দেশ ও রাজনীতি
বাংলাদেশে কত বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন?
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি নিয়ে সরকারের কমিটি গঠনের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন তারা। মঙ্গলবার বিকেলে কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য সচিবালয়ে যায়। আলোচনায় দাবির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি গঠনের আশ্বাস দেওয়া হয়। এর আগে সোমবার দিনভর শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। এতে পুরো রাজধানী প্রায় অচল হয়ে যায়। এমনকি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ চলন্ত ট্রেনে ইট-পাটপকেল ছুড়লে শিশুসহ বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
ব্রিকস তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পরবে?
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সফল সমাপ্তি ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার অর্থনীতিকে বৈশ্বিক বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে দেশটির ওপর অনেক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এরই মধ্যে গত কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়ায় বিশ্বনেতাদের সবচেয়ে বড় সমাবেশটি হয় এই ব্রিকসেই। ৩৬টি দেশের শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে তিন দিনের সম্মেলনে রাশিয়া এবং পুতিনকে বিশ্বজুড়ে বিচ্ছিন্ন করতে পশ্চিমাদের চেষ্টা ব্যর্থই হয়েছে।
ট্রাম্পের কারণে বদলে যাচ্ছে ইইউর কূটনীতি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারের পর নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান ও সমর্থকদের উসকে দিয়ে দাঙ্গা বাধিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এ নিয়ে মামলা ও ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল, ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বুঝি শেষ হতে চলল; কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ট্রাম্প দোর্দণ্ডপ্রতাপে ফিরে এসেছেন ক্ষমতার মসনদে, যা ইতিহাস গড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আড়াইশ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছিল আরেকবার। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড চার বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৮৮৮ সালে হেরে যান। ঠিক চার বছর পর ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে জিতে তিনি হোয়াইট হাউসে ফেরেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ধরে ১৩২ বছর পর সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখল যুক্তরাষ্ট্র। এই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আরেকটি ইতিহাস গড়েছেন ট্রাম্প। সবচেয়ে বেশি বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশে অনুসৃত গণতন্ত্রের স্বরূপ
বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকলেও সকল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনুসৃত রীতি-পদ্ধতি এক নয়। তবে রীতি-পদ্ধতি ভিন্ন হলেও জনগণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভোটে সরকার গঠনই হচ্ছে গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গণতন্ত্রের পক্ষে-বিপক্ষে প্রচুর কথা থাকলেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দেশের উন্নয়নের সর্বোত্তম পন্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়; কিন্তু স্বৈরশাসকের আমলেও প্রভূত উন্নয়ন হয়। মধ্যপ্রাচ্যের কোনো মুসলিম দেশে গণতন্ত্র নেই, জবাবদিহি নেই, নাগরিকদের বাক স্বাধীনতাও নেই; কিন্তু উন্নয়ন আছে। তাই শুধু উন্নয়ন দিয়ে গণতন্ত্রের বিচার করা ঠিক নয়। ফ্যাসিজম বিবেচনায় বাংলাদেশে অনুসৃত গণতন্ত্র আর মধ্যপ্রাচ্যের রাজতন্ত্রের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই।
মুনতাহার মৃত্যু ও অমানবিকতা
পাঁচ বছরের ছোট্ট মুনতাহা। ঠোঁটে লাল রঙের লিপস্টিক। মুখে একরাশ হাসি। ঘাড় পর্যন্ত চিকচিকে কালো চুল। মায়াবী চোখজোড়া অপলক তাকিয়ে আছে। পরনে বেগুনি রঙের জামা। এমন ফুটফুটে সুন্দর শিশু মুনতাহা আক্তারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নিখোঁজের সাত দিন পর বাড়ির পাশ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটির লাশ ডোবায় কাদার মধ্যে পুঁতে রাখা ছিল। মুনতাহার বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামে।
আন্তর্জাতিক কনভেনশন গণহত্যা বিষয়ে নিশ্চুপ কেন?
মানুষে মানুষে সংঘাতের ক্ষেত্রে নিয়ম নির্ধারণের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে; কিন্তু আধুনিক যুগের আগে, বিশ্বের কোনো শক্তিরই সব দেশের ওপর কোনো উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ ছিল না কিংবা মিত্র দেশগুলোর জোট ছিল না-যাদের ওপর এই কাঙ্ক্ষিত নিয়মগুলো প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন করা যাবে। তবে ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেদের মধ্য কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আইন পালন করা বাধ্যতামূলক করা হয়। ইউরোপীয় দেশগুলো মূলত এই সিদ্ধান্তে আসে যে, ওই চুক্তিগুলো আমলে নিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক আইন পালনে বাধ্যবাধকতা আরোপের ক্ষমতা রয়েছে। এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, ইউরোপের এই দেশগুলো সামুদ্রিক নিয়মনীতির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছায়, যা ছিল যুদ্ধের আইনের প্রথম ভিত্তি। এই আইনগুলো বিংশ শতকে ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে এবং এর মধ্যে কিছু আইন আজ অবধি বলবৎ রয়েছে। দুটি বিশ্বযুদ্ধের পরে, মানবিক বিপর্যয় এবং গণহত্যা নির্মূলের ক্ষেত্রে এই আইনের মানবতার দিকগুলো আরও বেশি নজর কাড়ে।
কোন দিকে যাচ্ছে ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি
আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসনের চলমান বিভিন্ন নীতি-কৌশল, অর্থনৈতিক কর্মসূচি, বিদেশনীতি, বৈশ্বিক বাণিজ্য ইত্যাদির প্রতি ভোটারদের আস্থা ও অনাস্থার চিত্র দৃশ্যমান হয়। ফ্লোরিডায় ওয়েস্ট পাম বিচে উল্লসিত সমর্থকদের সামনে এসে ভোটের সর্বশেষ খবরা-খবরের অপেক্ষা না করেই ট্রাম্প নিজেকে নিজেই ‘প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেন; যদিও আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা হয়নি, প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তখনো ট্রাম্পের ঝুলিতে পড়েনি। বিজয়ের বক্তৃতা দেয়ার প্রস্তুতি ছিল কমালা হ্যারিসেরও, তার বিজয় বার্তা শোনার জন্য তার সমর্থকরা জড়োও হয়েছিল; কিন্তু পরাজয়ের আভাস পেয়ে ওয়াচ পার্টি ছেড়েছেন ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা, কমলা হ্যারিসও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনো বক্তব্য রাখবেন না।
যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলেন কমলা হ্যারিস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কেন হারলেন কমলা হ্যারিস? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় ভোটের লড়াইয়ে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম ভাষণ থেকেই। তিনি বলেছেন,‘আই অ্যাম নট গোয়িং টু স্টার্ট ওয়ার, আই অ্যাম গোয়িং টু স্টপ দ্য ওয়ারস। ’ এর অর্থ ডোনাল্ড ট্রাম্প আর কোনো যুদ্ধ চান না, বরং চলমান যুদ্ধগুলো থামাতে চান। নানা সমালোচনা, ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের প্রথম বাক্যটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে নয় বরং বিশ্ববাসীকেই দারুণ আশান্বিত করেছে। আর এটাও যুক্তিসঙ্গতভাবেই বলা যায়, গত চার বছর ধরে জো বাইডেনের যুদ্ধ বিস্তৃতির নীতিতে অতিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। তাই তারা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর প্রতি আর আস্থা রাখতে চাননি। আর এ কারণেই কপাল পুড়েছে কমলা হ্যারিসের। জয়ের মুকুট চলে গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথায়। বাইডেনের ভুল নীতির কারণেই পপুলার ভোট, সিনেট আর কংগ্রেস- প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুস্পষ্ট বিজয় পেয়েছেন রিপাবলিকানরা।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বাকি বিশ্বের মাথাব্যথা
৪ নভেম্বরের গল্প। না, পরাবাস্তব বা যাদুবাস্তব গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে ঢুকলাম দুপুরবেলা। রাস্তার দুপাশে সারি বেঁধে বসে শাক-সবজি বিক্রি করছে অত্যন্ত দরিদ্রপীড়িত, শিক্ষাবঞ্চিত খেটে খাওয়া প্রান্তিক পর্যায়ের কিছু মানুষ। হঠাৎ কানে এলো তাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন তার জন্ম এলাকার আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, ‘ইবার ট্রাম্প হইয়া যাবি’। আমার কান সচেতন হয়ে উঠল। ইন্টারেস্টিং ডিসকাশন! দাঁড়িয়ে পড়লাম। দেখি একটা মলিন স্যান্ডো গেঞ্জি গায়ে, পরনে লুঙ্গি এবং খালি পায়ে বসে লালশাক, পুঁইশাক বিক্রি করছেন লোকটি। প্রায় একই রকম কন্ডিশনের আরেকজন বিক্রেতা তার কথায় সায় দিয়ে মাথা দোলাচ্ছেন।
মার্কিন নির্বাচনে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী যে কারণে পরাজিত হতে পারেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে আগামী ৫ নভেম্বরে ভোট দেবেন সে দেশের নাগরিকরা। আর সেই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী কিন্তু বিজয়ী নাও হতে পারেন। মার্কিন গণতন্ত্রের আলাদা কিছু দিক রয়েছে, আর সেগুলো নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন। দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের গণতন্ত্রকে অনুকরণীয় হিসেবে দেখিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে, স্বাধীনতা অর্জনের পরে কিংবা স্বৈরশাসককে সরিয়ে দেয়ার পর গণতন্ত্র পুনর্গঠনে কোনো দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র উদাহরণ হতে পারে। আজকের ডেমোক্র্যাটরা যেখানে বহুজাতিগত গণতন্ত্রের ধারণাকে গ্রহণ করছেন, সেখানে রিপাবলিকানরা পুরোনো শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকে পুনরুজ্জীবিত করে দেশকে আবার মহান করতে চাচ্ছেন। ফলে বহু জাতির গণতন্ত্রের ধারণা এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদের ধারণা এখন সাংঘর্ষিক মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছে।