Views Bangladesh Logo

পিলখানা হত্যাযজ্ঞ তদন্তে ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ, ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণাগার তৈরি

‘পিলখানা হত্যাযজ্ঞ’ তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতির দাবি করেছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। মাত্র ৪১ কার্যদিবসেই ৩৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তে পাওয়া তথ্য সংরক্ষণ ও তথ্যের নানাবিধ ব্যবহার নিশ্চিতে সফটওয়্যার তৈরির কথাও জানিয়েছেন কমিশনের সভাপতি ও সদস্যরা।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও ‘বিদ্রোহ’সহ সব ঘটনার তথ্য উদঘাটনে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর থেকে তদন্ত করছে কমিশন। ১৬ বছর আগে ওই ঘটনায় হত্যার শিকার হন বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে কমিশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য নেয়া ৩৭ জনের মধ্যে রয়েছেন তিনজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, দুজন মেজর জেনারেল, পাঁচজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, চারজন কর্নেল, চারজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, সাতজন মেজর, দুজন ক্যাপ্টেন, সাতজন তৎকালীন বিডিআর সদস্য ও তিনজন শহীদ পরিবারের সদস্য।

কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তদন্তের ক্ষেত্রে বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তি, সামরিক বাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তি, হুকুমদাতা ও সামরিক অপারেশনে বাধাদানকারীসহ মন্ত্রণালয়, রাজনৈতিক ও বিদেশি সংশ্লিষ্টতা এবং সেনা আইন ভঙ্গের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করছে কমিশন।

সেনাবাহিনীর সাবেক এই মেজর জেনারেল বলেন, তথ্য ব্যবস্থাপনায় ‘তদন্ত ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ তৈরি করা হয়েছে। সংগৃহীত তথ্যভাণ্ডার পর্যালোচনা, তথ্যের ম্যাচিং, লিঙ্কিং, সত্যতা যাচাই এবং ভবিষ্যৎ সংরক্ষণে সফটওয়্যারও তৈরি করেছে কমিশন। এগুলো কাজের নির্ভুলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে বলেই বিশ্বাস করেন তারা।

কমিশনের ওয়েবসাইটে (bdr-commission.org) এবং সরাসরি কার্যালয়ে যোগাযোগ করে যে কেউ তথ্য দিতে পারবেন বলেও জানান সভাপতি।

অনেকেই তৎকালীন তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণে রেখে এখন তদন্ত কমিশনকে দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, উৎসাহজনক হচ্ছে, ‘প্রতিকূলতার মাঝেও কর্মকর্তাসহ অনেকেই প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ ও আলামত সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করেছিলেন। সেগুলোই আমাদের কাছে এসেছে এবং আসছে’।

‘তারা কৃতিত্বের দাবিদার এবং তাদের অবদান সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কমিশন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন বিডিআরের সাবেক এই প্রধান কর্মকর্তা (মেহাপরিচালক)।

ফজলুর রহমান জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহে কিছু বিদেশি দূতাবাসে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি লেখা হয়েছে।

তদন্তের চ‍্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সাক্ষী এবং ঘটনায় সরাসরি সংশ্লিষ্ট অনেকে মারা গেছেন, পলাতক আছেন বা বিদেশে অবস্থান করছেন। তাদের সাক্ষ্য নেয়া কঠিন বা বিলম্বিত এবং অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়বে, এমন ধারণাও তারা করছেন।

সময়ের বিবর্তনে অনেক সাক্ষীর পক্ষে সঠিক তারিখ, সময় ও ঘটনার অনেক বিষয় স্মরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন কমিশনের সভাপতি।


মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ