Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

ইশতেহারেই আওয়ামী লীগের বাজিমাত

Mamun–Or–Rashid

মামুন–অর–রশিদ

শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

রজায় কড়া নাড়ছে আরও একটি জাতীয় নির্বাচন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো নানারকম মতপার্থক্য রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যদিও গণতন্ত্র এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাবে বলে জনপ্রত্যাশা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে জনগণের উদ্দেশে নিজেদের ইশতেহার প্রকাশ করে। এই ইশতেহারে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বে এলে জনপ্রত্যশা পূরণ করার স্পষ্ট অঙ্গীকার থাকে। কোনো কোনো সময় রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা গ্রহণের পর ঘোষিত অঙ্গীকারের চাইতে আরও বেশি কাজ করে। আবার কোনো কোনো সময় দেখা যায় ইশতেহারের অঙ্গীকার ছিল কেবল ফাঁকা বুলি। কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহারে পরিবর্তন এনেছে। বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে দেশীয় রাজনীতির পট পরিবর্তন হয়েছে। দলগুলো ইশতেহারে নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে। দলগুলো বিশেষ করে বড় দলগুলো তাদের ইশতেহারে একটি ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেন।

স্বাধীনতার আগে ভাষার আন্দোলন ৫২ থেকে গণঅভ্যুথনে ৬ ‘বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগে যে ইশতেহার দিয়েছিল সেখানে খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার প্রধান্য পেয়েছিল। ১৯৭০-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারে ঘোষণা করে, জাতীয় উৎপাদনের শতকরা কমপক্ষে ৪ ভাগ সম্পদ শিক্ষা খাতে ব্যয় হওয়া প্রয়োজন। দলটি অভিভক্ত পাকিস্তানের দায়িত্ব পেলে নিরক্ষরতা দূর করার ওপর জোর দেয়। এক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগের বর্ণনা ছিল তাদের ইশতেহারে।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কৃষকের হাতে কৃষির দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল। বিশেষ করে কৃষিতে বিপ্লবের কথা বলা হয় ওই সময়ের ইশতেহারে। ঘোষিত ইশতেহারে বলা হয়, ‘জমিদারি, জায়গিরদারি,সর্দারি প্রথায় অবশ্যই বিলুপ্ত করে প্রকৃত কৃষকের স্বার্থে গোটা ভূমি ব্যবস্থায় পুনর্বিন্যাস সাধন করা, ভূমির সর্বোচ্চ সীমা অবশ্যই নির্ধারণ করা ও নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত জমি এবং সরকারি খাস জমি ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে বণ্টন করা, কৃষিতে আধুনিকায়ন ও চাষিদের বহুমুখী সমবায়ের মাধ্যমে ভূমি সংহতি সাধনে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এ সময় ২৫ বিঘা জমি পর্যন্ত খাজনা বিলোপ ও বকেয়া খাজনা মওকুফ করা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বনজসম্পদ, ফলের চাষ, গোসম্পদ, হাঁস-মুরগির চাষ, দুগ্ধখামার সর্বোপরি মৎস্য চাষের ব্যবস্থা করা। তখন অবহেলিত পূর্ব বাংলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক করুণ পরিবেশ বিদ্যমান ছিল।

পূর্ব বাংলায় মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ সামান্যতম চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। এ জন্য ইশতেহারে বঙ্গবন্ধু প্রতি ইউনিয়নে একটি করে পল্লি চিকিৎসাকেন্দ্র এবং প্রতি থানা সদরে একটি করে হাসপাতাল অবিলম্বে স্থাপন করার বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়। চিকিৎসা গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস’ প্রবর্তন পল্লি এলাকার জন্য বিপুলসংখ্য্যক প্যারামেডিকেল পার্সোন্যালদের ট্রেনিং দেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর পাকিস্তানিদের তালবাহানায় সংসদ গঠন করা সম্ভব হয়নি, যা বাঙালির অধিকার আদায়ের পথকে আরও প্রশস্ত করেছিল। সত্তরের নির্বাচনে পিছিয়েপড়া পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া হয়। সে সময় বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া হয়।

একই সঙ্গে বুড়িগঙ্গা, কর্ণফুলী, শীতলক্ষ্যার ওপরে সেতু নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ নৌবন্দর এবং সামুদ্রিক বন্দরের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি সড়ক ও রেল ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ১৭৭৫-এ বাংলাদেশের ওপর অভিশাপ নেমে আসে। এরপর দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখা হয়। জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনের পর বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে ১৯৯০ সালে সরকার গঠন করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিল, সেখানে শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দেয়া হয়। অনেকটা সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু যেভাবে শিক্ষা বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিলেন, ঠিক সেভাবে। ১৯৯৬-এর নির্বাচনের আগে ঘোষিত ইশতেহারে বলা হয়, শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ও মান উন্নয়নকে দেশের উন্নয়ন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

১০ বছরের মধ্যে দেশকে যাতে নিরক্ষতার অভিশাপমুক্ত করা যায়, সে জন্য সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে এক জাতীয় আন্দোলন সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রতি গ্রামে গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। তবে ওইবার সরকার গঠন করার পর এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। কৃষক ও কৃষিকে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রাধান্য দেয়। ঘোষিত ইশতেহারে বলা হয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার। এ জন্য স্বল্প ও ন্যায্যমূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক,ওষুধ, সেচের যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা। প্রয়োজনে কৃষি খাতে যথোপযুক্ত ভর্তুকি দেয়ার চিন্তা করা হয়। তখন থেকে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিতে প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।

অর্থকরি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি চালু করাসহ প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা কৃষি পণ্যের মূল্যে কৃষকের জন্য লাভজনক এবং স্থিতিশীল রাখার কার্যকর নীতিমালা ও বাস্তমুখী কর্মসূচি প্রণয়ন করা কৃষি পণ্য বাজারজাত করার জন্য আধুনিক ও প্রয়োজনীয় কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু অঙ্গীকার ছিল। একই সঙ্গে ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বিতরণ করা, মৎস্যচাষ, হাঁসমুরগি ও গবাদি পশু পালন আধুনিকীকরণের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া ভূমি সংস্কার ও ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়নের উদ্যোগের কথাও উল্লেখ ছিল।

এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে চমক দেখাল। সেই প্রথম কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনি ইশতেহারে দেশকে উন্নয়নশীল এবং উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে শামিল করতে একটি ভিশন জনগণের সামনে তুলে ধরে।

আওয়ামী লীগ ২০০৮-এর নির্বাচনে শিক্ষা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হয়। মানব উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়। ওই ইশতেহারে ২০১০ সালের মধ্যে প্রাথমিক স্তরে শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ২০১৪ সালের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করা নারী শিক্ষায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উপবৃত্তি অব্যাহত রাখার বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়। কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন বিষয়ে ঘোষিত ইশতেহারে বলা হয়, ‘সবার জন্য খাদ্য’ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে পুনরায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য কৃষি উপকরণে ভর্তুকি বৃদ্ধি, কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা ও কৃষি ঋণের আওতা বৃদ্ধি এবং প্রাপ্তি সহজীকরণ, সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও সুলভ করা এবং ফসল সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া, ফসল ও সকল কৃষিজাত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

আজকের বাংলাদেশে যে আধুনিক অবকাঠোমো এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সৃষ্টি হতে চলেছে। তার অঙ্গীকার ছিল ২০০৮-এর ইশতেহারে। আওয়ামী লীগ তখন অঙ্গীকার করে, পরিবহন, সড়ক নির্মাণ, বন্দর উন্নয়ন ও নির্মাণে উপযুক্ত নীতিমালা গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি সড়ক নেটওয়ার্কে গ্রাম-ইউনিয়ন-উপজেলা ও জেলা সদরকে সংযুক্ত করার কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর জোর দেয়া হয়। একই সঙ্গে পদ্মা ও কর্ণফুলী সেতু, টানেল নির্মাণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেনবিশিষ্ট এক্সপ্রেস সড়ক নির্মাণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেলপথ সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা, এশীয় রেল ও জনপথের আওতায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা প্রতিটি ছোট-বড় নদী খনন করা হবে এবং তা যেন সারা বছর নাব্য থাকে, তার ব্যবস্থা নেওয়া, নিরাপদে স্বল্প খরচে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের জন্য নৌপথের উন্নয়ন ও নৌপরিবহনের আধুনিকায়ন করা, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরকে আধুনিকায়ন করে এশিয়ার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার অঙ্গীকার ছিল।

স্থলবন্দর আধুনিকায়ন করার ওপর জোর দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমানকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা এবং বেসরকারি বিমান পরিবহনকে আরও উৎসাহিত করা, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংযোগস্থল হিসেবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে সর্বাধুনিক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নতুন বিমানবন্দর নির্মাণ করার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতেও পরিবর্তনের অঙ্গীকার ছিল। আওয়ামী লীগ অঙ্গীকার করে পাঁচ বছরে দেশের সব উপজেলাকে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনা হবে। স্বল্প খরচে যাতায়াত ও রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলওয়েকে গুরুত্ব দেয়া এবং এ জন্য নতুন রেললাইন স্থাপন করা। রাজধানী ঢাকার জনপরিবহন সমস্যার সমাধান ও যানজটমুক্ত করার লক্ষ্যে ভূগর্ভস্ত রেললাইন নির্মাণ, আকাশ, রেল অথবা সার্কুলার রেলপথ এবং রাজধানীকে ঘিরে নাব্য ও প্রশস্ত নৌপথ নির্মাণ করা অঙ্গীকার করা হয়। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে আরও দুটি নির্বাচন হয়েছে, সেখনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার অঙ্গীকার ছিল।

ঘোষিত ইশতেহারে ২০১৪ সালে জাতীয় উন্নয়নের নিয়ামক শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য যুগোপযোগী শিক্ষা নীতি প্রণয়ন, শিক্ষা খাতে ২০০৯-১৩ পর্বে অনুসৃত নীতি ও সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া। প্রাথমিক শিক্ষার স্তর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামলূক করার ওপর জোর ছিল। মাধ্যমিক স্তরেও বিনামূল্যে বই বিতরণ ছিল আওয়ামী লীগের একটি চমক। সরকার গঠনের পর ২০১০ সাল থেকে এখনো এ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। কৃষি, খাদ্য, ভূমি ও পল্লি উন্নয়ন-২০১৪-এর ইশতেহারে জোর দেয়া হয়। ইশতেহারে বলা হয়, জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের ধারাকে সুসংহত করা, ক্রমবধর্মান জনসংখ্যা বিবেচনায় রেখে দেশবাসীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আপদকালীন নির্ভরযোগ্য মজুদ গড়ে তোলার পাশাপাশি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করা।

সার, বীজ, সেচসহ কৃষি উপকরণে ভর্তুকি প্রদান, রেয়াতি সুদে প্রয়োজনীয় কৃষি ঋণ সরবরাহ এবং উৎপাদক কৃষক পর্যায়ে কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বর্গাচাষিদের জামানত ছাড়া কৃষি ঋণ প্রদান অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০১৮ সলের নির্বাচনে ঘোষিত ইশতেহারে নতুন আশার কথা ছিল। সরকার বুঝতে পেরেছিল জ্বালানি সংকটের কথা। ওই সময় ২০২০ সালের মধ্যে সকলের জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে। ২০২৩ সালের মধ্যে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং ৫ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়।

কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি: খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে নিশ্চয়তার জন্য ২০১৮ সালে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। সড়ক, রেলওয়ে, বিমান ও নৌপরিবহন-২০১৪ সালের ঘোষিত ইশতেহারে সারা দেশে অবকাঠমো খাতে উন্নয়নের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করা হয়।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ