স্মার্ট বাংলাদেশ
বাড়তি করের বোঝা স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করবে
২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যে কর বিন্যাস তা একটি জটিল প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে বিশ্লেষকদের। এ বাজেটকে ওই দুটি খাতের জন্য ইতিবাচক বলব, না নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করব? এটা ঠিক, কোনো বাজেটই কাউকে শতভাগ সন্তুষ্ট করতে পারবে না, কিন্তু সন্তুষ্টি-অসন্তষ্টির মাত্রায় কতটা ব্যবধান সেটাই একটা বাজেটকে ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক হিসেবে মূল্যায়নে মূল নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা স্বস্তি দিলেও টেলিযোগাযোগ খাতে বাড়তি করের বোঝা স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করবে।
মেট্রোরেল কি আমাদের শৃঙ্খলা শেখাতে পারবে?
জাতি হিসেবে আমাদের বিশৃঙ্খলার কাহিনি কম নয়। এমন কী বিদেশি বিমানবন্দরগুলোতেও আমাদের এই বিশৃঙ্খলা দৃশ্যমান হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমিক হিসেবে যারা কাজ করতে যান, এই বিশৃঙ্খলাকে তারা হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করেন। মাঝে মাঝেই না কি তারা লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাদের লাইনে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেগ পেতে হয়।
স্মার্ট বাংলাদেশের পুলিশ কি হাত উঁচু করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করবে?
স্মার্ট বাংলাদেশের পুলিশ আর কত দিন হাত উঁচু করে ট্রাফিক কন্ট্রোল করবে! খুব সাদাসিধে প্রশ্ন। যদিও এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য কেউ নেই। রাজধানী ঢাকাতে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল রয়েছে। আজ থেকে বহু বছর আগে সাধারণ মানুষ এই ব্যবস্থার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করেছিল; কিন্তু কি জানি কি হলো সিগন্যাল বাতিগুলো রেখেই রাস্তায় মানুষ নামানো হলো। আর স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতিগুলো অকেজো হয়ে পড়লো।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে
শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা মানুষের চিন্তা-চেতনা ও বিবেক-বোধ সৃষ্টি করে, মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ সৃষ্টি করে, মানুষ হিসেবে তার অধিকার ও কর্তব্য নিশ্চিত করে। প্রতি বছর লাখ লাখ ছাত্র-ছাত্রী স্কুল-কলেজে ভর্তি হচ্ছে, আবার একই সংখ্যায় পাস করে বেরও হচ্ছে। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ছেলে-মেয়েদের পাসের হার অনেক বেশি; কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীরা মেধা, চিন্তা-চেতনা, মননশীলতা ও মূল্যবোধ বিকশিত হবার সুযোগ পাচ্ছে না। সে পথ রুদ্ধ হয়ে থাকছে। পাস করা বিদ্যার প্রতি আমাদের আগ্রহ বেশি। নম্বরের সূচকে আমরা শিক্ষার্থীর মেধা যাচাই করি। বেছে বের করি কে মেধাবী, কে মেধাশূন্য। এই মানদণ্ড এখন সর্বত্র কার্যকর। ফলে একজন শিক্ষার্থীর যাবতীয় ধ্যান-জ্ঞান, কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণ মার্কস অর্জনের মধ্যে।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য নারীকে কতটা প্রস্তুত হতে হবে?
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন চোখ থেকে মুছতে না মুছতেই এদেশের মানুষের চোখে ভর করেছে এক নতুন স্বপ্ন। স্মার্ট বাংলাদেশ। ভেঙে বললে, যা সাশ্রয়ী, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, টেকসই আর বুদ্ধিদীপ্ত এক দেশের কথা বলে। অর্থাৎ দেশ সাজবে নতুন সাজে। কেবল সাজ-সজ্জায় নয়, চলনে বলনে সবকিছুতেই দেশ হবে অত্যুজ্জ্বল, ঝকঝকে ও দেদীপ্যমান। ২০৪১ সালে অর্থাৎ মাত্র ১৮ বছরের মাথায় বাংলাদেশ জায়গা করে নেবে উন্নত দেশের কাতারে।
উন্নয়নশীল উন্নয়ন পরিকল্পনা
টেকসই উন্নয়নের জন্য উন্নয়নশীল পরিকল্পনার প্রভাবক ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিন্তা থেকে যেমন কাজের উৎপত্তি, বৃক্ষের পরিচয় যেমন তার ফলে- তেমনি পরিকল্পনার উদ্দেশ্য বিধেয়র মধ্যে অর্থবহ উন্নয়নে সদিচ্ছার সংশ্লেষ থাকলেই বলা যাবে সে উন্নয়নে সুফল মিলবেই। সে নিরীখে এভাবে যদি আমরা ভাবি, একটি জাতির দূরদর্শী পরিকল্পনায় ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা থাকলে উপযুক্ত উপাদনের অভাব হেতু সেখানে যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটে, তাহলে উন্নয়ন ভিন্নমুখী হয়ে যেতে পারে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্মার্ট মানুষ প্রয়োজন
বাংলাদেশ বিগত এক যুগে বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক উন্নতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই অর্জন আন্তর্জাতিকভাবেও নন্দিত। বাংলাদেশ ২০১৫ সালে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়। এ ছাড়া, এই সময়ে দারিদ্র্য, শিশু মৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, খর্বাকৃতি শিশুর হার হ্রাস এবং নারীর ক্ষমতায়নে অভূতপূর্ব উন্নতি অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশে। চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৩১ সাল নাগাদ উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশে রূপান্তর করা এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে যুক্ত করা।
স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পে আগামীর জনগণ
‘২০২১ থেকে ২০৪১’ পর্যন্ত সময়ে কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে, তার একটা কাঠামো পরিকল্পনা বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করে ফেলেছে, যা জনগণের জন্য অন্যতম আশীর্বাদ বয়ে আনবে। অন্যদিকে ২০৪১ সালেই শেষ নয়, ২১০০ সালেও এ বঙ্গীয় বদ্বীপ যেন জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশ উন্নত হয়, দেশের মানুষ যাতে ‘সুন্দর, সুস্থ ও স্মার্টলি’ বাঁচতে পারে, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান করে দেয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিবেচনায় ২০২১ থেকে ৪১ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনাও প্রণয়ন শুরু হয়ে গেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পরবর্তী মূল লক্ষ্য।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বড় বাধা হবে শহরের যানজট
রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ফলে পরিবহন ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যাদের পরিবহন ব্যবস্থা সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা তাদের অপরিণামদর্শী বিভিন্ন উদ্যোগ ও সিদ্ধান্তের কারণেই মূলত পরিবহন ব্যবস্থায় এই অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার বিশৃঙ্খল অবস্থার বিষয় উঠলেই আমরা হয়তো গাড়ি চালকদের দোষারোপ করি; কিন্তু যারা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন, স্বল্পায়তন সড়কে বিপুলসংখ্যক যানবাহনকে চলাচলের অনুমতি দিয়ে তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। অথচ চালকদের চেয়ে তারাই বেশি দায়ী, যারা রোড পারমিট দেন উপযোগিতা বিবেচনা না করেই। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়ই যদি আমি বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করি তাহলে তো সমস্যা থেকেই যাবে।
স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট স্বাস্থ্য খাত অর্জন, প্রস্তুতি ও সম্ভাবনা
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে সফল যাত্রা শেষে বাংলাদেশের পরবর্তী গন্তব্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ। আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বাস্তবায়নকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথ ধরে আমাদের সব রাস্তা এখন ওই একমুখী। সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য খাতও এর বাইরে নয়। আমার মনে হয়, যে কেউই আমার সঙ্গে একমত হবেন, কোনো দেশ যখন ডিজিটালাইজেশনের পথে হাঁটতে শুরু করে, তখন সেই যাত্রার শুরুটা সাধারণত হয় স্বাস্থ্যসেবার আঙিনা থেকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিছুটা ব্যতিক্রম, হয়তোবা আমাদের স্বাস্থ্য খাত এক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়েই পড়া।