আটটি গোপন ডিটেনশন সেন্টার পাওয়ার দাবি গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের
ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় আটটি গোপন ডিটেনশন সেন্টারের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (আইসিই)।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) কমিশনের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) একটি সেল পেয়েছি, যার আয়তন মাত্র সাড়ে তিন বাই চার ফুট। সেখানে একটি ছোট পিপহোল ছাড়া আলোর কোনো উত্স এবং একটি ড্রেন ছাড়া কোনো স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিল না, যেখানে বন্দিরা সমস্ত প্রাকৃতিক কাজকর্ম সম্পাদনে বাধ্য হতেন’।
কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, বছরের পর বছর ধরে মানুষ এ ধরনের সংকীর্ণ সেলে বন্দি ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে এই কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা ও গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্যের হাতে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশন জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠনের পর এক হাজার ৬০০’র বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এ পর্যন্ত যাচাই-বাছাই করা ৪০০টি অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি র্যাব, ৩৭টি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট, ২৬টি ডিরেক্টরেট জেনারেল ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), ৫৫টি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), ২৫ জন পুলিশ সংশ্লিষ্ট এবং বাকি ৬৮টি অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে।
এই গোপন সেলগুলোর ‘প্রমাণ ধ্বংস করার চেষ্টা’ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেল ও দেয়াল ধ্বংস করছে। এতে জড়িতরা সম্ভবত সহযোগিতা করবেন না। সাবেক কর্মকর্তাদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টাও চালাতে পারেন বর্তমান কর্মকর্তারা’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে