পরিবহন খাতে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: উপদেষ্টা নাহিদ

পরিবহন খাতে দুর্নীতি চলমান রয়েছে জানিয়ে তথ্য, সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগের দল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, আবার এখন আরেক দল রয়েছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কর্মীরাই এগুলোয় জড়িত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দুর্নীতির, রাজনৈতিকীকরণের, শিক্ষা ও জনসচেতনতার সমস্যা রয়েছে। আমাদের অদক্ষতা ও নিয়মনীতি না মানার বাস্তবতা আছে। এখানে বহুমাত্রিক সমস্যা। তাই এটার সমাধানও চ্যালেঞ্জের। সব অংশীজনকে একত্রে আনতে হবে। এখানে রাজনৈতিক চাপ থাকবেই। কারণ এখানে একটা সুবিধাভোগী গোষ্ঠী জড়িত।’

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে আয়োজিত সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘বুয়েটের একজন মারা গেল। একটা ধারণা যে সমাজের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যারা আছেন, তাদের বিচার হয় না, জবাবদিহি হয় না। এখানে সাধারণ মানুষদের জীবনটাই আসলে যায়। এই চিত্র আমাদের সমাজে আছে। এটার পরিবর্তন দরকার।’

এর আগে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর পূর্বাচলে বেপোরায়া গতির প্রাইভেট কারের ধাক্কায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই প্রাইভেট কার চালাচ্ছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তার সন্তান।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সবাইকে বিচারের আওতায় আনা দরকার। এখানে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। উন্নয়নের নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কাঠামোগত উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপদ সড়কের সম্পর্ক ছিল না। সড়ক খাতে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা রয়ে গেছে।’

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ছিল আমাদের জন্য মূল ভিত্তি। সে সময় স্কুল-কলেজের দুজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে এই আন্দোলন শুরু হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের দীর্ঘদিনের একটা ক্ষোভ ছিল। নিরাপদ সড়ক না থাকায় মানুষের ভোগান্তি ছিল। ওই আন্দোলন সে সময় সহিংসভাবে দমনের চেষ্টা করে সেই সময়ের সরকার।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিগত ১৫ থেকে ১৬ বছর আমরা উন্নয়নের একটা গল্প শুনেছি। ব্যাপক উন্নয়ন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা ন্যারেটিভ। সরকার উন্নয়ন করছে। আমরাও দেখতে পেয়েছি অনেক রাস্তাঘাট, মহাসড়ক, সেতু হয়েছে। এত উন্নয়ন হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু নিরাপদ সড়ক নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। তার মানে এই উন্নয়ন জনকল্যাণমূলক হয়নি। এই উন্নয়নের সঙ্গে মানুষের নিরাপত্তা ও সুযোগ–সুবিধা যোগ হয়নি। এগুলো কাঠামোগত উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে। সেসব উন্নয়ন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপদ সড়কের সম্পর্ক ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ননীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত উন্নয়ন করতে হবে।’

সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার।