তেল-গ্যাসের আমদানি না বাড়ালে ইইউর পণ্যে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা না হলে ইউরোপের রপ্তানি পণ্যে বিশেষ করে গাড়ি ও যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, 'আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমাদের সঙ্গে তাদের বিশাল ঘাটতি পূরণ করতে হলে আমাদের তেল ও গ্যাস বৃহৎ পরিসরে ক্রয় করতে হবে। অন্যথায়, শুল্ক আরোপই হবে একমাত্র পথ!!!'
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ইইউ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের তেল ও গ্যাস রপ্তানির সিংহভাগ ক্রয় করে। বর্তমানে অতিরিক্ত রপ্তানি সম্ভব না হলেও দেশের জ্বালানি উৎপাদন আরও বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন ট্রাম্প।
ইউরোপীয় কমিশন জানায়, ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত। তারা রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি ধাপে ধাপে বন্ধ করতে এবং সরবরাহের উৎসে বৈচিত্র্য আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইইউর তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ৪৭ শতাংশ এবং তেল আমদানির ১৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ তেল ক্রয়ক্ষমতায় পৌঁছেছে। তবে রাশিয়া থেকে এলএনজি নিষিদ্ধ হলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়তে পারে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বিশ্বব্যাপী আমদানির ওপর ১০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ পণ্যের দাম বাড়াবে। বাণিজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির ওপর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ডেকে আনতে পারে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইইউর সঙ্গে ২০৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতিতে ছিল। পরিষেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বৃত্ত থাকলেও ট্রাম্প পণ্য বাণিজ্যে বেশি জোর দিচ্ছেন। বিশেষ করে ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি আমদানিতে তিনি অসন্তুষ্ট। কারণ ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি রপ্তানির পরিমাণ খুবই কম।
জার্মানি ও ইতালির গাড়ি রপ্তানির ওপর বর্তমানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপিত রয়েছে। ট্রাম্প এই হার চার গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইইউর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই শুল্ক হুমকি এড়ানো সম্ভব হতে পারে। তবে ইইউর দেশগুলোতে তেল ও গ্যাস কোম্পানি বেসরকারি হওয়ায়, সরকারগুলো সরাসরি আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে