খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তনের চেয়ে কিস্তি আদায় জোরদার করা জরুরি
গত ২৭ নভেম্বর জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নির্ধারণের সময়সীমা হ্রাস করেছে। সংশোধিত এই নীতিমালা আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। গত সরকারের আমলে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে পতিত কিস্তি আদায়ের জন্য ৬ মাস সময় দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ কোনো মেয়াদি ঋণ হিসাবে পাওনা কিস্তি নির্ধারিত সময়ে পরিশোধিত না হলেও পরবর্তী ৬ মাস সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হতো না। বিদ্যমান আইন সংশোধনের ফলে এখনে থকে যে কোনো ঋণ হিসাব থেকে নির্ধারিত সময়ে পাওনা কিস্তি আদায় না হলে পরবর্তী দিন থেকেই ঋণ হিসাবটি খেলাপি বলে চিহ্নিত হবে। অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তো খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে। আসলে বিষয়টি তা নয়।
গত সরকারের আমলে আইনি পরিবর্তনের মাধ্যমে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা প্রদানের পূর্বে চলমান আইনে নির্ধারিত দিনে কিস্তি পরিশোধিত না হলে পরদিন থেকেই সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবটি খেলাপি মানে চিহ্নিত করার বিধান ছিল। তাই এটি কোনো নতুন আইন নয়, বরং পুরোনো আইনে প্রত্যাবর্তন বলা যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নীতিমালার ফলে এখন থেকে কোনো ঋণ হিসাবের কাছে ব্যাংকের পাওনা কিস্তি তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিন অপরিশোধিত থাকলে তার পরদিন থেকেই তা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে। নতুন এই সার্কুলার বাস্তবায়ন শুরু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংকিং সেক্টরের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। একই সঙ্গে বর্ধিত খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের মাত্রাও বৃদ্ধি পাবে। ফলে ব্যাংকগুলোর ঋণদান ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তবে এই ব্যবস্থা ব্যাংকিং সেক্টরের খেলাপি ঋণের প্রকৃত অবস্থা জানার ক্ষেত্রে এক ধাপ অগ্রগতি বলে অনেকেই মনে করছেন।
আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী, কোনো ঋণ হিসাবের কাছে পাওনা কিস্তি নির্ধারিত সময়ে পরিশোধে ব্যর্থ হলে পরদিন থেকেই সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবটি খেলাপি মানে চিহ্নিত হয়। আর খেলাপি মানে চিহ্নিত হবার পর সেই ঋণ হিসাবধারী কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন করে ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। এ ছাড়া ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে অন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে তাও প্রযোজ্য হয়। বিগত সরকার আমলে দেশের একটি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা গোষ্ঠী নানাভাবে আর্থিক খাতে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে সুবিধা লুটে নিয়েছিল সেই মহলটিই ঋণখেলাপি চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের পরও ৬ মাস পর্যন্ত অবকাশ সুবিধা আদায় করে নিয়েছিল। এতে ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থা খারাপ হতে খারাপতর হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়। ঋণখেলাপি হলেও এক বছর পর্যন্ত তারা অন্য কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছিলেন। নতুন প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে সেই সুযোগ অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়বে।
নতুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণ মান নির্ধারণের যে নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে তার মাধ্যমে ঋণ হিসাবগুলোকে ৫টি বিশেষ শ্রেণিতে বিভক্ত করা হবে। এর মধ্যে নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হয় এমন ঋণ হিসাবকে স্ট্যান্ডার্ড লোন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ শ্রেণির ঋণের জন্য ১ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো ঋণ হিসাব থেকে নির্ধারিত সময়ের পর ২ থেকে ৩ মাস কিস্তি আদায় না হলে তাকে ‘স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্ট (এসএমএ) হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে। এ ধরনের ঋণ হিসাবের জন্য ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। সাব-স্ট্যান্ডার্ড বা নিম্নমানের ঋণ হিসাব হচ্ছে সেই ঋণ হিসাব যা মাঝে মাঝে খেলাপি হয়ে যায় আবার আপনা থেকেই নিয়মিতকরণ করা হয়। এই শ্রেণির ঋণ হিসাবের বিপরীতে ২০ শতাংশ হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
নির্ধারিত সিডিউলের পর ৬ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত পর্যন্ত কোনো ঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকলে তাকে ডাউটফুল লোন হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে। এই শ্রেণির ঋণ হিসাবের জন্য ৫০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর ১২ মাস তা তারও বেশি সময় কিস্তি অপরিশোধিত থাকলে তাকে মন্দ ঋণ বা ব্যাড লোন হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে। এই শ্রেণির ঋণ হিসাবের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। প্রশ্ন হলো ঋণ হিসাব শ্রেণীকরণ নীতিমালা কঠোর করার কারণে ব্যাংকিং খাতে কি ঘটতে পারে? বিগত সরকার আমলে কিস্তি আদায় না করেই ব্যাংক খাতের ঋণের পরিমাণ কৃত্রিমভাবে কমিয়ে দেখানোর যে চেষ্টা চালানো হয়েছিল তা কিছুটা হলেও কমবে। তবে শুধু এই একটি মাত্র উদ্যোগ পুরো ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ জানার জন্য যথেষ্ট হবে না।
ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র জানতে হলে আরও কিছু নীতিমালা সংশোধন করা প্রয়োজন। গত সরকার আমলে,বিশেষ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন কৌশলে ঋণের কিস্তি আদায় না করেই খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব মতে, গত সেপ্টেম্বর মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা; কিন্তু এটা খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের ছাড়কৃত ঋণের ১২ শতাংশ খেলাপি হিসেবে প্রদর্শন করা হচ্ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ আগামীতে শুধু বাড়তেই থাকবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছাড়কৃত মোট ঋণের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
কিস্তি আদায় না করেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখানোর জন্য নানা আইনি সংস্কার করা হয়েছে। এসব আইনি সংস্কারের মাধ্যমে ঋণ আদায় প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে ফেলা হয়েছে যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক দৃশ্যমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দেখাতে পেরেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত শ্বেতপত্র কমিটির পর্যবেক্ষণে ব্যাংকিং খাতের দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে, তা যে কোনো বিচারেই উদ্বেগজনক। শ্বেতপত্র কমিটি উল্লেখ করেছে, গত জুন মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রদর্শিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের কিস্তি আদায় না করে তাকে লুকিয়ে রাখার প্রবণতাকে দেশের একজন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ কার্পেটের নিচে ময়লা লুকিয়ে রাখার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। কার্পেটের নিচে লুকানো ময়লা এক সময় ঠিকই গন্ধ ছড়াবে। ঠিক তেমনি আইনি ম্যারপ্যাঁচে খেরাপি ঋণকে লুকিয়ে রাখা হলে তা ব্যাংকিং খাতের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এখন ঠিক তাই হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ লুকিয়ে রাখা বা নিয়মিত হিসেবে দেখানোর একটি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় ২০১৫ সালে। সেই বছর জানুয়ারি-মার্চ সময়ে দেশের রাজনীতিতে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই অজুহাতে ৫০০ কোটি টাকা ও তদূর্ধ্ব অঙ্কের খেলাপি ঋণ হিসাব পুনর্গঠন করা হয়। নামে পুনর্গঠন হলেও এটি ছিল আসলে ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ। মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ নগদ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১২ বছরের জন্য ঋণ হিসাব পুনর্গঠন করা হয়। ১১টি শিল্পগোষ্ঠী এই সুযোগ নিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়মিত করে নেয়।
২০১৯ সালে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট এককালীন জমা দিয়ে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ১০ বছরের জন্য ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণের সুযোগ দেয়া হয়। এর ফলে ঢালাওভাবে ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ শুরু হয়। আগে কোনো ঋণ হিসাব সর্বোচ্চ তিনবার পুনঃতপশিলীকরণ করা যেত। প্রথমবারের জন্য ১০ শতাংশ, দ্বিতীয়বারের জন্য ২০ শতাংশ এবং তৃতীয়বারের জন্য ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিতে হতো। ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ করা হলে সেই ঋণ হিসাবকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৩৮ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের খেলাপি ঋণ হিসাব নিয়মিতকরণ করে নেয়। বর্তমানে পুনঃতপশিলীকরণকৃত ঋণ হিসাবের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা।
আগে কোনো ঋণ হিসাব মন্দমানে শ্রেণিকৃত হবার পর ৫ বছর অতিক্রান্ত হলে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়েরপূর্বক শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করে সেই ঋণ হিসাবকে অবলোপন করা যেতো; কিন্তু এই আইন পরিবর্তন করে প্রথমে তিন বছর এবং পরবর্তীতে দুই বছর মন্দামানে শ্রেণিকৃত থাকার পরই একটি ঋণ হিসাব অবলোপনের সুযোগ দেয়া হয়। হিসাবের নিকট পাওনা ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ টাকার কম হলে মামলা দায়েরের কোনো শর্ত থাকবে না। এ ছাড়া শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণের বিধানও প্রত্যাহার করা হয়। জুন মাসের হিসাব মোতাবেক অবলোপনকৃত ঋণ হিসাবের কাছে পাওনা ছিল ৭৫ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। বিশেষ হিসাবে ছিল ৩৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। আদালতের স্থগিতাদেশের আওতায় ছিল ৭৬ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার ০৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা খেলাপি হলেও তাকে খেলাপি ঋণ হিসাবে প্রদর্শন করা হয়নি।
ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান লক্ষ্যে একই পরিবার থেকে একযোগে ৪ জন পরিচালক নিয়োগের বিধান করা হয়। তারা অব্যাহতভাবে তিন টার্ম (প্রতি টার্ম তিন বছর) অর্থাৎ ৯ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ গ্রহণের সময় আরোপিত শর্ত মোতাবেক একই পরিবার থেকে পরিচালক নিয়োগের সংখ্যা কমিয়ে তিনজনে নিয়ে আসা হয়। আইএমএফের শর্ত মোতাবেক ব্যাংকিং খাতের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি চিহ্নিত করার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়; কিন্তু সেই আইনের কোনো প্রয়োগ এখনো পর্যন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
ব্যাংকিং খাতে ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ যাতে আর না বাড়ে সেই লক্ষ্যে এখন উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এ জন্য কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে বয়কট করাসহ বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে। ঋণ গ্রহণের আবেদন দাখিলকালে যে সম্পদ ব্যাংকের অনুকূলে বন্ধক প্রদান করে তার সঠিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো ব্যাংক কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে যদি বন্ধকী সম্পদের অতিমূল্যায়ন করা হয় তাহলে সেই কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ঋণ গ্রহীতা এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে তা নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণের সুবিধার অপব্যবহার বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। একবারের বেশি কোনো ঋণ গ্রহীতাকে ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণের সুযোগ দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে যারা জাতীয় অথবা স্থানীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ অন্তত এক বছর আগে থেকে বন্ধ করতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ঋণ হিসাব কখনোই এক পক্ষের কারণে খেলাপি হয় না। ঋণের আবেদন মূল্যায়নকালে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যদি চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে সর্বোচ্চ সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে অনুমোদিত ঋণ পরবর্তীতে খেলাপি হবার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে। ব্যাংকিং খাতের আইনি সংস্কারের জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তাদের কাছ থেকে কঠোর আইনি পদক্ষেপ প্রত্যাশা করা বাতুলতা মাত্র।
এম এ খালেক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে