মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাংবাদিকের জেল
সম্পাদক পরিষদের নিন্দা ও উদ্বেগ
মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে সোমবার (১১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি শফিউজ্জামান রানাকে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় সম্পাদক পরিষদ নিন্দা জানাচ্ছে। অবাধ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নষ্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ।
এতে আরও বলা হয়, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় কেনা কম্পিউটার ও ল্যাপটপ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে আবেদন করেন শফিউজ্জামান রানা। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য না পাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ইউএনও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠান। এরপর নথি দিতে দেরি করে তার জামিনের পথ বিলম্বিত করা হয়।’
ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে একজন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনের চিরায়ত আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যেখানে যে কোনো অপরাধে জামিন পাওয়া ন্যূনতম আইনি অধিকার, সেখানে তা দীর্ঘায়িত করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।’
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি যে, মোবাইল কোর্ট আসামিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া ছাড়াই এক তরফা শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করে দেন। আসামিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার পর একপক্ষীয় জেরার মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ফলে এ আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর একজন ব্যক্তিকে অবধারিতভাবে কারাগারেই যেতে হয়।’
এ ছাড়াও সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি তুলে বলা হয়, ‘মুক্তমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের স্বার্থে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর মোবাইল কোর্ট আইন প্রয়োগ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমরা গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এ আইনের ব্যবহার এ মুহূর্তে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ও ব্যক্তিস্বার্থে যারা এ আইনের চরম অপব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তথ্য কমিশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং কমিশনের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আশা করি, বিলম্বে হলেও সংশ্লিষ্টদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে