‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরীকে হারানোর দিন আজ
বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরীর প্রয়াণ দিবস আজ। ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রেখে যান অগণিত ভক্ত-অনুরাগী।
কবরীর জন্মনাম ছিল মিনা পাল, আর পুরো নাম সারাহ বেগম কবরী। মাত্র ১৩ বছর বয়সে অভিনয়ে পা রাখেন তিনি। ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘সুতরাং’ সিনেমার মধ্য দিয়েই শুরু হয় তার অভিনয় জীবন। এই সিনেমা তাকে রাতারাতি পরিচিতি এনে দেয়।
বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের অন্যতম নায়িকা কবরী শুধু পর্দার সৌন্দর্যেই নয়, অভিনয় দক্ষতা, ব্যক্তিত্ব ও পরিশীলিত রুচির জন্যও দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
তার অভিনীত বহু সিনেমা আজও মানুষের মনে অম্লান। তিতাস একটি নদীর নাম, সারেং বউ, সুজন সখী, দেবদাস, মাসুদ রানা, বধূ বিদায়, ময়নামতি, স্মৃতিটুকু থাকসহ অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
রোমান্টিক চরিত্রে কবরী ছিলেন অনন্য। আর সামাজিক ঘরানার সিনেমায়ও তার অভিনয় সমানভাবে আলোড়ন তুলেছে। তার অভিনীত ছবির গানগুলো এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
চাষী নজরুল ইসলামের দেবদাসে কবরী ‘পার্বতী’ চরিত্রে এমন প্রাণবন্ত অভিনয় করেন যে, দর্শকরা তাকে সেই নামেই ডাকতে শুরু করেন। আর সুজন সখী সিনেমায় ফারুকের সঙ্গে তার জুটি আজও স্মরণীয়, বিশেষ করে ‘সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা’ গানটির জন্য।
নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে কবরীর জুটি ছিল অন্যতম জনপ্রিয়। তারা একসঙ্গে ময়নামতি, রংবাজসহ বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘অনেক সাধের ময়না আমার’ কিংবা ‘সে যে কেন এল না’ গানগুলো কবরীর পর্দা উপস্থিতির জন্য আজও হৃদয়ে বাজে।
রংবাজ, নীল আকাশের নিচে, মাসুদ রানা—এসব ছবির মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলা সিনেমার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কাজী জহির, চাষী নজরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুনের মতো গুণী নির্মাতারা কবরীর ক্যারিয়ারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন, উপহার দেন একের পর এক স্মরণীয় সিনেমা।
বাংলা সিনেমার রঙিন দিনগুলোর এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন কবরী। আজকের দিনে তাকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছে বাংলা চলচ্চিত্র ও তার অগণিত ভক্ত।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে