মেলার বিশেষ আকর্ষণ চীনা বই বিতান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম, বইমেলায় এসে চায়না বুক হাউজ খুঁজছিলেন। এবারের মেলায় বাংলাদেশের চীন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই বইয়ের দোকানটি নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে রাশেদুল ইসলাম থ্রিডি পপ-আপ বই কিনতে এলেও, মেলায় আসার মাত্র তিনদিনের মধ্যেই বইটি বিক্রি হয়ে যাওয়ার খবরে বেশ হতাশ হন।
চায়না বুক হাউজের ইন-চার্জ ও চীন দূতাবাসে ভিসা অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত লিমন সরদার অবশ্য রাশেদুলকে আশ্বস্ত করেন যে, বইটি নতুন করে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই মেলায় পাওয়া যাবে।
এর জবাবে রাশেদুল জানান, তার হাতে আর কোনও বিকল্প না থাকায় তিনি অপেক্ষা করবেন। পাশাপাশি তিনি লিমন সরদারকে অনুরোধ করেন যেন বইটির এক কপি তার জন্য রেখে দেওয়া হয়, যেন তিনি পরে এসে সেটি অবশ্যই পান।
ভিউজ বাংলাদেশকে রাশেদুল বলেন, তিনি এর আগে বইটির একটি কপি তার এক ভাগ্নেকে উপহার দিয়েছিলেন। এ বছর আবার তার আরেক ভাগ্নেও বইটি তার কাছে চেয়েছে। এ কারণেই তিনি এত আগ্রহ নিয়ে বইটি খুঁজছেন।
অন্যদিকে লিমন সরদার ভিউজ বাংলাদেশকে জানান, এবার নিয়ে তৃতীয় বারের মত চীন দূতাবাস থেকে অমর একুশে বইমেলায় চীনা বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা।
মূলত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী আর গবেষকদের চীনের সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে আরও বেশি করে জানানোর উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মেলায় লোক সমাগম কম হলেও, তাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাড়া মিলছে।তবে তার মতে, দোকানে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম কারণ তাদের সংগ্রহে কোনও কমিক্স বই নেই এবং পপ-আপ বইয়ের সংখ্যাও সীমিত।
পাশাপাশি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠানটির জন্য স্থান বরাদ্দ থাকায় দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম। তবে গত দু’বছরেই চীনা বই সম্পর্কে জানতে পারায় অনেকেই আসছেন।
লিমন জানান, তারা দিনে প্রায় ২০টি বই বিক্রি করছেন। তারমধ্যে কিছু ভলিউমও আছে।
বাংলা একাডেমি ও চায়না মিডিয়া গ্রুপের সহযোগিতায় চীনা দূতাবাস ২০২০ সালে প্রথমবারের মত বইমেলায় চায়না বুক হাউজ শুরু করে। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের চীনের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সমাজ, ঐতিহ্য, ব্যবসা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্কের কারণে চীনকে এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
সব বয়সের দর্শনার্থী, তবে মূলত তরুণ-তরুণীরা, সেখানে বিক্রি হওয়া বই পড়ে চীনের জীবনের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য বই বিতানটিতে ভিড় করছেন।
দোকানটির বিক্রয় প্রতিনিধি আল-খালিদ বিন ওয়ালিদ দিপু জানান, বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুরা, চীনে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও গবেষকরাই এবারের প্যাভিলিয়নে প্রধান দর্শনার্থী।
মেলায় মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দু’হাজারের বেশি
বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, বইমেলায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত ২ হাজার ৯২টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিনে বই প্রকাশের সংখ্যা বেড়েছে। মেলার প্রথম সপ্তাহে ৪১৮টি, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৮১১টি এবং তৃতীয় সপ্তাহের প্রথম ছয়দিনে ৮৬৩টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি ও পুথিনীলয়ের প্রকাশক শ্যামল পাল বলেন, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের কারণে এ বছর বই ছাপাতে দেরি হয়েছে। ফলে অনেক বইয়ের মোড়ক উন্মোচনেও দেরি হয়েছে।
তবে, ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বই প্রকাশের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে