ডিএনএ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাছে সরকারি ডিএনএ ল্যাবের দায়িত্ব হস্তান্তর
প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছর পর অবশেষে ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির (এনএফডিপিএল) দায়িত্ব নিয়ে ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে ডিএনএ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে এই দায়িত্বভার হস্তান্তর করা হয়।
২০২০ সালের আগস্টে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পঞ্চম উইং হিসেবে এ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ সরকার।
নারী বিষয়ক অধিদপ্তরের ডকুমেন্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেনের (এমএসপিভিএডব্লিউ) পক্ষে ডিএনএ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএলএমডি‘র পরিচালক সৈয়দা আক্তার পরাগ।
আগামী বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে ডিএনএ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেওয়া হবে।
এনএফডিপিএল দেশের প্রথম ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, যা সরকারিভাবে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতিষ্ঠা করা হয়। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ডেনিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা (ডানিডা) ল্যাবরেটরি স্থাপনে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে।
পরবর্তীতে, সারাদেশে ডিএনএ ল্যাবরেটরির সেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭টি বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়। এই পরীক্ষাগারগুলো দূরবর্তী অঞ্চল থেকে কেস গ্রহণ করে এবং প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ের পরে ডিএনএ বিশ্লেষণের জন্য সংগৃহীত নমুনাগুলো এনএফডিপিএল’এ পাঠায়।
এমএসপিভিএডব্লু অনুসারে, এনএফডিপিএল ৭৩টি ক্ষেত্রে ডিএনএ বিশ্লেষণ সম্পন্ন করেছে, যার মধ্যে কেবল জানুয়ারি মাসেরই ২৪৬টি ডিএনএ নমুনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ল্যাবটি মোট ৯,৪২৫টি কেস বিশ্লেষণ করেছে যার মোট নমুনা ছিল ৩০,১৩১টি।
বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত ৯,২৭২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, অপরাধী, পিতৃপরিচয় ও দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা মারা যান তাদের মৃতদেহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে সনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় ল্যাবের সংখ্যা বৃদ্ধি এর মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনএফডিপিএল-এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সালের আগস্টে চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টেকনিক্যালি ল্যাবগুলো বিভাগের অংশ হয়ে যায়।
২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে বিভাগ থেকে আসা বাজেট ব্যবহার করে দেশের ডিএনএ পরীক্ষাগারগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এখন ডিএনএ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে।
তিনি জানান, যেহেতু সেগুলো একই বিভাগের অধীনে পরিচালিত হবে, তাই এর মধ্য দিয়ে পরীক্ষাগারগুলো আরও সংযুক্ত এবং আরও সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে কাজ করতে পারবে ।
পাশাপাশি পরীক্ষাগারগুলোর উৎকর্ষ সাধন সহজ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভাগীয় পরীক্ষাগারগুলো মূলত নমুনা সংগ্রহকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে, তবে শিগগিরই সেগুলোকে অ্যানালাইসিস বা প্রোফাইলিং ল্যাবে উন্নীত করা হবে।
ডিএলএমডি’র পরিচালক সৈয়দা আক্তার পরাগ জানান, ডিএনএ বিশ্লেষণে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা নিয়ে আসবে বলে তারা আশা করছেন, যা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও অপরাধ প্রতিরোধে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে