Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

অতিথি পাখির আতিথ্য নিশ্চিত করুন

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শীত এলেই আমাদের দেশে উড়ে আসে অতিথি পাখি। তারা আসে হাজার হাজার মাইল দূর থেকে। ইংল্যান্ডের নর্থ হ্যাম্পশায়ার থেকে। সাইবেরিয়া থেকে। তীব্র শীত থেকে বাঁচতে তারা দক্ষিণের কম শীতের দেশে চলে আসে মাস তিনেকের জন্য। তারা এসে বাসা বানায় আমাদের জলাশয়গুলোতে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের লেক, মিরপুর চিড়িয়াখানার লেক, বরিশালের দুর্গাসাগর, নীলফামারীর নীল সাগর, সিরাজগঞ্জের হুরা আর সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর অতিথি পাখিদের প্রিয় অবকাশকেন্দ্র। বাংলাদেশের জলাশয়গুলোই এদের পছন্দের স্থান, নিরাপদ আশ্রয়। বেশ কয়েক বছর ধরে নিঝুম দ্বীপ, দুবলার চর, কুতুবদিয়াতেও শীতের পাখিরা বসতি গড়ছে।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাখি আসে বাংলাদেশে। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, এক দশক আগেও এদেশে শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি আসত। এখন আসে মাত্র ২০-২৫ প্রকার। এর কারণ দেশের জলাশয় কমে যাওয়া। জলাশয়গুলোতে পাখির খাদ্য কমে যাওয়া। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেও পাখিরা আর আসতে পছন্দ করে না এ অঞ্চলে; কিন্তু অতিথি পাখিগুলো শুধু সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য নিয়ে আসত তা না, তারা নিয়ে আসত প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রচুর উপাদান।

কিন্তু আমরা এসব অতিথি পাখির আতিথেয়তা ঠিকমতো করতে পারিনি। এক সময় অতিথি পাখিদের ধরে ধরে বাজারে বাজারে বিক্রি করা হতো, জবাই করে খাওয়ার জন্য। অতিথি পাখি ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তিদায়ক বিধি জারির পর থেকে তা কিছুটা কমে এসেছে। তাও যে একেবারে কমে গেছে বলা যাবে না। অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো অতিথি পাখি ধরা হয়, বাজারে বিক্রি হয়, খাওয়া হয়। অতিথি পাখি আর নির্বিঘ্নে এ দেশে অতিথি পাখি হয়ে থাকতে পারছে না।

এক শ্রেণির মানুষের হাতে শিকার হচ্ছে তারা। জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ার কারণে যেসব পাখি জঙ্গলে ঠাঁই খুঁজত; তারাও এদেশে আসার আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই পাখি শিকার বন্ধের পাশপাশি পাখিরা যাতে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারে, সেদিকে সবার দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

অতিথি পাখি আসার সংখ্যা কমে যাওয়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়কেই বিশেষভাবে নির্দেশ করে। শুধু অতিথি পাখি নয়, বাংলাদেশে পাখির সংখ্যাই কমে আসছে দিন দিন।

ঢাকা শহর তো পাখিশূন্যই হয়ে গেছে বলা যায়; কিন্তু পাখি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই পাখি কমে যাওয়ার বিষয়টির দিকে সরকারের বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। পাখিবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে না পারলে আমাদের সামনে বিশাল বিপদ আছে। অতিথি পাখিসহ সব পাখি বসবাসের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে আমাদের। পাখি যদি না টিকতে পারে আমরাও একদিন এই পরিবেশে টিকে থাকতে পারব না।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ