কূটনীতি
দ্বৈত মানদণ্ডভিত্তিক জাতিগত শুদ্ধিকরণই নীতি
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির বিশ্বাসযোগ্যতা এখন প্রশ্নের মুখে। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ সামরিক মহড়া এবং ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার শঙ্কার মাঝেই ট্রাম্পের উত্তরাধিকার মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ সংঘাত, বিশেষ করে গাজা ও এর বাইরের অঞ্চলগুলোতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।
পর্দার আড়ালে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কৃতিত্ব
ঝগড়াপূর্ণ মিটিং শেষ হতেই জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস স্টাফরা সাফ জানিয়ে দিলেন, মি. প্রেসিডেন্ট, আপনি এখন চলে যান। ডিনারটাও হলো না! এবং জেলেনস্কি কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই দ্রুত হোয়াইট হাউস ছেড়ে ইউরোপের উদ্দেশে রওয়ানা হলেন। তিনি এসেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং ব্রিটেন তাকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অভ্যর্থনা দিল। কিং তৃতীয় চার্লস তাকে নরফোক বাসভবনের স্যানড্রিংহাম স্যালুনে অভ্যর্থনা জানিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা করলেন। ব্রিটেনের এই উষ্ণতার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়ে দেয়া হলো যে শুধু ব্রিটেনের সরকার নয়, স্বয়ং রাজাও জেলেনস্কি তথা ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন।
বালুচিস্তানের বিদ্রোহ কী পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে পারবে
বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান সফলভাবে শেষ করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। গোষ্ঠীটি বালুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাই করে। সেখানে জিম্মি প্রায় ৪০০ জন যাত্রীর ৩৪৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কুয়েটা থেকে পেশাওয়ার যাওয়ার পথে সিবি শহরের কাছে ট্রেনটি হামলার শিকার হয়। এ হামলার দায়ও দাবি করে বিএলএ। একদিনেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতের পর নিরাপত্তা বাহিনী ৩৩ জন হামলাকারীকে হত্যা করে। তবে ২১ জন যাত্রী এবং চারজন আধা-সামরিক সদস্যের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর কতটা তাৎপর্যপূর্ণ
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইনে তাদের নিজেদের ভিটামাটিতে ফিরে যেতে পারে সে ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি রোহিঙ্গারা যত দিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন যাতে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা চান। জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানান। তিনি কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী মধ্যে আমি দেখিনি।’
বিশ্ব ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কোন দিকে যাচ্ছে
বৈশ্বিক শৃঙ্খলা কিছুদিন ধরে ভেঙে পড়েছে। ইতোমধ্যে পশ্চিমা আধিপত্য ক্ষয় এবং বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি চাপে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বশক্তি বহু ধারার দিকে ধাবিত হচ্ছে। বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তনের পাটাতনে মধ্যপন্থি শক্তিগুলোর ভূমিকা ভূরাজনীতি গঠনে দিন দিন বাড়বে। চলতি সালের জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলোর মধ্যে একটি হলো সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক বিষয়ে আরও অস্থির সময় শুরু হবে কিনা? তার কিছু নীতি-পরিকল্পনা ইতোমধ্যে বিশৃঙ্খল বিশ্বের জন্য আরও বিপর্যয়কর হওয়ার শঙ্কা জাগায়। ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মিত্র, প্রতিপক্ষ ও প্রতিযোগীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, তা দিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদির মধ্যে ভূরাজনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপার বোঝা যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিধারা আগামী বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত দিক। ট্রাম্পের অনাকাঙ্ক্ষিত ও পরিবর্তনপ্রবণ ব্যক্তিত্বের কারণে চীন-মার্কিন সম্পর্কে হয় উত্তেজনা বাড়বে, নতুবা বড় ধরনের দর কষাকষি দিয়ে ট্রাম্পের লেনদেন চালিত হবে।
পুতিন কি পোল্যান্ড আক্রমণ করবেন
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকেই পোল্যান্ডকে হুমকি দিয়ে আসছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০২২ সাল থেকেই পোল্যান্ড রাশিয়ার সম্ভাব্য ভয়ে তটস্থ। তখন থেকেই অনেকে বলে আসছে, রাশিয়ার পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে। অনেকে আবার এও বলছেন, পূর্ব-ইউরোপ নিয়ে পশ্চিম ইউরোপের তেমন মাথাব্যথা নেই; কিন্তু এ কথাও সত্য যে, পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল দ্বন্দ্ব মূলত পূর্ব-ইউরোপ নিয়েই। তার অনেক কারণও আছে, আজকের পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশ এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তারা অনেকে স্বাধীন হয়েছে; কিন্তু রাশিয়া তাদের অনেককে পিছু ছাড়ছে না, যার কারণে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ করা।
জেলেনস্কি-ট্রাম্প মিটিং ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক জোটে কী পরিবর্তন আনছে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সম্প্রতি যে মিটিং হলো তাতে বোঝা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্কে বড় ধরনের একটা পরিবর্তন আসছে। এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনে যেমন উদ্বিগ্নতা বাড়বে, বাড়বে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। বহুপাক্ষিক প্রতিশ্রুতি থেকে পশ্চাদপসরণ যা দীর্ঘস্থায়ী জোটের নির্ভরযোগ্যতাকে বিপন্ন করে। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক- যা আগে শক্তিশালী মার্কিন-ইউক্রেন সম্পর্কের প্রতীক ছিল- ওয়াশিংটনের পরিবর্তনশীল কৌশলগত অগ্রাধিকারের বিষয়ে শঙ্কা উত্থাপন করেছে৷ ট্রাম্প প্রকাশ্যে কিয়েভের নেতৃত্ব যাচাই-বাছাই করেছেন এবং ক্রেমলিনের অনুরূপ বর্ণনার প্রতিধ্বনি করেছেন। এই পুনর্বিন্যাস ইউক্রেন সংঘাতের গতিপথের জন্য যথেষ্ট প্রভাব ফেলে এবং মৌলিকভাবে বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে নতুন আকার দিতে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ৩ বছর: যুদ্ধ থামবে না কি অন্যদিকে মোড় নেবে?
আজ সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৩ বছর পূর্ণ হলো। যদিও এ যুদ্ধকে শুধু ইউক্রেন যুদ্ধই বলা হয়; কারণ, যুদ্ধ পুরোটাই হচ্ছে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল। ভ্লাদিমির পুতিন আশা করেছিলেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেন দখল করে নিতে পারবে। তখনই অনেকে বলাবলি করছিলেন এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে রূপ নিবে। সত্যিই তাই হলো, সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর এই প্রথম রাশিয়া এমন দীর্ঘমেয়াদি এক যুদ্ধে জড়াল। ইউক্রেন দাবি করছে, এই যুদ্ধে রাশিয়া এখন পর্যন্ত ৪ লাখ সৈন্য হারিয়েছে। সঠিক সংখ্যাটা অবশ্য জানা যাচ্ছে না। তাও বিবিসি ও আল জাজিরা নানা সূত্রের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রাশিয়া কমপক্ষে দেড় লাখ সৈন্য হারিয়েছে। ইউক্রেনের সৈন্য নিহত হয়েছে অর্ধ লাখের মতো। সৈন্য কম নিহত হলেও ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। তাদের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ দেশছাড়া হয়েছে, ৫০ লাখ আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর ইউক্রেনের ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে রাশিয়া। দুদেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত ক্ষতির কথা বাদ দিলেও বলা যায় এই যুদ্ধে বিশ্ববাসীও ভুক্তভোগী হয়েছে প্রচুর। বিশেষ করে এশীয় ও ইউরোপের অনেক অঞ্চলে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে অনেক। করোনা মহামারির পর এমন একটা ভয়াবহ যুদ্ধ কারও কাছেই প্রত্যাশা ছিল না। কোনো যুদ্ধই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশায় থাকে না।
ট্রাম্পের যুগে আমেরিকার গণতন্ত্রের আড়ালে অমাবস্যার হাতছানি
আর দরিদ্র মানুষের জন্য আইনের শাসন কেবল কাগজে-কলমেই আছে; কারণ তারা পর্যাপ্ত পয়সা খরচ করে ভালো আইনজীবী নিতে পারে না। তবুও আমেরিকার গণতন্ত্র অনেক দিন ধরে এমনভাবে টিকে আছে যেন এটি এক ধরনের বিশ্বাসের অংশ। খ্রিষ্টধর্মের অনেক ধারণা আমেরিকার রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। যেমন, আমেরিকা মনে করে তাদের মূল্যবোধ সব মানুষের জন্য এবং তারা সেসব মূল্যবোধ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চায়। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সও একই কাজ করেছে, কারণ ফ্রান্স ও আমেরিকার গণতন্ত্র দুই বিপ্লব থেকে এসেছে। আর এই বিপ্লব আলোকিত যুগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল।
সোজা কথায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মপদ্ধতি
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুপার পাওয়ার এতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। তাকে ম্যাকডোনাল্ড আইল্যান্ড, চুখোতকা অখরুক থেকে শুরু করে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা পর্যন্ত নজর রাখতে হয়। ওই যে দুটি অতি ক্ষুদ্র দূরদ্বীপের নাম বললাম, আমরা সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, হয়তো আমাদের ফরেইন অফিসও জানে না; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জানতে হয়। ওইসব স্থানের অর্থনীতি, কৌশলগত অবস্থান, বেনিফিট সম্পর্কে নিয়মিত পলিসি অবলম্বন করতে হয়।