বাজেট ২০২৪-২৫
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনুন
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আজ বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন। এটি অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম বাজেট উপস্থাপন। আমাদের মতো দেশে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন সব সময়ই অত্যন্ত জটিল একটি কাজ। বাজেটের মাধ্যমে সব মহলকে সমভাবে খুশি করা যায় না। ঘোষিত বাজেটে নতুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইস্যুগুলোতে গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এটা বাজেটের একটি ভালো দিক।
নতুন অর্থবছরের জন্য উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনাটাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ জন্য পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হলে শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানিও কমে যেতে পারে। এতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ মন্থর হয়ে পড়তে পারে।
পণ্য আমদানি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যাতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতির সৃষ্টি হয়েছিল; কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ দেশ নানা কার্যব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এরই মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে; কিন্তু বাংলাদেশ এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যত কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
২ বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। আমরা উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন সফল হতে পারছি না, তা অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় নিরোধক ব্যবস্থা নিতে হবে। বাজেটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা যৌক্তিক এবং ভালো। তবে দেখতে হবে, এসব উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে এ মুহূর্তে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়ে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনাটা জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতির বিষয়ে সচেতন রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় কিছু ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ আরও বাড়ানো দরকার।
লেখক: অর্থনীতিবিদ ও চেয়ারম্যান, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকস
অনুলিখন: এম এ খালেক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে