Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

'ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে' দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা

Kamrul  Hasan

কামরুল হাসান

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর হাতিরঝিলে দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালের দিকে মহানগর প্রজেক্টের চার নম্বর রোডের ডি-ব্লকের বাড়ির অষ্টম তলার একটি ফ্ল্যাটে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে মনোয়ারা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর সোয়া ২টার দিকে মনোয়ারা হাসপাতাল থেকে তামিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা
মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তামিমের পরিবারের বরাত দিয়ে এসআই রাজীব হোসেন বলেন, নিজেদের জমিতে নির্মিত অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে প্লেসান্ট প্রোপার্টিজ নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানি ও তামিমদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তার জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডেভেলপার কোম্পানির লোকজন উক্ত ফ্ল্যাটে তামিমকে শারীরিকভাবে আঘাত করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মনোয়ারা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তামিমের মামা মাসুদ করিম বলেন, তামিমদের জায়গা প্লেসান্ট প্রোপার্টিজ লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে দেয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী পাঁচটি ফ্ল্যাট দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিয়েছে দুটি। বাকি তিনটি ফ্ল্যাটের মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মামুনের কাছে ডেভেলপার কোম্পানি একটি ফ্ল্যাটট বিক্রি করে দিয়েছে। বাকি দুইটি ফ্ল্যাট নিয়ে গতকাল ডেভলপারের সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়। তার ভিত্তিতে দুটি ফ্ল্যাটে কাজ করার জন্য বলা হয়। আজ সকালে ডেভেলপার কোম্পানির সিএ লতি মির্জা ও মামুন স্থানীয় বিএনপি নেতা রবিউলসহ ২০-২৫ জন গিয়ে ফ্ল্যাটে গিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেন। এক পর্যায়ে তামিমকে মারপিট করলে সে অসুস্থ হয়ে যায়।

তামিমের বাবা সুলতান বলেন, ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে ফ্ল্যাট দখলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মামুনও জড়িত। তারা সন্ত্রাসীদের দিয়ে ফ্ল্যাট ও জমির মালিকদের জিম্মি করে জোরপূর্বক ফ্ল্যাট দখল করে। ডিবির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের শ্বশুর সোলাইমান। এই সোলাইমান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকরি করতেন। তার সহযোগিতায় মামুন বিভিন্ন সময়ে আমার কাজ বন্ধ করে দেয়।

বিভিন্ন সময় পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে পাননি বলেও অভিযোগ করেন সুলতান। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ আমাদের জিডিও নিতো না। এমনকি পরশু রাতেও হামলার আশঙ্কায় থানায় গিয়েছি। থানার ওসি আমার অভিযোগ রাখেনি। বলেছে, হামলা হলে তাদের জানাতে। আজ হামলার কথা জানালে ঘটনার প্রায় ২০ মিনিট পর পুলিশ পাঠিয়েছে। পুলিশ গিয়ে ডেভেলপার কোম্পানির লোকদের সঙ্গে কথা বলেছে। অথচ তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমার ছেলেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিতে চাইলে সেখানেও তারা দেরি করায়।

তবে তানজিল জাহান ইসলাম তামিমের ওপর লোকজন দিয়ে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্লেসান্ট প্রোপার্টিজের মালিক ও বিএনপির নেতা রবিউল আলম।

তানজিলের ওপর কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘প্লেসান্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড কোম্পানির লোকজন হামলা করেছে। আমরা তাদের সাইট ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে আটক করেছি। প্লেসান্ট প্রোপার্টিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।’

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ