পরিবেশ ও জলবায়ু
দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান সমুদ্রদূষণে হুমকিতে মানবজীবন ও জীববৈচিত্র্য
আবর্জনা এবং প্লাস্টিকসহ কঠিন শিল্পবর্জ্যে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, যা উদ্বেগজনক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে পুরো মানবজাতির জন্য হুমকি সমুদ্রদূষণকেই। মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহার এবং সমুদ্রে ফেলে দেয়ার বিপদগুলো ক্রমবর্ধমান পরিবেশদূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে দেশগুলোর নাগরিকদের সঙ্গে বিশ্ববাসীকেও। সমুদ্রদূষণ এখন বিশ্বজুড়ে ভূমি এবং জলভাগের বৃহত্তম পরিবেশগত সমস্যা।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরবি শব্দ ভান্ডার হয়ে যেভাবে উপকূলে আঘাত হানতে যাচ্ছে
কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা কবিতাটি অপ্রাসঙ্গিক হয়েও যেন প্রাসঙ্গিক এখানে। কবি বেড়ে উঠেছেন এমন এক অঞ্চলে যেখানে বছরের পর বছর ঘূর্ণিঝড় এসে ভেঙে দিয়েছে মানুষের স্বপ্ন, কেড়ে নিয়েছে জীবন।
কবরের শুকনো জায়গা না থাকায় লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে
২০২৪ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা প্রত্যক্ষ করল ফেনীবাসী। আকস্মিক আবির্ভূত এই বন্যা ফেনীবাসীর কাছে ছিল অকল্পনীয়। বন্যার এই আগ্রাসী রূপ শুধু ফেনী নয়, ফেনীর আশপাশের জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় বন্যার পানি ঘরের চাল ছুঁয়েছে। বিদ্যুৎসহ সবরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এসব এলাকার মানুষ সারা দেশ থেকেও বিচ্ছিন্ন ছিল। পানির তীব্র স্রোতের কারণে বন্যাকবলিত যে সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে পারেনি, সেসব অঞ্চলের মানুষ গাছের ডাল, টিনের ছাল, বাড়ির ছাদ, গাছপালা, কলা গাছের ভেলার ওপরে বসে বাঁচার চেষ্টা করেছে। বয়স্ক, শিশু, নারী, রোগী এবং গর্ভবতীদের ছিল অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।
পরিবেশ রক্ষায় সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব
বাংলাদেশ শুধু নয়, পৃথিবীর কোথাও পরিবর্তনের যাত্রা খুব সহজ হয় না। আমি জানি অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে, যা আমি আগেও করেছি। আমাদের দেশে যেখানে আইনের শাসনের ইন্ডিকেটর খুবই নিচের দিকে, সেখানে এটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ; কিন্তু এই ঝুঁকিটা আমরা অতিক্রম করতে পারব, কারণ আমাদের সঙ্গে সমাজের মূল ধারার জনগোষ্ঠী আছে। বড় জনগোষ্ঠী এবং মূল ধারার মিডিয়ার সমর্থনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলও আমাদের ওপর নজর রাখে। মানুষের কাছ থেকে পাওয়া শক্তি দিয়েই আমরা ঝুঁকিগুলোর মোকাবিলা করতে চাই। বিভিন্ন প্রকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করাই আমার লক্ষ্য। পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অধিকতর জনবান্ধব মন্ত্রণালয়ে পরিণত করা হবে। নদীদূষণ রোধের কাজ হয়তো পুরোটা পারব না। তবে অতিদূষণ যেসব নদী আছে, সেগুলো গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে কাজ করব।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব ও বৈশ্বিক সংকট
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। বলাই যায়, এটি একুশ শতকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দিন দিন জলবায়ুর পরিবর্তন জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলায় তা আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে গবেষণাও চলছে ব্যাপক হারে। প্রাকৃতিক কারণে জলবায়ুতে স্বাভাবিকভাবেই কিছু পরিবর্তন হয়; কিন্তু যে মাত্রায় এখন তাপমাত্রা বাড়ছে, তার জন্য মানুষের কর্মকাণ্ডই প্রধানত দায়ী। মানুষ যখন থেকে কল-কারখানা এবং যানবাহন চালাতে বা শীতে ঘর গরম রাখতে তেল, গ্যাস এবং কয়লা পোড়াতে শুরু করল, সে সময়ের তুলনায় পৃথিবীর তাপমাত্রা এখন ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। বায়ুমণ্ডলে অন্যতম একটি গ্রিন হাউস গ্যাস কার্বনডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ঊনবিংশ শতকের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত দুই দশকে বেড়েছে ১২ শতাংশ। বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণেও বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন বাড়ছে। গাছপালা কার্বন ধরে রাখে। ফলে সেই গাছ যখন কাটা হয় বা পোড়ানো হয়, সঞ্চিত সেই কার্বন বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত হয়। যে কোনো অঞ্চলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই সুস্থ ও নির্মল পরিবেশ। আমাদের সামগ্রিক জীবনের ওপর পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম।
বাঁচতে হলে রুখতে হবে পরিবেশের মরুময়তা
গত দুই দশক ধরে আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণ দেখছে পুরো বিশ্ব। মরুভূমির উত্তপ্ত বালুতে যেখানে এক ফোঁটা পানির জন্য হাহাকার করতে হতো, সেই মরুর বুকে ফুটে উঠেছে বৃষ্টি আর সবুজের চিত্র । আবার বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশ ও ইউরোপে। নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বেশিরভাগ এলাকায় এখন গ্রীষ্মকালে থাকে মরুর লু হাওয়া। অধিকাংশ সময়ে ঠান্ডা থাকা ইউরোপে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) তাদের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা এখনই কমানো না গেলে খুব দ্রুতই বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়াকে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে। মরুময়তায় আচ্ছাদিত হতে পারে এই পুরো অঞ্চল।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রধান দুর্যোগ কী?
দেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা পরে মোবাইল ফোনে ছোট বোনের এসএমএস: ‘দাদা, ঘরের ভেতরে পানি উঠে গেছে। ছোট কাকার ঘরে হাঁটুসমান পানি। ফ্রিজ খাটের ওপরে ওঠানো হয়েছে। আব্বু-আম্মু খাটের ওপরে বসে আছে। আব্বু অস্থির। পানি কি খাটের ওপরেও উঠে যাবে?’
শহীদ আনোয়ারা পার্ক: দাও ফিরে সে অরণ্য…
গত শনিবার (১৮ মে) বিকেলের এই আয়োজন থেকে ঘোষণা এসেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ ৩০ দিনের মধ্যে এখান থেকে মেট্রোরেলের স্থাপনা সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যদি আনোয়ারা উদ্যানকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ না নেয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
বাংলাদেশে বজ্রপাতের ভয়াবহতা ও রক্ষার উপায়
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টি প্রশান্তি না এনে বজ্রপাতের আতঙ্ক নিয়ে এসেছে। বৃষ্টি আর ঝড় হলেই বজ্রপাতে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের ছয়টি উপজেলায় এক দিনে বজ্রপাতে ৯ জন প্রাণ হারান। এরপর ২৭ এপ্রিল এক দিনে ছয় জেলায় আটজন বজ্রপাতের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১৮ মে এক দিনেই দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে নরসিংদীতে চারজন, টাঙ্গাইলে দুইজন ও গাজীপুরে একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে ২০২২ সালের ঠিক একই দিন অর্থাৎ ১৮ মে এক দিনেই সারা দেশে বজ্রপাতে মারা যায় ১৯ জন। বজ্রপাতের এমন ভয়াবহতা আমাদের দেখতে হচ্ছে প্রতি বছরই; কিন্তু কেন বেড়ে গেল বজ্রপাতের প্রবণতা? এর থেকে রক্ষার উপায়ই বা কী?
কার্বন নিঃসরণ কমাতে রিকশাচালকদের ভূমিকার কি মূল্যায়ন হবে না
প্রতি কিলোমিটার গাড়ির চাকা ঘুরলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে ১৬২ দশমিক ১ গ্রাম; কিন্তু রিকশার চাকা ঘুরলে কোনো ধরনের কার্বন নিঃসরণ হয় না। আমাদের এই শহর ঢাকার অলি-গলিতে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলে। প্রতিদিন এসব বাহনের চালক ঠিক কত কিলোমিটার চাকা ঘোরায় তা বলা মুশকিল। তবে যদি এই ঢাকায় রিকশা না থাকত, তাহলে পেট্রোল পোড়ালে কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরিত হতো তা সহজেই অনুমান করা যায়; কিন্তু কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য রিকশাচালকদের কোনো প্রণোদনা কি দেয়া হয়? হয় না; কিন্তু কেন?