‘বাংলাদেশের টিকে থাকার একমাত্র পথ কার্যকর কূটনীতি’
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে অবস্থানরত এই দেশের সামনে কৌশলগত এবং কার্যকর কূটনীতি বাস্তবায়ন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।
বুধবার (২৮ মে) বিকালে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘টিবিডি পার্সপেকটিভ’-এর এক উন্মুক্ত সেশনে ‘কূটনৈতিক অঙ্গন: দক্ষিণ এশিয়া এবং তার বাইরে’ শীর্ষক আলোচনায় সাবেক কূটনীতিক, সুশীল সমাজের সদস্য এবং শিক্ষাবিদরা এই অভিমত প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশের কোনো সরকারই এমনভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক গড়তে চেষ্টা করেনি, যাতে তারা সব ধরনের সহায়তা পেতে পারে। পূর্বের ‘শত্রু নয়, সবার সঙ্গে সামাল দাও’ তত্ত্ব দেশের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান দেশটির জন্য যেমন সুযোগ এনেছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। তাই আমাদের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি কারা হবে? অবশ্যই চীন, পূর্ব এশিয়া এবং ভারত। আর আমরা এই তিনটি উদীয়মান অর্থনীতির মাঝখানে অবস্থান করছি। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হলেও প্রযুক্তি ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তা থেকে উপকার পেতে পারে। আর এই উপকার পেতে হলে কার্যকর কূটনীতির কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য প্রতিরক্ষা খাতের পাশাপাশি কূটনীতি খাতে বিনিয়োগ করাটা আরও লাভজনক হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল ফেলো আসিফ বিন আলী বলেন, বাংলাদেশের টিকে থাকতে হলে সামরিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। আর সামরিকভাবে দুর্বল থাকলে প্রতিরক্ষা কৌশল যথাযথ সমাধান হতে পারে না। সেক্ষেত্রে কার্যকর কূটনীতিই উপযুক্ত পথ। আমাদের প্রয়োজন দক্ষ, পেশাদার কূটনীতিক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে রাজনৈতিক নেতৃত্বই প্রধান অন্তরায়। তাই এই খাতে জোরালো মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজকে উদ্ধৃত করে আসিফ বিন আলী বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে—আগামী সংসদে বিএনপি সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি বিএনপি অতীতের ভুল পথ অনুসরণ না করে পররাষ্ট্রনীতির সংস্কারে মনোযোগ দেবে এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রাসঙ্গিক নীতিমালা প্রণয়নের কাজ করবে।
‘দ্য রোড টু ডেমোক্রেসি’র নির্বাহী সম্পাদক ড. সাইমুম পারভেজ বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান বিষয়গুলোর সমাধানের জন্য একটি নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। বিএনপি ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্রনীতি প্রাধান্য পাবে, কারণ তখন দেশের প্রয়োজন হবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, পূর্ব এশিয়ার দেশ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের গন্তব্য দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে