Views Bangladesh Logo

তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত

সরায়েলের তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুইজন ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিল।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইপারসনিক মিসাইলটি বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের কাছে একটি সড়কের পাশে পড়ার পর সেখানে একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। তবে টার্মিনাল ভবনের কোনো উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই হামলায় আটজন আহত হয়েছেন। এতে বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়। যার ফলে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়।

প্রাথমিকভাবে হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে হুতিরা জানায়, এটি গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের অংশ। এই হামলাটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের এগিয়ে যাওয়া এবং চলমান গাজা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের অংশ।

এদিকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই ব্যালিস্টিক মিসাইলটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানের জন্য ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।

দুই ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু এবং অন্যদের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইডিএফের একজন মুখপাত্র। তিনি জানান, নিরাপত্তা ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি হুতিরা।

অপরদিকে আইডিএফ জানিয়েছে, এছাড়া একই দিনে লোহিত সাগরে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় হাইপারসনিক মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হুতিদের এই হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন-আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিং, হাইপারসনিক মিসাইল প্রতিহত করার জন্য পুরোপুরি সজ্জিত নয়। এই মিসাইলগুলো শব্দের গতির পাঁচ গুণের বেশি গতিতে চলে।

জানা গেছে, বেন গুরিওন বিমানবন্দর ইসরায়েলের জন্য সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি কৌশলগত স্থাপনা। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা চালানো হয়েছে, যেটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং ইয়েমেন, লেবানন, ইরানসহ অন্যান্য দেশের সম্পৃক্ততায় একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েল ও তার মিত্রদের সঙ্গে সংযুক্ত জাহাজগুলোর ওপর একাধিক হামলা চালায় হুতি বিদ্রোহীরা। এসব হামলা লোহিত সাগর, আরব সাগর, বাব আল-মানদেব প্রণালী এবং অ্যাডেন উপসাগরে চালালো হয়। গত জানুয়ারিতে গাজায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আক্রমণের পর আবারও শুরু হয় সংঘাত।  জবাবে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে ইয়েমেনে বারবার বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল।

এ বিষয়ে হুতি সূত্র জানায়, গত ১৫ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২০০টির বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ হতাহত হয়।


মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ