Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

এডিসের আচরণগত পরিবর্তনের কারণে আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু

Senior  reporter

সিনিয়র রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গুজ্বরের প্রধান বাহক এডিস মশার আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এই আচরণগত পরিবর্তনগুলো - প্রজনন এবং কামড় - পর্যালোচনা করে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আরও কার্যকর প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

মঙ্গলবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ব্র্যাক ও ইউএইচসি ফোরাম আয়োজিত ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় বক্তৃতাকালে তারা এ উদ্বেগের কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) শাখার পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান, বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) মহাপরিচালক ড. মালা খান প্রমুখ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে বৃহত্তর সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গুর কারণে প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা কেমন তা তিনি জানেন কারণ তার মা এই জ্বরে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং রোগ প্রতিরোধে বিশেষ নজর দিতে হবে।

আলোচনা সভায় ডা আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ঢাকায় আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নেই।

এর ব্যবস্থা করতে পারলে অনেক রোগীকে সহজে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আরবান হেলথ কেয়ার থাকলে সাধারণ রোগীরা সেখানেই চিকিৎসা নিতে পারতো। কিন্তু দেখা যায় সব রোগী সরাসরি বড় হাসপাতালে যায়। এতে করে যাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের ক্ষেত্রে সেবা পেতে দেরি হয়ে থাকে।’

কীটতত্ত্ববিদ ড কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা এখন পরিষ্কার ও নোংরা পানিসহ বিভিন্ন ধরনের পানিতে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। তারা এখন দিনের পাশাপাশি রাতেও কামড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, দ্রুত নগরায়ণ এবং অনিয়ন্ত্রিত আলো দূষণ এডিস মশা অভিযোজনে অবদান রাখছে। কৃত্রিম আলোর তীব্রতা থাকার পরেও রাতে এডিস মশা কামড়াচ্ছে। আর তাই, বিপদ শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নয়, গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।

গবেষকের মতে, ডেঙ্গুর জন্য বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন উপলব্ধ নেই, যা এই জ্বরের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারটা কঠিন করে তুলেছে।

ডা. শেখ দাউদ আদনান ডেঙ্গু সংকট দেখা দিলে তা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি হিসেবে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার কার্যক্রম তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত বছর ডেঙ্গু সংকটের সময় রক্ত সঞ্চালন একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সরকারি হাসপাতালে ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি টারশিয়ারি পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা পর্যায়ে ৩৩টি রক্ত সঞ্চালন কেন্দ্র পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।

ডা মালা খান দেশীয়ভাবে তৈরি ডেঙ্গু টেস্টিং পরীক্ষাকে সস্তা করার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয়ভাবে তৈরি টেস্টিং কিটের অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জবাবে ডা সামন্ত লাল সেন বলেন, এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গেও সহযোগিতামূলক কাজ করবে।

প্রতিটি হাসপাতালে স্যালাইন সলিউশনের পর্যাপ্ত মজুদ রাখা উচিত উল্লেখ করে মন্ত্রী ডেঙ্গু মহামারিতে যারা স্যালাইন সংকট সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ ধরনের সিন্ডিকেটের সঙ্গে কেউ বা কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল জড়িত থাকলে তাদের রেহাই দেয়া হবে না।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ