নির্বাচন কমিশন
লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: প্রদেশভিত্তিক ফল
ভারত একটি বিশাল গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখল। ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ৯০ কোটি ভোটার অংশগ্রহণ করেছেন। অন্ধ্র প্রদেশ, অরুণাচল, ওড়িশা এবং সিকিম রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হলো একই সঙ্গে।
ভোট দান বাধ্যতামূলক করে বাংলাদেশে কি ‘না ভোট’ আবার চালু করা উচিত?
গত বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে দাঁড়িয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরের এক তরুণ বললেন, রংপুর-৩ আসন জাতীয় পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত হলেও ‘না ভোট’ থাকলে দ্বাদশ নির্বাচনে হয়তো সর্বোচ্চ সংখ্যাক ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা যেত।
অনুষ্ঠিত নির্বাচনের জটিল হিসাব
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করল নির্বাচন কমিশন। ৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত গড়ে ২৭ শতাংশ ভোট পড়েছে জানানো হলেও ৪টার পর নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট কাস্ট হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটযাত্রা
আজ রোববার, ৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রত্যক্ষ করা যায়, এবারের নির্বাচন নিয়ে তার কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলনরত রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের সহযোগীরা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছে। শুধু তাই নয়, তারা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে সরকারের পক্ষে এই সময় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প ছিল না।
ভোটারদের জন্য অপেক্ষা
ভোট যেমনই হোক, সাংবাদিকদের পেশাগত ব্যস্ততার কমতি নেই। ভোটের দিন ভোরে যখন বাসা থেকে বের হই, রাস্তায় সুনসান নীরবতা। এটা শুধু ভোটের দিনের ভোর বা সকালের চিত্র নয়। শনিবার মধ্যরাতে যখন বাসায় ফিরেছি, তখনো রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল। দুটি কারণ হতে পারে। এবার ভোট হচ্ছে রোববার। ভোটের দিন সরকারি ছুটি। আগের দুদিন ছুটির সাথে ভোটের ছুটি মিলিয়ে অনেকের জন্য ঈদের ছুটি হয়ে গেছে। এ সুযোগে অনেকেই হয়তো ঢাকার বাইরে বা দেশের বাইরে বেড়াতে চলে গেছেন। আবার অনেককে জানি, পেটের দায়ে ঢাকায় থাকলেও তাদের নাড়ি পোতা গ্রামে, অনেকে ভোটারও নিজেদের গ্রামে। তাই একই সঙ্গে ছুটি কাটাতে এবং ভোট দিতে সপরিবারে গ্রামে চলে গেছেন।
রানী সত্যিই মানুষের হৃদয় জয় করতে পারবেন!
আনোয়ারা ইসলাম রানী নির্বাচনি প্রচারের কল্যাণে এখন সারা দেশের মানুষ এই নামটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। সারা দেশের ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র যে কজন প্রার্থী নিয়ে আলোচনা চলছে, রানীকে তাদের মধ্যে একজন নয়, বলতে হবে অন্যতম একজন। এই রানী চ্যালেঞ্জ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন রানী। এর অর্থ কি জাতীয় পার্টি ভয় পাচ্ছে রানীকে!
রাজনীতিতে নির্বাচনি ইশতেহার কতটুকু কাজে আসে
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় নির্বাচনি ইশতেহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যদিও নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো দল ইশতেহার ঘোষণা না-ও করতে পারে; কিন্তু এটি একটি রেওয়াজ। এই ইশতেহার হলো একটি দল সরকার গঠন করলে কী কী কাজ করবে তার প্রতিশ্রুতি, তাদের লক্ষ্য ও নীতি কী হবে তারই একটি ফিরিস্তি। একটি দেশের বড় বড় সব রাজনৈতিক দলই এই ইশতেহার দিয়ে থাকে, অর্থাৎ জনগণকে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে দেয়। সে অনুসারে জনগণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ থাকে যে, তারা কোন দলের পরিকল্পনাকে সমর্থন করবে। একটি কথা গোড়াতেই বলে রাখা ভালো, পৃথিবীর কোনো ধনী দরিদ্র দেশই নির্বাচনি ইশতেহার কখনোই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারে না, সম্ভব হয়ে ওঠে না।
পর্যবেক্ষক দল ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা
এবারের নির্বাচনে বিএনপি মাঠে নেই–এটাই বড় আলোচনা এবং যত রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ। অস্বীকার করার উপায় নেই, বিএনপি বাংলাদেশের বড় দুটি দলের একটি। জামায়াতে ইসলামের রাজনীতিতে কিছু প্রভাব ও সমর্থন থাকলেও তাদের নিবন্ধনই নেই, যে কারণে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনেরও সুযোগ নেই; কিন্তু নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত আছে। মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা হলো, যদি বিএনপি নির্বাচনে আসত, তাহলে নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও জামায়াত নির্বাচনের মাঠে থাকত। বিএনপির পোশাকের আড়ালে তারা পার্লামেন্টে প্রবেশ করত। আন্দোলনেও তারা বিএনপির ব্যানারের নিচেই মূলত আছে, যদিও বিক্ষিপ্ত কিছু কর্মসূচি তারা দিয়ে থাকে।
ইশতেহারেই আওয়ামী লীগের বাজিমাত
দরজায় কড়া নাড়ছে আরও একটি জাতীয় নির্বাচন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো নানারকম মতপার্থক্য রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যদিও গণতন্ত্র এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাবে বলে জনপ্রত্যাশা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে জনগণের উদ্দেশে নিজেদের ইশতেহার প্রকাশ করে। এই ইশতেহারে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বে এলে জনপ্রত্যশা পূরণ করার স্পষ্ট অঙ্গীকার থাকে। কোনো কোনো সময় রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা গ্রহণের পর ঘোষিত অঙ্গীকারের চাইতে আরও বেশি কাজ করে। আবার কোনো কোনো সময় দেখা যায় ইশতেহারের অঙ্গীকার ছিল কেবল ফাঁকা বুলি। কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহারে পরিবর্তন এনেছে। বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে দেশীয় রাজনীতির পট পরিবর্তন হয়েছে। দলগুলো ইশতেহারে নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে। দলগুলো বিশেষ করে বড় দলগুলো তাদের ইশতেহারে একটি ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেন।
বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো দল নেই
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে আর বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে। আমেরিকা নির্বাচনের আগে শর্তহীন আলাপ-আলোচনার সূত্রপাত ঘটাতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টিকে আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল। আলাপ-আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকায় আওয়ামী লীগ আমেরিকার প্রস্তাব নাকচ করে প্রত্যুত্তর দিয়ে দিয়েছে।