আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
প্রস্তুতির ঘাটতি থাকলেও সম্ভাবনা দেখছেন কোচ সিমন্স
সরকারের পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন নেতৃত্বে এসেছেন ফারুক আহমেদ, নাজমুল আবেদীন ফাহিমরা। তাদের বোর্ড শ্রীলংকান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করে। এই কোচের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন ক্যারিবিয়ান কোচ ফিল সিমন্স। আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সঙ্গে চুক্তি তার। বর্তমানে মিরপুরে চলছে সিমন্সের অধীনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্যাম্প।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) অনুশীলন ক্যাম্পের দ্বিতীয় দিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন সিমন্স। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও লক্ষ্যের কথা জানান এই ক্যারিবীয় কোচ। তিনি স্বীকার করছেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে পারছে না বাংলাদেশ। তবুও টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখছেন সিমন্স।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সামনে রেখে ভারত, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এ সুযোগ হয়নি। ১১তম বিপিএলের খেলা শেষে সরাসরি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে বিমান ধরবেন নাজমুল হোসেন শান্ত বাহিনী।
বিপিএলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দলে থাকা ক্রিকেটাররা। এবার ফরম্যাট বদল হচ্ছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৫০ ওভারের ক্রিটে খেলবে বাংলাদেশ। তাই ক্রিকেটারতের প্রস্ততির ঘাটতি থাকছে। তবে কোচ সিমন্স মনে করেন, মানসিকতা বদলে ওয়ানডে ক্রিকেটের মতো করলেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করবে বাংলাদেশ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে ২০ ফেব্রুয়ারি। এ ম্যাচটি হবে দুবাইয়ের মাঠে। ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করতে চায় বাংলাদেশ। সিমন্স জানান, ‘আমাদের প্রথম প্রস্তুতি দুবাই নিয়ে। দুবাইয়ে ভালো শুরু পেলেই হয়। ওখানকার কন্ডিশশন অনেকটাই বাংলাদেশের মতো। দুই দিন হলো ক্যাম্পের। আমি এমন কাউকে দেখিনি যে বিপিএলের কারণে ক্লান্ত মনে হয়েছে। খেলোয়াড়দের সময় দিতে হবে। দীর্ঘ সময় ব্যাটিং, সঠিক জায়গায় বোলিং ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের সেরাটাই খেলার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। যদি সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে ভালো করেনি তারা। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা দেখছেন অভিজ্ঞ কোচ সিমন্স। তিনি বলেন, ‘যেকোনো টুর্নামেন্টে সেরা প্রস্তুতি নিয়ে সেরাটা খেলতে চাইবেন। এটাই করতে চাই প্রতিবার। ক্যারিবিয়ানে ওয়ানডে সিরিজ ভালো না হলেও শেষটা আমরা ভালো করেছি। আমি মনে করি, সামর্থ্যরে সবটুকু দিতে পারলে আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে।’
সিমন্স বিশ্বাস করেন, টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডে সাদা বলের ক্রিকেট হওয়ায় আপাতত কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘আমি একমত যে, এটা সেরা প্রস্তুতি হচ্ছে না (পাঁচ দিনের ক্যাম্প)। আমি একটা জিনিস বলতে পারি, তারা ক্রিকেট খেলবে আর সেটা সাদা বলেই। এটার মানে হচ্ছে তারা স্কিলের দিক থেকে শার্পই আছে। আমাদের মানসিকতায় থাকবে ৫০ ওভারের ক্রিকেট। ক্রিকেটারদের স্কিল আছে, তাদের পারফর্ম করতে দেখেছি, এখন কেবল মানসিকতাটা ওয়ানডের মতো করতে হবে।’ সিমন্স আরও বলেন, ‘আমাদের দুটো সেশন আছে অনুশীলনে। আমরা দিনে ও রাতে ব্যাট বল করছি, পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অফ ফর্ম ভাবাচ্ছে দলকে। বিপিএলে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি শান্ত। ব্যাটিংয়ে দুঃসময় গেলেও অধিনায়কের পাশেই আছেন কোচ সিমন্স। তিনি জানান, ‘শান্ত খেলুক, বা না খেলুক, কঠোর পরিশ্রম করেছে। সে ম্যাচ খেলতে পারেনি। তবে প্রস্তুতি নিয়েছে। সামনেও নেবে। তার শুধু শক্ত মানসিকতার দরকার।’
গতি তারকা নাহিদ রানাকে ঘিরে বেশ আশাবাদী সিমন্স। তিনি জানান, বিপিএলে কিছু ম্যাচে নাহিদ রানাকে কিছুটা স্লো মনে হয়েছে। রানআপে একটু সাধারণ। স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তবে তার দল টুর্নামেন্টে আগে-ভাবেই বিদায় নেয়ায় বিশ্রাম পেয়েছেন নাহিদ। ক্যারিবিয়ানে যেমন গতি ছিল, যেমন রানআপ ছিল তার, অনুশীলনে নাহিদকে এমনটাই ধারালো বলেই মনে হয়েছে কোচ সিমন্সের।
অপরদিকে, অফ ফর্মের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দলে নেই লিটন কুমার দাস। এই উইকেটরক্ষক মিস করবে দল। সিমন্স জানান, লিটনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। দলে না থাকাটাকে সে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছে। ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছেন লিটন। স্বরুপে ফিরে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে