শীতে যেমন জমলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমাদের দেশের আবহাওয়াটা তুলনামূলক শীত শীত থাকে। আর এ বছর শীতটা বিগত বছরগুলোর তুলনায় যেন বড্ড বেশি। শীতের মধ্যেই মেট্রোরেলে চড়ে শেওড়াপাড়া থেকে শাহবাগে গেলাম। উদ্দেশ্য একটাই–ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চলচ্চিত্র দেখা। শুধু যে চলচ্চিত্র দেখা ব্যাপারটা তা নয়। পরিচিত বন্ধুমহলের সঙ্গে সাক্ষাৎটাও যেন আরেকটা উদ্দেশ্য; কিন্তু এবারের মেলায় পরিচিত কাউকে তেমন বেশি একটা পেলাম না। আর উৎসবকর্মীর অনেকেই আমার জন্য নতুন মুখ। যেহেতু এবার টিকিটের কোনো বালাই নেই, শিডিউল দেখে সিনেমা দেখতে ভেতরে গেলাম। ভেতরে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বসার কোনো সিট খালি নেই। হাউসফুল যাকে বলে। চেষ্টা করে সিট পাওয়া গেল। সিনেমা শেষে বের হলে পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে দেখা, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল ভাইয়ের সঙ্গেও দেখা হলো।
এ চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা প্রায় ২০ বছরের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দেশ-বিদেশের বিচিত্র সব সিনেমা দেখার লোভেই একসময় উৎসবে আসতাম। পরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে বিনামূল্যেই সিনেমা দেখতাম। তারপর চলচ্চিত্র উৎসবের বুলেটিন কর্মী এবং সর্বশেষে উৎসবের বুলেটিন ‘উৎসব প্রতিদিন’র সম্পাদক ছিলাম। তারপর ব্যস্ততার কারণে সব ছেড়ে দিয়ে এখন দর্শক। ফলে, উৎসবে গেলে নস্টালজিক হয়ে যাই। ভলান্টিয়ার ভাইদের দেখি, বুলেটিন কর্মীদের ব্যস্ততা দেখি, উৎসব পরিচালক শোভন ভাইয়ের চাপ বোঝার চেষ্টা করি। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবটি হাঁটি হাঁটি পা পা করে এবার ২২তম আসর পালন করল। ১৯৯২ সালে শুরু হওয়া এ উৎসব শুরুতে দ্বিবার্ষিক হলেও ২০১৬ থেকে নিয়মিত হচ্ছে। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- বরাবরের মতো এ প্রতিপাদ্যে এবারের উৎসবটিও আয়োজন করা হয়।
২০ জানুয়ারি শুরু হওয়া ৯ দিনব্যাপী এ উৎসবে জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, অলিয়স ফ্রঁসেস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাডেমি মিলনায়তনে ১০টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে ৭৪টি দেশের মোট ২৫২টি সিনেমা দেখানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপমহাদেশের খ্যাতিমান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, বেসামরিক বিমান, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন এবং ঢাকার চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা ইউ লিওয়েন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দেখানো হয়-ইরানি পরিচালক মুর্তজা আতশ জমজমের ছবি ‘ফেরেশতে’। প্রদর্শনীর আগে মঞ্চে উঠে দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা। ফেরেশতের পর ছিল বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত শ্যাম বেনেগালের ছবি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’।
এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ইরানি সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ‘চিলড্রেন অব হেভেন’, ‘বারান’ এবং ‘সং অব স্প্যারো’র মতো বিশ্বনন্দিত সিনেমার পরিচালক মাজিদ মাজিদির মাস্টার ক্লাস। মাস্টার ক্লাসের ভিন্ন দুটি সেশনে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরুর সঞ্চালনায় কথা বলেন চীনের সাংহাই ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ার শি চুয়ান এবং ভারতের নির্মাতা, অভিনেতা ও গায়ক অঞ্জন দত্ত। উৎসবে শর্মিলা ঠাকুর জুরি হিসেবে ছিলেন, তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সিনেমা ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন। এ ছাড়া ‘চালচিত্র এখন’ সিনেমার প্রদর্শনী শেষে দর্শকের মুখোমুখি হন নির্মাতা-অভিনেতা-গায়ক অঞ্জন দত্ত।
বিগত বছরগুলোতে উৎসবের মূল ভেন্যু জাতীয় গ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন হলেও এবার গ্রন্থাগারের ভবনে সংস্কার কাজ চলার জন্য উৎসবের মূল প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের চত্বর। সেখানে বর্ণিল সাজে চলচ্চিত্র-চলচ্চিত্রকারের ছবিসহ ব্যানার, আলোকসজ্জা ছিল চোখে পড়ার মতো। নানান দেশের নানান চলচ্চিত্র ও নির্মাতার সঙ্গে বাংলাদেশের দর্শক নির্মাতার মেলবন্ধন তৈরির এ উৎসব নিয়ে আছে নানা তর্ক-বিতর্ক। কখনো সমালোচনা হয়–উৎসবটি দর্শক টানতে ব্যর্থ, কখনো আলোচনায় ওঠে এমন একটি আন্তর্জাতিক উৎসবে এদেশীয় নির্মাতাদের অংশগ্রহণ এত কম কেন? দেশীয় নির্মাতাদের অংশগ্রহণ ও গুরুত্ব কি আদৌ ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে নেই? বিশ্বের অন্যান্য দেশে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোর যে ব্যাপ্তি থাকে, ঢাকার এ উৎসবটি কি আদতে তেমন ব্যাপ্তির কি না ইত্যাদি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদগুলোর কার্যক্রম চলচ্চিত্র প্রদর্শন-পঠন-পাঠনে সীমাবদ্ধ থাকলেও দর্শক তৈরির মূল ভূমিকায় এখন আর কেউ নেই। বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ, আন্দোলন ও উৎসবে যতটা দর্শক নির্মাতার স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর কার্যক্রমও স্থিমিত হয়ে পড়ে। একটা সময় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, আলিয়ঁস ফ্রঁসেস, রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার, ইরানিয়ান কালচারাল সেন্টার, গ্যোটে ইনস্টিটিউট, ভারতীয় দূতাবাস কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন হতো। এখন কালেভদ্রে আয়োজন হলেও দর্শক উপস্থিতি তেমন একটা নেই। এটা সম্ভবত সিনেমা দেখার সহজলভ্যতা বিশেষ করে সিডি-ডিভিডির পর এখন ওটিটির কারণেও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই সিনেমা হলে সিনেমার দর্শক কম, ফলে উৎসবের সিনেমায় দর্শক কম হওয়া স্বাভাবিক নয় কি?
দেশের সিনেমা হলেও সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমে যাওয়ার যে কারণগুলো আমরা সবাই জানি, ঠিক একই কারণে উৎসবে দর্শক কম হওয়াও স্বাভাবিক। প্রশ্ন উঠতেই পারে, যেভাবে চলচ্চিত্রের নির্মাতা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়, সেভাবে একটি সিনেমার প্রদর্শন প্রস্তুতি কিংবা উৎসব করার বা অংশগ্রহণ করার মানসিকতা আমাদের কি তৈরি হয়? চলচ্চিত্রের অ্যাপ্রিসিয়েশনটা না থাকলে উৎসবের জন্য স্বেচ্ছাসেবক বা বুলেটিন কর্মী পাওয়াও যে কতটা কঠিন, তা আমি উৎসবে অংশগ্রহণের সময় টের পেয়েছি। ফলে উৎসব পরিচালক শোভন ভাই বরাবরই একটা কথা বলেছিলেন- উৎসবের সময় খুঁটিনাটি কত বিষয় যে খেয়াল রাখতে হয়, পৃষ্ঠপোষক খুঁজতে হয়, ফেস্টিভালটা যে কীভাবে আয়োজন করি, সেটা ভেতরে না থাকলে সমালোচনা করা সহজ; কিন্তু বুঝতে পারা মুশকিল। এতকিছু সত্ত্বেও শোভন ভাই উৎসবটাকে নানানভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেছেন। সেটা কখনো রেট্টোসপেকটিভ, কখনো নারী সেশন কখনোবা মাস্টারক্লাস দিয়ে । উৎসবটাকে মনে প্রাণে তিনি ভালোবেসে আয়োজনের চেষ্টা করে থাকেন প্রতি বছরই।
ঢাকায় আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসব হয়- তার মধ্যে শিশু চলচ্চিত্র উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসব হলেও ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকেই প্রধান চলচ্চিত্র উৎসব ধরা হয়। এর কারণ সম্ভবত এখানে সব ধরনের চলচ্চিত্রের অংশগ্রহণ এবং বিদেশি নির্মাতাদের পদচারণা। এ উৎসবে আমাদের চলচ্চিত্র যেমন প্রতিনিধিত্ব করে, বাইরের দেশের চলচ্চিত্রও তেমনি গুরুত্ব পায়। এমনো অনেক চলচ্চিত্র এ উৎসবে প্রদর্শন হয়েছে যেগুলো আমাদের দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের জন্য সুযোগ পায়নি। এবারের চলচ্চিত্রের তালিকাটা দেখলে ব্যাপারটা বোঝা যাবে। বিভিন্ন দেশ ও ভাষার চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্যানারোমায় এ বছর ছিল মোট ১৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর মধ্যে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছাড়াও রয়েছে বাড়ির নাম শাহানা, নোনা পানি, মনলোক, মুন্তাসির, আজব ছেলে, ইতি চিত্রা, জাস্ট অ্যা জোক ডার্লিং,লীলাবতি নাগ, মেঘের কপাট, সাবিত্রী এবং ইছামতি। দর্শক এতসব চলচ্চিত্র বিনামূল্যে দেখতে পেরেছে সেটাও কম কিসে।
বৃষ্টির দিনে দর্শকের ভিড় অন্তত তাই মনে করিয়ে দেয়। কারণ বাংলাদেশ ও কলকাতার সিনেমাগুলোয় হল ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। অনেকেই অঞ্জন দত্তের সংগীত আয়োজনটিও ব্যাপক উপভোগ করেন। বরাবরের মতো এবারও উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল চিত্রনাট্য ল্যাব ও আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম কনফারেন্স। দুদিনের আয়োজনে ছিল ছয়টি সেশন। এ ছাড়াও উৎসবের অন্য আকর্ষণ ছিল ওয়াইড অ্যাঙ্কেল। সেখানে ফোকাসে ছিল চিনের সিনেমা। দেশটির ১৬টি সিনেমা দেখানো হয়। অন্যান্য বিভাগগুলোর মধ্যে ছিল এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম বিভাগ।
উৎসব শেষে পুরস্কারের খবর সবাই জানতে চায়, কোন সিনেমা পেল সেরা পুরস্কার?
২৮ জানুয়ারি, রোববার ছিল ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিন। এদিন জানা গেল উৎসবের পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমা, পরিচালক ও শিল্পীদের নাম। অর্থাৎ এবার দ্বাবিংশতম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান ফিল্ম কমপিটিশন বিভাগের সেরা সিনেমা হয়েছে চীনের সিনেমা ‘দ্য কর্ড অব লাইফ’। মান্দারিন ভাষার সিনেমাটির নির্মাতা কুইয়াও সিক্সুই। শ্রীলঙ্কান সিনেমা ‘হুইসপেরিং মাউন্টেইনস’-এর জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন জগথ মনুয়ারা। সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার পেয়েছে তাজিকিস্তানের মহিদ্দিন মুজফফরের ডভ। সেরা চিত্রগ্রাহকের পুরস্কার পেয়েছে মাইটি আফরিন—ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস। ‘চালচিত্র এখন’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় করে সেরা অভিনেতাও হয়েছেন অঞ্জন দত্ত। সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন বাদেমা, চীনের সিনেমা ‘দ্য কর্ড অব লাইফ’-এ অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এশিয়ান কমপিটিশন বিভাগে স্পেশাল জুরি মেনশন সিনেমার পুরস্কার পেয়েছে কাজাখস্তানের ‘হ্যাপিনেস’। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আসকর ইউবেবায়েব।
এ ছাড়া স্পেশাল জুরি মেনশন অভিনেত্রী হয়েছেন আফরিন খানম। অ্যাঞ্জেলস রেলিস পরিচালিত ‘মাইটি আফরিন—ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ, ফ্রান্স ও গ্রিসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। বাংলাদেশ প্যানারোমা পূর্ণদৈর্ঘ্য বিভাগে পুরস্কার জিতেছে পার্থ প্রসাদের ‘সাবিত্রী’। বাংলাদেশ প্যানারোমায় ট্যালেন্ট বিভাগে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে ফিফরোস্কি পুরস্কার জিতেছে বৈশাখী সমাদ্দারের ‘দ্য উইনিং’। এ বিভাগে প্রথম রানারআপ হয়েছে শুভাশীষ সিনহার ‘ইনাফি’, দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে জিয়াউল হক রাজুর ‘অন্তহীন পথে’।
অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে শিশুতোষ সিনেমা বিভাগে বাদল রহমান পুরস্কার পেয়েছে ভারতীয় নির্মাতা বিপুল শর্মার সিনেমা ‘প্রভাস’। অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত শ্যাম বেনেগালের সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’। স্পেশাল অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে অভিজিৎ শ্রীদাসের ‘বিজয়ের পরে’। স্পিরিচুয়াল বিভাগে সেরা ফিচার ফিল্ম হয়েছে ‘দেয়ার অ্যান্ড ব্যাক’। রাশিয়ান এই সিনেমার নির্মাতা ওলেগ আসাদুলিন। সেরা তথ্যচিত্র হয়েছে কিউবার ‘কুনানফিনদা: দ্য ল্যান্ড অব ডেথ’। তথ্যচিত্রটির নির্মাতা হ্যানসেল লেবা ফানেগো। এ বিভাগে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে গোলাম রাব্বানীর ‘সুরত’। ওমেন ফিল্ম মেকার্স বিভাগে সেরা ফিচার ফিল্ম হয়েছে ইরানের সিনেমা ‘জাঙ্কস অ্যান্ড ডলস’। এটির নির্মাতা মানিজেহ হেকমাত।
একই বিভাগে সেরা তথ্যচিত্র হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যান্সি সেভেনডসেনের ‘পাসাং: ইন দ্য শ্যাডো অব এভারেস্ট’। সেরা নির্মাতা হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েনং মু-নো। ‘হাউ টু গেট ইওর ম্যান প্রেগন্যান্ট’ সিনেমার জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই বিভাগে স্পেশাল মেনশন পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের ‘মুক্তি’। এটির নির্মাতা চৈতালি সমাদ্দার। বাংলাদেশ প্যানারোমা শাখার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে মাজিদ মাজিদি জানান, এই উৎসবে থাকতে পেরে তার চমৎকার অনুভূতি হয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলচ্চিত্র বঞ্চিতদের কথা বলে। এই উৎসবে অনেক তরুণ নির্মাতা অংশগ্রহণ করেছেন দেখে খুবই আনন্দিত। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়াবে আশা করি।’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘আমি মনে করি, এই উৎসবে নানারকম সংস্কৃতির প্রগতিশীল উপস্থাপন হয়েছে। আমরা যে ধরনের সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখি, এই ধরনের উৎসব সে ধরনের সমাজ গঠনে সহায়ক।’ ব্যাপক দর্শক এবারের উৎসব উপভোগ করেছেন বলে জানান উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, ২০২৫ সালের ১১ থেকে ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। আশা করি, দেখা হবে সে আসরে।
লেখক: সাবেক বুলেটিন সম্পাদক, উৎসব প্রতিদিন, ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে