Views Bangladesh Logo

ঈদের আগেই বেতন-বোনাস-মজুরি পরিশোধ করুন

বাংলাদেশে এটা একটা অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে যে ঈদের আগে অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয় না। গত ঈদুল ফিতরেও এমনটা দেখা গেছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরাও ঈদের আগে বেতন-ঈদের উৎসব ভাতা পান না বলে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ এখনো পাননি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। আসন্ন ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা ও মে মাসের বেতন পাওয়া নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন শিক্ষকরা। এর সঙ্গে অনেক কারখানার শ্রমিকরাও মজুরি ও ঈদের উৎসব পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কুতুব আইন এলাকায় অবস্থিত বন্ধ ঘোষিত ইউনিটি কম্পোজিট মিল লিমিটেডের (ড্রাইং) শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি, ঈদের উৎসব ভাতাসহ আইনানুগ সব পাওনা পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গত বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।

ঈদের দুই সপ্তাহ বাকি। এর মধ্যেই এরকম খবর আসতে শুরু করেছে সংবাদমাধ্যমে। আশঙ্কা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহনাগাদ হয়তো এরকম দুঃসংবাদ আরও আসবে। আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বেই শিক্ষক-কর্মচারীরা মে মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বেতন-ভাতার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক ঈদের আগে আগে শ্রমিক-কর্মচারীদের কেন এমন অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলা হয়। ঈদ মুসলমানদের জীবনে একটি প্রধান ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে অনেকের কোরবানি দেয়ার পরিকল্পনা থাকে। নিম্নআয়ের মানুষরা অনেকে হয়তো ভাগে কোরবানি দেন। দুই সপ্তাহ আগেও যদি তারা বেতন-বোনাস পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন তাহলে কীভাবে কী পরিকল্পনা করবেন?

আমরা দেখেছি অনেক কারখানার মালিকই শ্রমিকদের জীবন নিয়ে গাফিলতি করেন। যে শ্রমিকের শ্রমে কারখানা চলছে তাদেরই কেন এত অবহেলা? পাশাপাশি শিক্ষকরা সমাজের সম্মানের মানুষ, এমপিওভুক্ত হওয়ার কারণে তাদের অনেক বৈষম্যের শিকার হতে হয়। ঈদের আগে বেতন-বোনাসের দাবিতে তাদের রাস্তায় নামা কোনোভাবেই সম্মানজনক বিষয় নয়।

আন্দোলন করে রাস্তায় না নামলেও আমরা জানি দেশের অনেক গণমাধ্যম কর্মীও ঈদের আগে বেতন-বোনাস পান না। এবার ঈদুল আজহা পড়েছে মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে, তাই অনেক প্রতিষ্ঠান হয়তো জুন মাসের বেতন পরিশোধ করবে না, বোনাস দিয়েই সান্ত্বনা দিবে; কিন্তু এবারের ঈদের সরকারি ছুটি প্রায় ১০ দিন। সামান্য বোনাসের টাকায় কী হবে তাও প্রতিষ্ঠানকে মাথায় রাখতে হবে। মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও জুন মাসের বেতন পরিশোধ করে দিলে কর্মীদের অনেক উপকার হবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।

আমাদের দাবি সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঈদের আগেই বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করুন। বিশেষ করে কারখানার শ্রমিকদের যেন এ নিয়ে কোনো ভোগান্তিতে না পড়তে হয় তা অবশ্যই কারখানার মালিক ও সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ