কমলাপুরে খেলা করে সময় পার করছে শিশুরা
ভৈরব দাদা বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাবা-মার সঙ্গে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসেছে পাঁচ বছর বয়সী সিনার রহমান। স্টেশনে আসার পর কেটে গেছে ৩/৪ ঘণ্টা। তবু আসছে না ট্রেন। ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকতে থাকতে খেলায় মেতে উঠেছে শিশু সিনার। খেলার ফাঁকে ফাঁকে এসে মাকে জিজ্ঞেস করছে ট্রেন কখন আসবে।
সিনহার মা নূসরাত বেগম বলেন, স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন নেই। ওর বাবা কীভাবে যাওয়া যায় এটার ব্যবস্থা করতে স্টেশনের বাহিরে গেছেন। ৩/৪ ঘণ্টা যাবত বসে আছি, কোন ব্যবস্থা না হলে বাসায় ফিরে যাব।
কমলাপুর স্টেশনে সিনার পরিবারের মতো এরকম আরও অনেক যাত্রীর এমন ভোগান্তি দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ছোট-ছোট শিশুদের নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এরকম একজন যাত্রী শামীমা খাতুন। তিনি ঢাকা থেকে যাবেন কুষ্টিয়া। ১৮ দিন আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। নবজাতক, আরেক শিশু সন্তান ও ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে কমলাপুরে এসেছেন তিনি। কিন্তু এসে জানতে পারেন ট্রেন চলবে না। এদিকে ছোট দুই শিশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই দুই নারী।
স্টেশনে এসে ট্রেন না চলার খবর জানতে পেরে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। আবার অনেকেই দেখা যাচ্ছে কাউন্টারে গিয়ে টিকেট ফেরত দিতে।
যাত্রী আসিব আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলে আমাদের কাছে কর্তৃপক্ষ কেন টিকেট বিক্রি করেছে? এখন নাম মাত্র বিআরটিসির ভাঙাচোরা বাসের ব্যবস্থা করেছে। এখানে কোন শৃঙ্খলা নেই।
রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গমনেচ্ছু যাত্রীদের স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা গেছে। অনেকেই হতাশ হয়ে বিকল্প পথে যাত্রা শুরু করেছেন।
রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার মধ্যরাতের পর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সকাল ৯টার দিকে পঞ্চগড় থেকে একটি ট্রেন কমলাপুরে আসতে দেখা গেছে।
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক–সুবিধা দেয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। গত বুধবার চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে