স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বড় বাধা হবে শহরের যানজট
রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ফলে পরিবহন ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যাদের পরিবহন ব্যবস্থা সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা তাদের অপরিণামদর্শী বিভিন্ন উদ্যোগ ও সিদ্ধান্তের কারণেই মূলত পরিবহন ব্যবস্থায় এই অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার বিশৃঙ্খল অবস্থার বিষয় উঠলেই আমরা হয়তো গাড়ি চালকদের দোষারোপ করি; কিন্তু যারা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন, স্বল্পায়তন সড়কে বিপুলসংখ্যক যানবাহনকে চলাচলের অনুমতি দিয়ে তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। অথচ চালকদের চেয়ে তারাই বেশি দায়ী, যারা রোড পারমিট দেন উপযোগিতা বিবেচনা না করেই। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়ই যদি আমি বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করি তাহলে তো সমস্যা থেকেই যাবে।
শুধু প্রশিক্ষণ দিয়ে অথবা আইন প্রয়োগ করে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যাবে না। সড়কে অসম প্রতিযোগিতা প্রত্যক্ষ করা যায়। আমরা রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থাকে হাতিরঝিলের মতো সুশৃঙ্খল করতে পারতাম যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হতো। ঢাকার গুলশানে ‘ঢাকা চাকা’ বা এ ধরনের কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির মাধ্যমে সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পুরো ঢাকা শহরেই এমন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হলে এই খাতের বিশৃঙ্খল অবস্থা অনেকটাই দূর হতে পারত। গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলা, বাসের অনিয়ন্ত্রিত সংখ্যা, অনিয়ন্ত্রিত রাস্তায় চলাচল করা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল সঠিকভাবে কাজ না করা, ফুটপাথ দখল মুক্ত বা পথচারীবান্ধব করতে না পারা এসব কারণেই মূলত রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না।
পরিবহন সেক্টরে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়নের জন্য চিন্তা করা হচ্ছে; কিন্তু এই উদ্যোগও যথাযথ বা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দিতে সক্ষম হবে না। কারণ সড়কের বিশৃঙ্খলা রয়েই যাচ্ছে। ঢাকা শহের মেট্রো রেল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। এটাকে ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট হিসেবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মেট্রোরেল ব্যবস্থা কোনো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এটা রাজধানীর সার্বিক পরিবহন ব্যবস্থারই অংশ। কাজেই আমাদের সেভাবেই চিন্তা করতে হবে। মেট্রোরেল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলেই আপনা-আপনি রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে অথবা শৃঙ্খল ফিরে আসবে তা নয়। মেট্রোরেল স্টেশনের সঙ্গে অ্যাপ্রোস রোড নির্মাণ থেকে শুরু করে যোগাযোগ সহজীকরণ করতে হবে। একজন যাত্রী তার আবাসস্থল থেকে যদি মেট্রোরেল স্টেশনে সাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে না পারেন তাহলে এই অবস্থায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সুফল দেবে না। শহরের পরিবহন ব্যবস্থা কীভাবে উন্নত এবং গতিশীল হবে, তা নিশ্চিত করার জন্যই মেট্রোরেল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। এ প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়েছে। হংকং, সিঙ্গাপুর, জাপান ইত্যাদি উন্নত দেশে মেট্রোভিত্তিক টাউন প্লান তৈরি করা হয়। আর আমাদের রাজধানী ঢাকা অনিয়ন্ত্রিত এবং অপরিকল্পিতভাবে বড় হচ্ছে। শহরটি ক্রমেই ব্যবস্থাপনার অযোগ্য হয়ে পড়ছে। কীভাবে একটি ভবন তৈরি হচ্ছে, কীভাবে রাস্তা নির্মিত হচ্ছে, এগুলো উন্নত এবং আধুনিক শহরের প্রয়োজন মেটানোর মতো করে তৈরি করা হচ্ছে কি না, তা আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না।
কোনো শহরকে যদি আধুনিক, স্মার্ট এবং ব্যবস্থাপনার যোগ্য করে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে মেট্রো স্টেশনভিত্তিক স্পেশাল ড্যাপ তৈরি করতে হবে। ভবনগুলো হবে উঁচু উঁচু। সম্প্রসারিত হরাইজেন্টেল না হয় ভার্টিক্যালি আকাশ ছোঁবে। এতে যানজটের পরিমাণ কমে আসবে। কারণ মেট্রো স্টেশনের কাছে থাকলে গাড়ি ছাড়া হেঁটেই মেট্রো স্টেশনে চলে আসা যাবে। তার কর্মস্থল হয়তো মেট্রো স্টেশনের আশপাশে থাকবে। আর যারা কর্মস্থল থেকে দূরে অবস্থান করেন, তারাও স্টেশনের কাছাকাছি আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আগ্রহী হবেন। উন্নত দেশগুলোতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার মতো গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং টেকসই নগরী নিশ্চিত করার জন্য মেট্রো ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। আর আমরা সেই মেট্রো ব্যবস্থাকে ফ্লাইওভারের মতো একটি প্রকল্প হিসেবে তৈরি করেছি। ভবিষ্যতে কীভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে মেট্রোরেল ব্যবস্থার সমন্বয় সাধন করা হবে, সে ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা বা প্লান নেই।
মেট্রো স্টেশনের আশপাশের যাত্রীরা কীভাবে স্টেশনে আসবেন কোন রাস্তা ব্যবহার করবেন, সে ব্যাপারে কোনো কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। মেট্রোরেল তো প্রতিটি যাত্রীর দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে যাত্রী নিয়ে আসবে না। ফলে মেট্রোরেল ব্যবস্থা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। একজন যাত্রীকে স্টেশনে আসা এবং স্টেশনে নেমে বাসায় যাবার জন্য ব্যয় সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা থাকতে হবে। অন্যথায় তিনি কেন মেট্রোরেলে যাতায়াত করবেন? বর্তমান অবস্থায় যে স্টেশনগুলো মোড়ের কাছাকাছি সেখানে নুতন করে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। যারা মেট্রোতে যাতায়াত করবেন তারা নিশ্চিতভাবেই কমফোর্ট ফিল করবেন। কারণ যানজট তাদের খুব একটা প্রভাবিত করতে পারবে না; কিন্তু মেট্রো থেকে নামার পরই তাদের বিড়ম্বনা শুরু হবে। কারণ আমরা ফিডার রোডের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখি না। সেখানে উন্নতমানের পরিবহনের ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ মেট্রোতে ওঠার মতো সহায়ক রাস্তাগুলো আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। এমনকি ফুটপাথে হাঁটার মতো অনুকূল পরিবেশ নেই। অধিকাংশ ফুটপাথে আশপাশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকে। চাইলেই সেখানে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা যায় না। মেট্রোরেল ব্যবস্থা যেখানে গণপরিবহন খাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার কথা ছিল, সেখানে তার অবদানকে আমরা সীমিত করে ফেলেছি। বিপুল ব্যয়ে তৈরি মেট্রোরেল ব্যবস্থা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং সহজীকরণের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারবে না।
একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে মন্থর গতির শহর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এই গবেষণালব্ধ ফলাফল অবশ্যই বিবেচনার দাবি রাখে; কিন্তু মুস্কিল হলো কি কেউ যদি সরকারকে বলে যে, ঢাকা কিন্তু বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হচ্ছে। এর যানজট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে তাহলে সরকার বলতো, এগুলো আংশিক রিপোর্ট। পক্ষপাতদুষ্ট রিপোর্ট; কিন্তু এখন গুগলভিত্তিক যে গবেষণাগুলো হচ্ছে তার ফলাফলকে তো কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। রাজধানী শহর ঢাকা যে বিশ্বের সবচেয়ে মন্থর গতির শহরে পরিণত হয়েছে সেই তথ্য তো বাংলাদেশে এসে সংগ্রহ করার প্রয়োজন নেই। বিশ্বের প্রতিটি শহরের তথ্য গুগলের কাছে আছে। তারা সেই তথ্যের ভিত্তিতে পক্ষপাতমুক্তভাবে প্রতিবেদন প্রণয়ন করছে। তাদের গবেষণার ফাইন্ডিংসগুলো অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট এবং পরিবহন সংকটের বাস্তব চিত্রই তুলে ধরেছে। যারা চাইছেন বিনিয়োগের মাধ্যমে যানজট দূর করবেন তাদের জন্য এই গবেষণা প্রতিবেদন একটি সতর্ক বার্তা মাত্র।
ঢাকা শহরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অনেক ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে; কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত সুফল আমরা পাইনি। শহরে যান চলাচলের গতি আমরা কোনোভাবেই বাড়াতে পারছি না। দিন দিন রাজধানী শহর ঢাকা আরো বেশি যানজটের শহরে পরিণত হচ্ছে। ঢাকা আধুনিক বিশ্বের একটি স্থবির নগরীতে পরিণত হতে চলেছে। ঢাকা আগামীতে বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়লেও বিস্মিত হবার কিছু থাকবে না। আর শহরটিকে এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে যে অবস্থা থেকে ভবিষ্যতে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় থাকবে না। গুগল যে তথ্যের ভিত্তিতে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে তা বিশ্বাসযোগ্য। কারণ চাইলেও কেউ তাদের তথ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে না। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঢাকা শহরকে বিশ্বের সবচেয়ে মন্থর গতির শহর বলে যে স্বীকৃতি দিয়েছে তা বিশ্বের প্রতিটি দেশ জানতে পারবে। তারা ঢাকার সঙ্গে অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখবে। যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসবেন তারা যানজটের বিষয়টিকে মাথায় রেখেই তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের বিকাশমান পর্যটন সেক্টর। কারণ কোনো বিদেশি পর্যটকই চাইবেন না বাংলাদেশে পর্যটনে এসে যানজটে আটকে থাকবেন। একজন পর্যটক সব সময়ই চাইবেন অল্প সময়ে বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখতে। সরকার পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করছেন। বিনিয়োগের মাধ্যমে পর্যটন খাতের উন্নয়নের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল তা শহরে চলাচলের মন্থর গতির কারণে বিঘ্নিত হতে পারে। আমাদের দেশের উন্নয়ন কেমন হয়েছে, তা নিয়ে যদি কেউ প্রশ্ন করেন তাহলে আমি বলব, আমাদের দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা খণ্ডিত উন্নয়ন পূর্ণাঙ্গ উন্নয়ন নয়। আমাদের সত্য স্বীকার করে সম্ভাব্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। কোনো ক্ষেত্রেই জেদ করে বসে থাকলে হবে না। উন্নয়ন কার্যক্রম সাধন করতে গিয়ে যে ভুলভ্রান্তি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে এসে আগামীতে সঠিকভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। অতীতের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের দেশে যেসব উন্নয়ন কার্যক্রম হয়েছে তার বেশির ভাগই সমন্বয়হীন উন্নয়ন। ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সুফল দিতে পারছে না। এতদিন বাংলাদেশ ছিল বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নাম্বার দেশ। এখন যানবাহনের গতির ক্ষেত্রেও আমরা বিশ্বের এক নাম্বার দেশের মর্যাদা লাভ করলাম।
অনেকেই প্রশ্ন উত্থাপন করেন, আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল ইত্যাদি নির্মাণে ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এর পেছনে সংগত এবং অসংগত দুধরনের কারণই আছে। অসংগত কারণের মধ্যে আমাদের অদক্ষতা অন্যতম। সংগত কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণটি হচ্ছে আমাদের কনটেন্ট কম। মেধা বা যোগ্যতারও কমতি আছে। আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনা করি; কিন্তু মনে রাখতে হবে ভারত মেধা নিজস্ব মেধা এবং যে নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয় তাও তারা নিজেরাই জোগান দেন। তাদের বাইরে থেকে তেমন কিছুই আনতে হয় না; কিন্তু বাংলাদেশের নির্মাণসামগ্রী এবং লোকবল বাইরে থেকে আনতে হয়। কাজেই নির্মাণ ব্যয় বেশি হয়। তবে অসংগত কারণটি হচ্ছে, জাইকা মেট্রোরেল নির্মাণের ভারতকে অর্থ দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়াকে অর্থ দিয়েছে। বাংলাদেশকেও অর্থ দিয়েছে; কিন্তু জাইকা এক এক দেশের ক্ষেত্রে এক এক রকম শর্ত দিয়েছে। ভারতকে এবং ইন্দোনেশিয়াকে যে শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাদের শর্ত ভিন্নতর। কতদিন ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার কত হবে, এসব শর্ত সব দেশের ক্ষেত্রে একই রকম। যেমন,বাংলাদেশকে জাইকা যে ঋণ দিয়েছে তার একটি পরোক্ষ শর্ত হচ্ছে এরকম, মেট্রো প্রকল্পে জাপানিরাই কাজ করবে। নির্মাণসামগ্রী জাপান থেকেই আনতে হবে। এসব শর্তের কারণে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যয় ভারত অথবা ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় বেশি হচ্ছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যারা চুক্তি স্বাক্ষরের দায়িত্বে ছিলেন, তারা এসব শর্ত বিবেচনায় নেননি। এখানেই তাদের অদক্ষতার প্রমাণ মেলে। অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান একটি। অর্থ গ্রহণকারী দেশ তিনটি। মোটা দাগের শর্তগুলো সব ঠিকই আছে; কিন্তু কাজ করা করবে এসব বিষয়ে যে শর্ত দেয়া হয়েছে তা এক এক দেশের ক্ষেত্রে এক একরকম। এই আপত্তিকর শর্ত রিভিউ করার মতো মানসিকতাও আমাদের নেই। বরং আমাদের কর্মকর্তারা স্বাক্ষরিত চুক্তির পক্ষে কথা বলেন। আমরা উন্নয়নের জন্য যে অর্থ ব্যয় করছি, তা জনগণের অর্থ। তাই জনগণের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যে দেশ বা প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন করবে তারাই যদি বাস্তবায়ন কাজে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে ব্যয় বেশি হবেই। যারা অতিরিক্ত ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তারা এক ধরনের দুর্নীতি করেছেন বলে আমি মনে করি।
লেখক: অধ্যাপক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
অনুলিখন: এম এ খালেক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে