবস্থায় দেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প প্রায় দুই বছর আগে চালু হয়েছিল; কিন্তু ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ এ সেবা বন্ধ করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে বিপদে পড়েছেন রোগীরা। অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে স্বাগত: গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হোক
বাংলাদেশে বহুসংখ্যক রাজনৈতিক দল থাকা সত্ত্বেও দেশের গণতান্ত্রিক পথ মসৃণ করা যায়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন: সত্যিই কি আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন ছিল? এই রাজনৈতিক দলের হাত ধরে কি দেশের গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হবে? এই দলের নেতৃত্বে যারা আছেন, তাদের প্রায় সবাই গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। নতুন দলের নেতাদের সবাই বয়সে নবীন, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস ও প্রাণশক্তিই তাদের প্রধান সম্বল। গণতন্ত্রের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন আশা করা যায় তাদের হাত ধরে গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হবে।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকান
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নীতিগত অনুমতি না থাকলেও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বিভিন্নভাবে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা গ্রহণ করতে হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও প্রায় একইরকম বিবৃতি দিয়েছেন, অনেক সময় মানবিক কারণে বাধা দেয়া যায় না। সঙ্গে বিদেশিদের একটা চাপ থাকে। এ জন্য আমরাও তাদের সাহায্য-সহযোগিতা বাড়াতে বলেছি। আর এটাও তো ঠিক, যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আটকা।
শেষ হলো বইমেলা,রয়ে গেল অনেক প্রশ্ন
গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, এবার মেলার ব্যবস্থাপনায়, পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল। অনেক অপ্রিয় ঘটনা ঘটেছে, তার একটা প্রভাব পড়েছে বিক্রিতে। মেলার বিক্রি নিয়ে হতাশ অধিকাংশ প্রকাশক। বিক্রি এতটা নেমে যাবে তারা ভাবতেই পারেননি। প্রকাশকরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় বিক্রি এক-তৃতীয়াংশের মতো।
জীবনানন্দ-জগদীশচন্দ্রের নাম স্থাপনা থেকে বাদ কেন?
এমন বিষয় নিয়ে সম্পাদকীয় লেখা যেতে পারে এটা বোধহয় বাংলাদেশের কোনো সম্পাদক কখনো ভাবেননি। পৃথিবীতে অনেক ঘটনা-দূর্ঘটনাই ঘটে, কিন্তু কিছু ঘটনা একেবারেই কল্পনাতীত, ব্যাখ্যাতীত এবং জাতিগতভাবে লজ্জার। তেমন এক লজ্জাজনক ঘটনা ঘটল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা, ভবন থেকে বাদ দেয়া হয়েছে জীববিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু, প্রখ্যাত রসায়নবিদ ও শিক্ষক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, পদার্থবিজ্ঞানী ও শিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ বসু, কবি জীবনানন্দ দাশ, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মতো গুণীজনদের নাম। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম সচল করুন
বাংলাদেশে যে একটি প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) রয়েছে এ তথ্যটি হয়তো অনেকেরই অজানা, কারণ প্রাণিসম্পদ নিয়ে এ দেশে তেমন গবেষণা হয় না বললেই চলে। যদিও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক খাত; কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিয়ে কী ধরনের গবেষণা হয়েছে, তার কোনো ভালো খবর দেশবাসীর সামনে আসেনি। এসেছে একটি খারাপ খবর।