নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে স্বপ্নপূরণে কঠোর পরিশ্রম করুন
এম সাফাক হোসেন একজন কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট ও ট্রেইনার। তিনি ফাউন্ডার ও চিফ ট্রেইনার, সিএসডি একাডেমি এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশনের। এম সাফাক হোসেন অ্যাডভাইজর হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে পার্টটাইম লেকচার দিয়ে থাকেন। তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে পছন্দ করেন, ক্যারিয়ার গাইডেন্স অ্যাডভোকেসি ও সমাজসেবায় নিজেকে জড়িয়ে রাখেন বিভিন্নভাবে। এম সাফাক হোসেন তার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা এবং তরুণ প্রজন্মের ভেতরে স্বপ্ন তৈরি করা এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ দেখানোসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। তার সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছিলেন শাওন সরকার।
ভিউজ বাংলাদেশ: প্রতিটি মানুষ শৈশব থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু করে। আপনি শৈশবে কী স্বপ্ন নিজের ভেতরে নিয়ে বেড়ে উঠেছেন?
এম সাফাক হোসেন: আমাদের সময়ে শৈশবে বহুমুখী স্বপ্ন দেখতাম, কখনো এইটা কখনো ওইটা। স্থির তেমন কিছু ছিল না কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নতুনত্ব নিয়ে কৌতূহল অনেক বেশি ছিল যেমন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আবিষ্কার ও সৃষ্টিজগৎ রহস্য নিয়ে। এসব বিষয় মনের ভেতর রেখে দিয়েছি এখনো, জ্ঞানচর্চা করার জন্য মাঝেমধ্যে সময় পেলেই ডকুমেন্টারি, বিশ্ব প্রযুক্তি অগ্রগতির ইনফরমেশন, আর্টিকেলস ইত্যাদি দেখি ও পড়ে থাকি। এভাবেই শৈশব পেরিয়ে গেল; কিন্তু কৌতূহল এখনো রয়ে গেল!
ভিউজ বাংলাদেশ: মানুষের সব স্বপ্ন পূরণ হয় না। আপনি জীবনে যা হতে চেয়েছিলেন তা কি হতে পেরেছেন?
এম সাফাক হোসেন: মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয় না এই বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে ভুল ধারণা। কারও কারও ক্ষেত্রে স্বপ্ন পূরণ হয় যেমনটি চায় কিন্তু শতভাগ না হলেও কাছাকাছি। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে একদম হয় না বাস্তবতার কারণে। আমার ক্ষেত্রে দুটি ঘটনায় ঘটেছে! কিছু বাস্তবতার কারণে যেমন লেক অব অপর্চুনিটি, প্রপার গাইডেন্স একদিকে, অন্যদিকে একটি সময় পার হবার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সাহসিকতা। এই দুইয়ের মিশ্রণে হতে পারে, যা চেয়েছি তা হতে পারিনি; কিন্তু আজকে অন্যদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে গাইডেন্স যাতে পায়, মানসিকভাবে বুস্ট যাতে পায়, এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।
এম সাফাক হোসেন: যেমনটা বললাম, একটা প্ল্যাটফর্ম এর কথা সেটি হলো সিএসডি একাডেমি, যার পূর্ণ অর্থ কমিউনিকেশন অ্যান্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট একাডেমি। এই একাডেমিকে প্রথম পরিকল্পনা করি কমিউনিকেশন স্কিলসটা নিয়ে কাজ করার জন্য। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই কমিউনিকেশন প্রচলন। ধার্মিকভাবে চিন্তা করলেও বলব জগৎ সৃষ্টি থেকেই কমিউনিকেশনের আবির্ভাব। যোগাযোগ কানেক্টিভিটি বলতে যেটাকে সহজভাবে আমরা বুঝি। এই একাডেমি করার মূল্যই হচ্ছে ইন্ডিভিজুয়াল কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা, বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা মেরামত করে দক্ষতা বাড়ানের কৌশল, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করতে গাইডেন্স দেয়া, উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ, দুস্থ বা পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীদের মধ্যে থেকে প্রতিভাবান ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান ওপর উদফাকটা হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। অদূর ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমরা গ্লোবাল কানেক্টিভিটি বা ভার্চুয়াল রিয়ালিটির মাধ্যমে বিশ্বমানের বা জয়েন্টভেঞ্চারে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা করছি যাতে প্রতিভাবান ব্যক্তিদের গ্লোবালি এক্সপোস করার সুযোগ গড়ে উঠে।
ভিউজ বাংলাদেশ: এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আপনি। এই ফাউন্ডেশন থেকে সমাজসেবামূলক কী ধরনের কাজ করে থাকেন?
এম সাফাক হোসেন: এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশন আন অফিসিয়ালি সূচনা হয় করোনাকালে। তখন আমরা গুটি কয়েকজন ছিলাম। আমাদের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় করোনা মহামারির সময়ে মেডিকেল ফ্রন্টলাইনে সাপোর্ট দিয়ে। যেমন, এলাকা ফোকাস করে আমরা অক্সিজেন সাপোর্ট, সাপ্লাই রিফিল, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম-এর মাধ্যমে রেজিস্টার্ড ডাক্তার দ্বারা প্রেসক্রিপশন প্রদান, টেলি-ডাক্তার প্রতিস্থাপন, অনলাইন এর মাধ্যমে সচেতনতামূলক টিপস, হাইজিন, হ্যান্ডওয়াশ, ফুড সেফটি ইত্যাদি, তাছাড়াও দুস্থ, দিন মজুরি ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য খাদ্যসামগ্রী ব্যবস্থা ইত্যাদি। ফাউন্ডেশন রেজিস্ট্রেশনের পরবর্তী কার্যক্রমগুলো আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এখানে আমরা সমাজে পিছিয়ে পড়া কিছু শিশুদেরকে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত সাহায্য করে আসছে, সামাজিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, পার্সোনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা, স্বাবলম্বী ইত্যাদি।
ভিউজ বাংলাদেশ: আপনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সেমিনারে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য রাখেন। কী ধরনের বক্তব্য দেন। এবং সম্প্রতি আপনি একটি কনফারেন্সে বক্তব্য রেখেছেন সেখানে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী ও প্রফেশনালস ছিলেন? এ অভিজ্ঞতাটা যদি বলতেন?
এম সাফাক হোসেন: আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিগুলোতে পার্টটাইম লেকচার দিয়ে থাকি, আবার প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের সেমিনারে বক্তা হিসাবে আমন্ত্রণ থাকে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার বক্তব্যের মূলবিষয় সবসময় স্বপ্ন, জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য কীভাবে তৈরি করতে হবে, বাস্তবে আন্তে হলে করণীয়, জীবনের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সেগুলোকে কাজে লাগানের কৌশল, মানসিক চাপ কমানের কৌশল, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে নিজেকে প্রস্তুতি কেমন তা হওয়া উচিত, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজের স্বপ্নগুলোকে কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেই।
এই তো কিছুদিন আগেই একটি প্রাইভেট উনিভার্সিটিতে পাঁচশর অধিক শিক্ষার্থী ও করপোরেট জব হোল্ডারদের উপস্থিতি ছিল একটা দিনব্যাপী কর্মশালায়। আমিও অন্যতম বক্তা হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলাম। এই অভিজ্ঞতার আলোকে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল সবার ভেতরটা ছিল প্রতিভাপূর্ণ; কিন্তু দুঃখের বিষয় পেয়েছি প্রশ্নের সঠিক জবাব না পাওয়া, প্রফেশনালদের থেকে বিশেষ করে। হাতে গোনা কিছু শতাংশ ছাড়া অধিকাংশের ভেতর কমিউনিকেশন স্কিল দুর্বলতার প্রকাশ ছিল। সেখানে শুধু করপোরেট ছিল, তা নয় বরং কিছু সরকারি কর্মকর্তারাও যোগদান করেছিলেন। এ থেকেই একটা ধারণা এলো পাবলিক কমিউনিকেশন, ইন্টার ডিপার্টমেন্ট কমিউনিকেশন এখনো কতটা দুর্বল আছে তা বুঝা যায়। যেমন উদাহরণস্বরূপ যদি বলি লেক অব ইনফরমেশন, ইনফরমেশন মিস লিড আর প্রপার ইনভেস্টিগেশন বা তথ্য যাচাই না করে মন্তব্য দিয়ে দেয়া। এটা অবশ্যই কোনো প্রফেশনাল ব্যক্তিদের থেকে আশা করা যায় না। তখনি প্রশ্ন জাগে মেধাশূন্য কোঠা নাকি পয়সার কোঠা।
ভিউজ বাংলাদেশ: আপনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক কাজ করছেন। তাদের সংস্পর্শে গিয়ে কি বুঝতে পারছেন? বর্তমান শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও দেশ প্রেম বেড়েছে বলে মনে করেন?
এম সাফাক হোসেন: শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিগত বছর বেশ কার্যক্রম করেছি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে যেমন অনেকের ভেতর বহু প্রতিভা রয়েছে, কারও ভেতর এক্সট্রা ট্যালেন্ট দেখেছি আবার বেশকিছু এমন দেখেছি কোনো রকম একটা ডিগ্রি সনদ আর চাকরি পেলেই হলো। আবার এমনো দেখেছি শুধু একটা ডিগ্রি হলেই বাপের দাদার সম্পত্তি দিয়ে বাকিজীবন কাটাবে। তাদের কথা এক্সসেপশনাল।
মেজোরিটি যেটা পেয়েছি তরুণসমাজ অনেক প্রতিভা স্বপ্ন নিয়ে সামনে এগোতে চায় কিন্তু বাস্তবতার কারণে বাধাগ্রস্ত, সুযোগের অভাবে ভেতরের জ্বলন্ত প্রদীপ নিভে যাওয়ার পথে চলে যায়। ফ্রুস্ট্রেশন, মানসিক সমস্যা, অভাব এসবের জন্য তাদের সুন্দর স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে পরে। তাদের প্রতিভাগুলোকে কাজে পারলে আজকে একজনের উন্নতির পেছনে আরও একশত জনের কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে সম্ভব হতো।
এসব কিছু নিয়েই এই ছাত্র-জনতা একটি বিপ্লবের মাধ্যমে গত একযুগের একচেঁচিয়া ওল্ডস্কুল থিওরি ভেঙে দিয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে যদি বলি, একতরফা অটোক্রেসি টাইপ রাজনীতি থেকে একটা নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। যেভাবে তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে নতুন অধ্যায় হয়েছে, এটি যাতে বৃদ্ধা না যায় সেই প্রচেষ্টা তাদের ভেতর আজও বেশ জোরালোভাবে দেখতে পাচ্ছি যেমনটা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে দেখতে পেয়েছিলাম আমার স্টুডেন্টদের ভেতরে।
আমরা যারা জ্যেষ্ঠ আছি, যারা আরও জ্যেষ্ঠ অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ সবার উচিত এসব তাজা তরুণ সমাজকে পরিপূর্ণ শিক্ষা, সামাজিক এটিকেট, বাস্তবতার সঙ্গে গ্রুমিং করানো। আজকে না হয় তারা তরুণ কিন্তু আগামীতে ওরাই দেশ পরিচালনা করবে, আজকে ওদের কে যদি তৈরি না করি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গালি পরকালেও খেতে হবে। এই প্রজন্মকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন দ্রুত করা সম্ভব। আমরা বারবার ভুলে যাই, একটি জাতির তখনই উন্নতি হয়, যখন একটা দেশের উন্নতি হয়। দেশকে উন্নতি করতে হলে তরুণ সমাজ, তাদের মেধা ও তাদের প্রতিভাকে সুযোগ দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। মানসিকতার কথা নাই বা বলি, কারণ বাস্তবে এটা সংস্কার করতে হলে আগে নিজেকে সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে এটিকেট শিখতে হবে।
ভিউজ বাংলাদেশ: যানজট নিরসন ও বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ, শিশুখাদ্য ও মেডিকেলসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে ভূমিকার জন্য ‘দেশসেবা লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন ১৪টি জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান এবং ৫৪ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী। আপনার এই উদ্যোগ কি তরুণের ভালো কাজের মূল্যায়ন করা?
এম সাফাক হোসেন: আমরা সবসময় তরুণসমাজের জন্য তাদের সমস্যার কথা ও আর্তনাদ এসব ওপর মহলে পৌঁছানের জন্য কিছু বছর ধরেই চেষ্টা করে আসছি, এখন সুযোগ যেহেতু আরও হয়েছে, সেক্ষেত্রে আরও পরিধি বাড়ানের চেষ্টার সূচনা ছিল দেশসেবা লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড। যে কোনো ভালো কাজের প্রশংসাকে না পেতে চায়। কেউ করে আড়ালে, কেউ মন থেকে করতে চায় কিন্তু বাস্তবতা হলো সাহায্যের হাত বাড়ানের আগে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা আসাটা জরুরি। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যারা স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম করতে চায় তাদের একটা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্তিকরণ, তাদের প্রপার ডিসিপ্লিনে কার্যক্রম করার কলাকৌশল দেখিয়ে দেয়া বিশেষ করে যারা নতুনভাবে সামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত।
আগস্টে রাজনৈতিক ও দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর দেশ ছিল গার্ডিয়ানলেস কিছুদিনের জন্য, সেই ক্রান্তিকালে এই দেশকে ধরেছিল এই তরুণ সমাজ, শিক্ষার্থী ও জনগণ। যেমনটা তরুণসমাজ আমাদের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য ছোট ছোট ভাইবোনেরা সারা রাত জেগে থেকে পাহারা দিয়েছে ডাকাতের তাণ্ডব থেকে, তেমনি রাস্তার নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় বিনাশ্রমে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট দায়িত্ব নিয়েছে। এই ক্রান্তিকালে আবার হলো বন্যার পরিস্থিতি। এতে যেভাবে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তরুণ সমাজ এগিয়ে এসেছে ত্রাণের ব্যবস্থা থেকে দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে তা প্রশংসনীয়। আমার নিজের চোখে দেখা, ফেনীর সেনাক্যাম্পএ সেনাসদস্যদের কীভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাদের সাহায্য করছে, সেনা সহায়তায় স্পিডবোট দিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। এতে অনেক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন কাজ করেছে।
তখন আমাদের চিন্তায় এলো, আমরা এসব তরুণকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নিই। এতে আমরা সংগঠন বাছাই করি তাদের কার্যক্রম ও ওপেন নোমিনেশন ঘোষণা দিয়ে। শ্রেষ্ঠ কাজগুলো বাছাই করে পুরস্কৃত করা হয় এবং ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট যারা স্বেচ্ছায় করতে চেয়েছিল আমাদের এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশনে এই ক্যাম্পেইনে রিক্রুট করে ট্রাফিক নিয়ে ছোট্ট একটি প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম আমরা। তারা তাদের নিজ এলাকায় টিম, তরুণ প্রতিবেশী বন্ধুবান্ধব নিয়ে দীর্ঘ ১০ থেকে ১২ দিন দায়িত্ব পালন করেছিল। তাদের কার্যক্রমকে সম্মানিত করার উদ্দেশ্য ছিল দেশসেবা লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড। আমরা প্রতি বছর সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার জন্য এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ।
ভিউজ বাংলাদেশ: বর্তমান প্রজন্মকে বলা হয় জেন-জি। তারা তো বড় হয়েছে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে। তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?
এম সাফাক হোসেন: একটা সময় এই জেন-জি কে মূল্যায়ন করা হতো না, ধারণা করত না, এরা কি বুঝবে, কি জানে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত এই জেনারেশন কি করতে পারে, যদি একটা থাকে, সবার জোশ যখন জেগে ওঠে।
যুগের সঙ্গে বিবর্তন আসবেই। আজকের প্রযুক্তির যুগ আগামীতে হবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলেজেন্সের যুগে অভ্যস্ত হয়ে যাবে গোটা বিশ্ব। আজকের আমাদের লাইফস্টাইল এক সময় ইতিহাস হয়ে থাকবে যেমনটা ইতিহাস হয়ে আছে ব্রিটিশামলের সময়কার তৎকালীন আধুনিক জীবনযাত্রা। যেমন আগে স্টিম ইঞ্জিন মোটরযান ছিল, এখন সোলার-ইলেকট্রিক মোটরযান তৈরি হচ্ছে, আগামীতে আজকের জ্বালানি তেলের মোটর হবে ভবিষ্যতের ইতিহাস।
অতএব, আমি মনে করি, এই জেনারেশনের মেধা অনেক অ্যাডভান্সড, আগের যুগে তথ্য পেতে লাইব্রেরি যেতে হতো, এই যুগে লাইব্রেরি হাতের মুঠোয়। এই যুগের জেনারেশন চাইলেই মুহূর্তেই গবেষণার তথ্য বের করে আনতে পারে অতি অল্প সময়ই। আমার ব্যক্তিগত মতামত যদি দেই, এখনো আমরা হুজুকে তাল দেই, হেডলাইন দেখে মন্তব্য শুরু করি, যেখানে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ আছে আমাদের মুঠোয়, তারপর ও টেকনোলজি আর ইনফরমেশন সঠিকভাবে সদ্ব্যবহার থেকে এখনো পিছিয়ে আছি নিজেদের অলসতার কারণে। আমরা এই যুগে অনেক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে পারব সমাজকে, দেশকে যদি সঠিকভাবে এই যুগের টেকনোলজি, মেধাকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারি ও সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি।
ভিউজ বাংলাদেশ: আপনার কর্মদক্ষতা দিয়ে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
এম সাফাক হোসেন: আমি নিজেকে দেখতে চাই একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি হিসেবে, যেখানে নিজের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে একটু কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্ল্যাটফর্ম দ্বারা করতে পারি যেখানে মেধাবীদের তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ হয় এবং সারা দুনিয়াতে তা বিস্তৃত করতে পারে। হতে চাই একজন দায়িত্ববান মানুষ যাতে আগামী প্রজন্মকে গ্রুমিং করে পরিপূর্ণভাবে শিক্ষা দিতে পারি।
ভিউজ বাংলাদেশ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
এম সাফাক হোসেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে