সাংবিধানিক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেবেন ছাত্র-জনতাই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সংবিধান সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ১৬ বছরের অনিয়ম সংস্কার করতে একটু সময় লাগবে। এই সংস্কারের দায়িত্ব ছাত্র-জনতাই নেবেন।
রোববার (৮ আগস্ট) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেন, ছাত্র-জনতা-শ্রমিক তারা হচ্ছে দেশের মূল মালিক। তাদের দাবি হচ্ছে সংস্কার। তারা যেসব জায়গায় সংস্কারের দাবি করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে সবক্ষেত্রেই সংস্কারের প্রয়োজন। তবে সংস্কার হলো চলমান প্রক্রিয়া। ১৫/১৬ বছর এটা স্তব্ধ হয়েছিল। সেটা ১৫ ঘণ্টা, ১৫ দিনে অর্জিত হয়ে যাবে ১৫ বছরের ঝঞ্ঝাট পরিষ্কার হয়ে যাবে, সেটা স্বাভাবিক নয়। সংস্কার কাজটা ধীরে-ধীরে আগাতে থাকবে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সংস্কার দাবি আসছে সংবিধানের। আমাদের পুরোনো যে সংবিধান ১৯৭২ সালের আদৌ কি সেই সংবিধান আছে আজকে? ১৫তম সংশোধনে দেখেছি অন্তত ৫০টি জায়গায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাহলে আমার ১৯৭২ এর সংবিধান কোথায়? আমরা যদি পেছনের দিকে যেতে চাই, তাহলে চতুর্থ সংশোধনে গিয়ে আটকে যাবো। সেটি কী কাম্য? সেখানে বাকশালের কথা বলা হয়েছে, যেখানে ওয়ান পার্টি গভর্নমেন্ট সেটাতো সংবিধানেই ছিল। সেটা কি সংবিধান সম্মত?
উপদেষ্টা বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে দেখছি সংবিধানের বাইরে ও ভেতর থেকে মানুষকে জিম্মি করে রাখার প্রক্রিয়াগুলো চলেছে, সেটা কি একদিনে সম্ভব হবে?
সংস্কারে কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বা প্রাধান্য দিচ্ছেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এত বড় বা এত ব্যাপক, এখানে বাছাই করার মতো সুযোগ এখনো হয়নি। সব বিষয়ই ধরতে হচ্ছে। সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও অন্যান্য বিষয় যেমন আইন, রেগুলেটরি কমিশন করা যায় কি না সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সুতরাং এটা চলমান প্রক্রিয়া। কোনটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি, সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না।
তাহলে আমরা কি বলব সংবিধান সংস্কারের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই বলা যাবে না। তবে আমাদের সংবিধান সংস্কার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর এটা অনেক বড় বিষয়, সংবিধান সংশোধন করতে গেলে আগে যাচাই বাছাই করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। একটা নতুন পার্লামেন্ট করতে হবে। আসলে বিষয়টি ব্যাপক।
উপদেষ্টা বলেন, আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের ছাত্র জনতার কাছে যেতে হবে। তারা কি সংবিধান সংস্কার চায়, না কি নতুন একটা সংবিধান চায়। নাকি পুরোনো সংবিধানকে সংস্কার করে আরো বেটার করতে চায়। এটা ছাত্র জনতার কাছ থেকেই আসতে হবে। তাদের কাছ থেকেই বা সমন্বয়কদেরই দিক নির্দেশনা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তন করা হবে কিনা তাও ছাত্র-জনতার মুক্তিকর্মীরা ঠিক করবেন। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে যে সংস্কার প্রয়োজন, তা বাস্তবায়নে সময় লাগবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে