বিশেষ লেখা
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কতটা গ্রহণযোগ্য
সাংবাদিক কামাল আহমেদের নেতৃত্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের প্রতিবেদনটি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। কারণ ২৯ বছরের পেশাগত জীবনে ২৭ বছর এক নাগারে মাঠের রিপোর্টিং করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সেই চ্যালেঞ্জ উত্তরণের জন্য নিজেও গণমাধ্যমে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি। কোনো রাজনৈতিক সরকারের আমলেই এ ধরনের সংস্কার কমিশন হয়নি। এ কারণেই এই সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পড়ার জন্য প্রবল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেছি। ১৮০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরিতে নিশ্চিতভাবেই কমিশনের প্রধানসহ সম্মানিত অন্যান্য সদস্য অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। এই প্রতিবেদনে কয়েকটি দেশে সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সামনে আনা হয়েছে।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন মৌলিক পরিবর্তন
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই একটি কৌশলগত, সহযোগিতামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে যা বিকশিত কর্মী প্রত্যাশা, এআইর অগ্রগতি এবং হাইব্রিড কাজের মডেলের মধ্য দিয়ে কর্মীদের সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে। নতুন এই অপারেটিং সিস্টেম গড়ে তুলতে একটি রোডম্যাপ এখানে দেয়া হলো:
মহাসড়কে বেশিরভাগ সিসিটিভি ক্যামেরাই চুরি, এ সুযোগে তৎপর ডাকাতচক্র
সম্প্রতি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে সামনে এসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বলতার বিষয়টি। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে ও বিশেষ অভিযান চালিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না ডাকাতি এবং ছিনতাই। অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি এবং নারীদের শ্লীলতাহানির সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব অপরাধ কর্ম কেবল রাতের অন্ধকারেই হচ্ছে এমন না, দিনের আলোতেও হচ্ছে।
পূর্ণ নাগরিকত্ব ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চিয়তা নিয়েই ফিরতে চান রোহিঙ্গারা
সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশের দেয়া তালিকা থেকে তারা ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নেবে। এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বলছে, পূর্ণ নাগরিকত্ব ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না হলে তারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন না। তারা আশঙ্কা করছেন, নাগরিকের মর্যাদা নিশ্চিত না হলে আগের মতো নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হতে পারেন তারা। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা, এবং স্বাধীন চলাফেরার অধিকার না পেলে তারা ফেরত যেতে রাজি নন।
সংস্কৃতির সঙ্গে রাজনীতির কোনো সংঘর্ষ থাকা উচিত না
খায়রুল আনাম শাকিল। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ। সংগীতশিল্পী ও শিক্ষক। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন, পহেলা বৈশাখ, চৈত্রসংক্রান্তিসহ কয়েকটি দিক নিয়ে ভিউজ বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অ্যাডিটরিয়াল অ্যাসিসট্যান্ট শাহাদাত হোসেন তৌহিদ।
নববর্ষ উৎসব বাঙালির সরলরেখার ঐকতান
নববর্ষের শুরুতে সবাই কেবল মঙ্গল শুভেচ্ছাই প্রকাশ করে। আমি কিন্তু শুভেচ্ছার পাশাপাশি ঘৃণার কথা বলি। ঘৃণা, ঘৃণা, ঘৃণা! রুদ্র, প্রচণ্ড, প্রকট, প্রচুর, পবিত্র ঘৃণা! হ্যাঁ, বর্ষ শুরুতে অন্যের মতো আমিও শুভেচ্ছা জানাই বটে। তবে পাত্র-অপাত্র-নির্বিশেষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে রাজি নই। বন্ধুর জন্য আমি শুভেচ্ছার ডালি উজাড় করে দিই; কিন্তু শত্রুর জন্য শুভেচ্ছা নয়, তাকে কেবলই ঘৃণা। ঘৃণা জানাই তাদের যারা নববর্ষের মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক উৎসবকে বিভিন্ন রং মাখিয়ে বিতর্ক তৈরি করে নিজেদের সুবিধা হাসিল করে। তাই নববর্ষের দিনেও এদের যদি আমরা ক্ষমা করে দিই, তবে সে ক্ষমাকে তারা আমাদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ বলেই ধরে নেবে এবং শত্রুতা সাধনে আরও প্রচণ্ড হিংস্র হয়ে উঠবে।
পহেলা বৈশাখকে একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসেবেই পালন করতে হবে
বৈশাখ বঙ্গাব্দের প্রথম মাস। ১৪ এপ্রিল মানে পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। প্রথম দিনের উৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব। বৈশাখের আগমনের আগেই বসন্তের শেষবেলায় সোনাপাতি ফুলের মতো চারদিক আলোকিত করা পুষ্পরাজি সোনারঙের সৌন্দর্যের বাহার ছড়ায়। ফুলের গায়ে হলুদের মাখামাখি। হলুদের আঁচল বিছিয়ে প্রায় বিদায় নিয়েছে গাঁদা। অকাল বর্ষায় এসেছে নয়নাভিরাম সব ফুল। অনেক ফুল সবুজ পাতাগুলোকে ঢেকে দিয়ে জানান দিচ্ছে নিজের আগমন। ঐতিহ্যময় ইতিহাস বাংলা নববর্ষের। যুগের পর যুগ পার হয়ে নববর্ষের প্রথম দিনটি পালনে এসেছে অনেক ভিন্নতা, বহুমুখিতা।
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে যেন ভাটা না পরে
বাংলা নববর্ষতে আমরা সাধারণত দুটি শব্দ ব্যবহার করে থাকি। একটিকে ‘সন’ বলি, আরেকটিকে ‘সাল’ বলি। ‘সাল’ হলো ‘ফার্সি’ শব্দ আর ‘সন’ হলো ‘আরবি’ শব্দ। বাংলা ভাষায় প্রচুর আরবি, ফার্সি শব্দ আছে। বাংলাদেশ নামটিও বাংলা নয়, বাংলা ও দেশ ফার্সি শব্দ।
চৈত্রদিনে ঝরাপাতার গান
বসন্ত-যমজ চৈত্র এলেই মনে পড়ে যুগপৎ মৃত্যু ও জন্মের কথা। এ সময় জীবনের এই দুই ধ্রুব সত্যের দেখা মেলে প্রকৃতিতে। প্রকৃতিতে একদিকে চলে ঝরাপাতার খেলা। ঝরাপাতা মানেই মৃত্যু, স্মৃতি আর চলে যাওয়া পায়ের শব্দ। পর্ণমোচী গাছেরা পাতা ঝরিয়ে রিক্ত হয়। গাছের তলায় জমে ওঠে শুকনো পাতার স্তূপ। দুধ-চায়ের মতো রং সেসব পাতার, আবার কখনো বা চিনেবাদামের খোসার মতো গাঢ় বাদামি সেসব পাতারা। ওপর দিয়ে হেঁটে গেলেই মচমচ করে বেজে ওঠে প্রকৃতির সারিন্দা। নিস্তব্দ নিঝুম চৈত্রের ঝিম দুপুরে চিরসবুজ গাছেরাও ঝরাতে থাকে পাখির পালকের মতো বুড়ো পাতাদের। হাওয়ায় দুলতে দুলে কেঁপে কেঁপে ওরাও এসে ভিড় করে গাছের তলায় জমে থাকা শুকনো পাতাদের সঙ্গে।
কৃষি খাতের পুনর্মূল্যায়ন ও কৃষি কমিশন গঠন প্রসঙ্গে
উৎপাদনে আধুনিক উপকরণ ব্যবহার ও ভূমি উন্নয়নে এদের আগ্রহ থাকে কম। প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি ও কৃষি যন্ত্র সংগ্রহে এদের প্রবেশাধিকার কম। ফলে তাদের প্রতি ইউনিট জমির উৎপানে প্রবৃদ্ধির হার কম। অপরদিকে বড় ও মাঝারি কৃষকগণ ক্রমাগতভাবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষাবাদে। তারা ক্ষয়িষ্ণু কৃষক। চাষাবাদে তাদের বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে তাদের উৎপাদন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।