Views Bangladesh Logo

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার অচলাবস্থা দূর করুন

চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় গত ১৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্যসহ শীর্ষ পর্যায়ের পদে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে।

অন্যদিকে স্কুল-কলেজে কোথাও কোথাও চাপের মুখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগের ঘটনাও ঘটে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে এক মাস হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার অচলাবস্থা কাটতে শুরু করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো স্থবিরতা বিরাজমান।

গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আশা করছে, তাড়াতাড়ি উচ্চশিক্ষাতেও স্থবিরতা কেটে গিয়ে গতি ফিরবে। যদিও যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ করতে হিমশিম অবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

এ নিয়ে দেশের শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ সবাই উদ্বিগ্ন। প্রায় দুমাসের শিক্ষা-বিরতি চলছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। এ সময় কীভাবে পূরণ করা হবে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সূত্রমতে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হয়নি, সেগুলোতে প্রশাসনিক ও শিক্ষাবিষয়ক সিদ্ধান্তগুলোও আটকে আছে। আবার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষক ক্লাসে যেতেও ভয় পাচ্ছেন।

পদত্যাগ না করায় কেউ কেউ পদত্যাগের হুমকি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেমন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য পদত্যাগ করলেও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তফা আজাদ কামাল পদত্যাগ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পক্ষ তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ কার্যক্রম শুরু না হলে এটা একদিকে যেমন শিক্ষাব্যবস্থায় প্রভাব ফেলবে, অন্যদিকে চলমান রাজনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কারণ, শিক্ষার্থীরা নানারকম রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীরা যদি রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয় তা ভালো; কিন্তু তারা যদি রাজনৈতিক শিকারে পরিণত হন তা বিপদ হবে। দেরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসলে তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ বসবে কি না তা নিয়েও অনেকে চিন্তিত। তাদের পরীক্ষা কখন হবে, পরীক্ষা ছাড়া ফলাফল প্র্রকাশিত হলেও সমালোচিত হবেন।

বর্তমানে দেশে ৫৫টি স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু আছে। এর মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় ৪টি। বাকি ৫১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে (অধিভুক্ত কলেজসহ) ৪৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা চাই, এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে দ্রুত ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ কার্যক্রম যত দেরি হবে ততই শিক্ষার্থীদের জন্য সংকট বাড়বে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ