শাপলা বিলের স্বর্গীয় সৌন্দর্যে বিমোহিত পর্যটকরা, পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা দেওন্দি চা-বাগান
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, নিচে বিলের কালচে পানি ছাপিয়ে সবুজের ফাঁকে থরে থরে ফুটে আছে লাল শাপলা। পানিতে বিছানো যেন লালগালিচা, দেখলেই নয়ন জুড়িয়ে যায়।
বিরল এই দৃশ্য হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেওন্দি চা-বাগানের পাশের শাপলা বিলের। এর স্বর্গীয় সৌন্দর্য আশপাশের প্রকৃতিকেও সাজিয়ে তুলেছে অপরূপ সাজে।
শীতের শুরুতেই পর্যটক-দর্শনার্থী এবং ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখর লাল শাপলার এই রাজ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য ছবি-ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে মানুষের আনাগোনাও।
দেওন্দি চা-বাগান লাল শাপলা বিল ঘিরে পর্যটনশিল্পে তাই খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দ্বারও।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভোর থেকেই হাজারো মানুষের ভিড়। জেলা শহরসহ দূর-দুরান্ত থেকেও শত শত মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে ঘুরতে আসছেন পর্যটকরা। তাদের মাঝে তরুণ-তরুণীরাই বেশি।
রাতে শাপলা ফোটে। তাই ফুটন্ত লাল শাপলা দেখতে ও সেলফি তুলতে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এই মিলনমেলা।
চাবাগানের ছোট ছোট বিল থেকে লাল শাপলা কুড়িয়ে এনে বিক্রি করছে চা-শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েরা। পর্যটকদের চাহিদা ও প্রয়োজনে আশপাশে তৈরি হয়েছে ২০টির মতো ভ্রাম্যমাণ দোকানও। তাতে উপকৃত হচ্ছেন স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।
জমজমাট এই ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাগান কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে। স্থানীয়রাও বলছেন, এক পলকে মুগ্ধতা ছড়ানো বিলটি ঘিরে চা-বাগানজুড়ে গত কয়েক বছর ধরেই প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনা। সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় নিরাপদ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারছে না এটি।
চুনারুঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সাজিদুল ইসলাম বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য নেই কোনো শৌচাগার, খাবার পানির ব্যবস্থা। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ছুটির দিনে অসংখ্য মানুষের ভিড় হয়। অথচ কোনো অঘটন ঘটলে সামাল দেয়ার মতো কোনো নিরাপত্তাকর্মী নেই।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হাতে পর্যটকরা লাঞ্ছিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলার জালাল মিয়া।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চকিদারদের নিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই যুক্ত হবে পুলিশি টহলও।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে