সাম্য হত্যার বিচারে শাহবাগে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এই ঘটনায় তদন্তে গাফিলতি, মূল আসামিদের গ্রেপ্তার এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল।
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্য হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ সকল আসামিকে গ্রেপ্তার এবং বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার প্রতিবাদেই এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে, বুধবার দুপুরে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদলের একাংশসহ ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বামপন্থী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা স্লোগানে বলেন— "আর চাই না এনএসআইয়ের প্রক্টর", "ক্যাম্পাসে লাশ ঝুলে, প্রক্টর কী করে?", "আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?" ইত্যাদি।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন। তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা ছিল ১৫ মে’র মধ্যে, কিন্তু প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।”
তার তিন দফা দাবি:
সাম্য হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার, ডাকসু নির্বাচনের জন্য কমিশন ও রোডম্যাপ ঘোষণা, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও আশপাশে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন।
ইয়ামিন আরও বলেন, “ডাকসু নির্বাচন নিয়ে একটি গোষ্ঠী এবং প্রশাসনের মধ্যে কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে অচলাবস্থা তৈরি করছে। সুনির্দিষ্ট টাইমফ্রেম ও রোডম্যাপ না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।”
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সাম্যর বাবা মো. ফকরুল আলম বুধবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে উপাচার্য আশ্বাস দেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০ মে রাতে সাম্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপে সাম্যর পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, “আমরা চাই না এই বিচার রাজনৈতিক রঙে রঙিন হোক। অপরাধী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলন নিয়ে এক নতুন মোড় নিচ্ছে পরিস্থিতি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে