পন্ডিত শীলভদ্রের জন্মস্থানে হচ্ছে দেশের প্রথম ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম’
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কৈলাইনে গড়ে উঠতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম (এআই পাওয়ার্ড ভিলেজ)’। ‘ক্ষমতায়ন, উদ্ভাবন ও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি’- এ তিনটি স্লোগানে ওই গ্রামের কার্যক্রম এগিয়ে নেবে দাতব্য সংস্থা পাটোয়ারি ফাউন্ডেশন।
উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রাচীন নালন্দা মহাবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পন্ডিত শীলভদ্র।
জাতিংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আর্থিক সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক ডিজিটাল রিডনেস এন্ড ইন্টেলিজেন্ট সিস্টেমস লিমিটেড (ডি-রেডি) কোম্পানি এবং বাংলাদেশের এআইআইটি সংস্থার প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এঙ্গলিয়া রাস্কিনসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন অতিবাহিত করেন ড. আলমগীর হোসেন। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানও। এসব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের জন্মস্থান কৈলাইন গ্রামেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম (এআই পাওয়ার্ড ভিলেজ) গড়ে তুলছেন তিনি।
কৈলাইলন-তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন পাল জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে দুটি দল গঠন করা হয়েছে। একটি দলে তার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির মেধাবী এবং উদ্যমী ২০ জন শিক্ষার্থী সদস্য এবং অন্য দলটিতে গ্রামের অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ২০ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী দলটিকে বিদ্যালয় মিলনায়তনে কর্মশালায় এবং গ্রামবাসীকে গ্রামেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ড. আলমগীর হোসেন ও ড. পারভিন আখতারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞরা এই প্রশিক্ষণ দেন।
পাটোয়ারি ফাউন্ডেশন সদস্যদেরকে উন্নতজাতের পেঁপে, মরিচ, শাক-সবজির চারা এবং মুরগির বাচ্চা দিয়েছে, যেন আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এগুলোর লালন-পালনে নিজেদের পরিবারকে নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন তারা। তবে কোনো সদস্যকে টাকা-পয়সা দেবে না ফাউন্ডেশনটি। সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবে, যেন তারা নতুন নতুন প্রকল্প এবং অন্যদের কর্মসংস্থানও তৈরি করেন।
ডি-রেডি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দলের সদস্যরা সাতদিন পর পর এগুলোর ছবি তুলে আপলোড করবেন। যেকোনো রোগ বা সমস্যা ধরা পড়লে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সেগুলোর সমাধানও করবেন তারাই। এজন্য কৈলাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে আমরা ল্যাপটপ, পানি এবং মাটি পরীক্ষার সেন্সর, আইপেড, স্মার্টফোন, প্রজেক্টর এবং ‘এআই ইন স্কুল’ বই সরবরাহ করেছি’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে