Views Bangladesh Logo

আমাদের প্রত্যেকটা এমপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হতে চায়

Dr. Ainun  Nishat

ড. আইনুন নিশাতএর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার

মেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ। সাবেক উপাচার্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বাংলাদেশের জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণায় কাজ করেছেন এবং তার লেখা বই দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সম্মেলনে তার লেখা বিভিন্ন গবেষণাপত্র পাঠ করেছেন। সম্প্রতি তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কমিশন, ঢাকার পরিবেশ দূষণ, পরিবেশ ও প্রতিবেশ, নদী সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন ভিউজ বাংলাদেশের সঙ্গে। তিন পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো প্রথম পর্ব। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভিউজ বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক গিরীশ গৈরিক

ভিউজ বাংলাদেশ: অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ সংস্কার কমিশন নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী? কী ধরনের সংস্কার প্রস্তাবনা দিচ্ছেন আর কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে। এতে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায় কী ধরনের প্রভাব পড়ছে?

আইনুন নিশাত: একটা দেশ চলবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং দেশের শাসনব্যবস্থা মানুষের উপকারের জন্য হবে। এতে কিছু নিয়ম মানতে হবে। রাষ্ট্র চলতে গেলে কর ইত্যাদি লাগে। এখন, আমাদের দেশের অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে, আইন বলে কিছু ছিল না। আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ ছিল না। যাদের প্রয়োগ করার কথা তারা এগুলোকে ভাঙতো। এটার জন্য আমাদের যে শাসনব্যবস্থা ছিল, দেশের ব্যবস্থাপনার যে নিয়ম ছিল, এটার মধ্যেও গোলমাল আছে। এটা বদলাতে হবে।

যেমন আমি উদাহরণ দিই, কোর্টে সাক্ষী চোখ বন্ধ করে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। তার কিছু হয় না। আমরা কোর্টে সাক্ষ্যপ্রদানের নিয়ম পেয়েছি ব্রিটিশ শাসন থেকে। কই ব্রিটেনে তো কোর্টে গিয়ে কেউ তো মিথ্যা কথা বলে না। আমেরিকায় কেউ তো মিথ্যা কথা বলে না। কারণটা হচ্ছে তাদের ধর্মগ্রন্থের ওপরে হাত রেখে কথা বলতে হয়। মুসলমান হলে কোরআন, খ্রিষ্টান হলে বাইবেল, হিন্দু হলে গীতা ইত্যাদি- এটা প্রথম কথা।

দ্বিতীয় পাঠ হচ্ছে, ‘কোনো সাক্ষী যদি মিথ্যা কথা বলে এবং এটা যদি পরে প্রমাণিত হয় কিংবা বিচার চলাকালীনও যদি প্রমাণিত হয় সে একটু আগে মিথ্য কথা বলেছে বিচার থামিয়ে রেখে তার বিচার করতে হবে। উকিল বাদী-বিবাদী দুজনকে পরিচালনা করছেন। দুজনের কেউ যদি মিথ্যা কথা শেখায় অথবা মিথ্যা কথাটাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে, ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার জীবন শেষ। এখন আমাদের এখানে উকিল মানে মিথ্যা কথা শেখানোর যন্ত্র। সাক্ষী দেয়া মানে মিথ্যা কথা, কাগজ জাল করে ফেলছে। তাই না? এটার জন্য আমাদের এখানে বিচার হয় না।’

অপরদিকে, একটা ছেলে শিক্ষিত হলে নিজের কথা গুছিয়ে বলতে পারে। স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সেটা নাই। আমরা দেখি, অল্পকিছু ছেলেমেয়ে স্কুলে থাকাকালীন কিছু কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস করে, ডিবেট করে। একটা ক্লাসে ৪০ জনের দুটো সেকশন থাকে। এর মধ্যে ৫-৬টা ছেলে করে বাকিরা কি করছে? মুখস্থ করছে এবং সেটাই সে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিচ্ছে। তার নিজস্ব কোনো চিন্তা নাই। এমনকি ইংরেজি বাক্য রচনা ক্লাসের শিক্ষক যে বাক্যটা যেভাবে রচনা করে দিয়েছেন, ওটাই মুখস্থ লিখছে। তারা তো অজ্ঞ। যখন বহু বছর আগে আমার সন্তানরা ছোট ছিল অনেক সময় জিজ্ঞাসা করতো আব্বু এই অংক পারছি না। আমি তো প্রকৌশলী, অংকে বহু নম্বর পাওয়া। অংকটা বুঝিয়ে দিলাম পরেরদিন এসে বললো আব্বু তোমার অংক হয়নি। বললাম, কেন হয়নি। বললো, শিক্ষক এভাবে করেছে। শিক্ষক যেহেতু এভাবে করেছে সেভাবে যদি না করি তাহলে হলো না। সুতরাং শিক্ষার সঙ্গে জীবনের যে সম্পর্ক, শিক্ষা লাভ করে সে তার জীবনের মানকে উন্নত করবে, স্বাধীন চিন্তা করতে শিখবে সেটা নেই। এখানেও সংস্কার দরকার।

তৃতীয়ত, আমাদের সামাজিক ব্যবহার। আমরা লাইন সহজে মানি না। উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলছি। এটাতো ঠিক না। সামাজিক কতগুলো নিয়মকানুন আছে, সেগুলো মানতে হবে।

আমি আরেকটা উদাহরণ দিই। আমাদের এমপি সাহেবরা কী করেন। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স সেখানে জাতীয় সংসদ পার্লামেন্ট সেটার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে পরিচালনা করে। নতুন আইন তৈরি করে, আইনের পরিমার্জনা করে। তার নিচে বিভাগ-জেলা সেখানে ইলেক্টেডপার্সন আছে। সেখানে যারা ইলেক্টেড হচ্ছেন ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে, তাদের উন্নয়নের ব্যাপারে তারা কাজ করে। জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন আছে। আমাদের ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচিত ব্যক্তি আছে। তাহলে ইউনিয়নের কাজ ইউনিয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সারের বণ্টন ইত্যাদি এসব করবে ইউনিয়ন পরিষদ বা তার চেয়ারম্যান। একেকটা ইউনিয়নে ৯টা ওয়ার্ড আছে। তার মানে ৪-৫শ লোকের একটা ইউনিট আছে। সব ইউনিয়ন করবে তা না। আইনে যেগুলো ইউনিয়ন করতে পারে, সেগুলো ইউনিয়ন করবে। উপজেলা তার বড় পরিধিতে করতে পারে। জেলা পরিষদ করতে পারে আরও বড় করে। আর জাতীয় সংসদ করবে পুরো দেশের জন্য তাদের বহির্বিশ্বে আইনসভা বলা হয়। তারা আইন-নিয়মকানুন তৈরি করবে।

আমাদের প্রত্যেকটা এমপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হতে চায়। প্রত্যেকটা এমপি উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে মারামারি করে। কারণ বিভিন্ন দ্রব্য বিতরণ হয় উপজেলায়। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের এমপির প্রতিনিধি কেন স্থানীয় পর্যায়ে থাকবে? যিনি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তার জবাবদিহি থাকবে জনগণের কাছে। তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের জবাবদিহি কেন এমপির কাছে থাকেব? এমপির উপজেলা সম্পর্কে তার মতামত থাকতে পারে; কিন্তু উনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে কেন? এগুলো যতদিন পরিবর্তন না হবে এই সরকার যতই সংস্কার করুক কিছুই হবে না। শাসনব্যবস্থা, দায়িত্ব, অথরিটি কোথায়? এই অথরিটি যদি রাষ্ট্রের তিনশ জন এমপি করেন, সবতো চোরের সর্দার। যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে তারা কেন স্থানীয় পর্যায়ে ঢুকবে? স্থানীয় পর্যায়ের লোকজন তখনই তাবেদার হয়ে যায় তাদের। প্রতিটি খাতে এই সমস্যা। কাজেই এই সংস্কারগুলো না হলে কিছু হবে না। অথরিটিটা ঠিক করতে হবে। এটা ঠিক না করে নির্বাচন করা মানেই হচ্ছে একজন চোরের জায়গায় আরেকজন চোর আসা। তাই তো চাচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের এখানে যারা রাজনীতি করেন, তারা জানেন না তারা কেন রাজনীতি করেন।

আমি ৩০-৪০ বছর আগে দেখেছি ইলেকশন ক্যাম্পেইনে এই কথা বলতে- ‘আমাদের সেবা করার সুযোগ দিন।’ এবং বহু রাজনীতিবিদের কিছুই ছিল না। বরং যেটুকু পয়সা পেত তা বিতরণ করে দিত। তুমি বড় লোক হতে চাও ব্যবসা কর; কিন্তু জনগণের প্রতিনিধি হয়ে কেন তুমি এ অপকর্ম করবে? এই চিন্তার পরিবর্তনটা আমি মনে করি সংস্কারের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এ সংস্কার হলে তারপর দেখা যাবে কী হয়। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে আমাদের দেশ এবং যারা কর্তাব্যক্তি, যারা সিদ্ধান্ত নেন তারা এ সংস্কার চান না। তারা চান না বলে তারা বলছেন ইলেকশন করতে হবে। আন্দোলন করে সরকার পরিবর্তন যারা করেছেন, তারা তো তাদের এ কথা বলার ম্যান্ডেট দেয়নি। কাজেই অদ্ভুত অদ্ভুত কতগুলো কথা চলছে। আমি এ দেশের নাগরিক। এ দেশে পরিবর্তন হবে না। যে অন্ধকার যুগে আমরা বসবাস করতাম সেই অন্ধকার যুগেই চলতে থাকবে।

ভিউজ বাংলাদেশ: কিন্তু রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন করতে হলে তার সংবিধানে হাত দিতে হয়; কিন্তু সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা কি অন্তর্বর্তী সরকারের আছে?

আইনুন নিশাত: যারা পরিবর্তন করবে রেফারেন্ডম করে নিলেই হলো। সংবিধান যারা করেছিলেন, তারা কোত্থেকে আসলেন? তারা তো পাকিস্তানের ৭০ সালের নির্বাচনে জিতে পাকিস্তানের সংবিধানের ভিত্তিতে ক্ষমতা পেয়েছিল। ১৯৭২ সালে তখন যারা নির্বাচিত ছিলেন, তারা একটা সিদ্ধান্ত নিলেন যে আমরাই একটা গণপরিষদ হলাম। গণপরিষদে হয়ে অ্যাপ্রুভ হয়েছিল তারাই আবার এমপি থেকে গেল। এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে। ওই সংবিধান তো যেদিন আগের প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়েছেন সেদিনই সেটার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যেতে পারে। হ্যাঁ, ওটার আলোকে হবে যদি পুরো জিনিস বদলাতে হয় তাহলে গণভোট করতে হবে। যেটাকে বলা হয় রেফারেন্ডম।

ভিউজ বাংলাদেশ: জনগণ যে প্রত্যাশা নিয়ে গণঅভ্যুত্থান করেছিল, সে প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকার অনেকাংশেই ব্যর্থ হচ্ছে, আপনার অভিমত কী?

আইনুন নিশাত:
আমি এটার ব্যাপারে কনফিউজড। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকারে যারা ক্ষমতা নিয়েছেন এরা তো একটা গ্রুপ থেকে আসেনি। এটা করার জন্য যে মেনিফেস্টো এটাই তো তৈরি হয়নি। যেটার জন্য পরবর্তীতে ছাত্ররা বলছেন একটা ডিক্লারেশন দিতে হবে যে কিসের ভিত্তিতে চলবে এবং সরকার পরিচালনার জন্য যে পরিমাণ অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, সেসব অভিজ্ঞ লোকদের কি সরকারে নেয়া হচ্ছে? এ সরকারের অধিকাংশ লোক হচ্ছে সিভিল সোসাইটি অথবা এনজিওতে কাজ করা লোক। এনজিওদের কার্যকলাপ একরকম। আর সরকার তো এনজিও না, জিও তারা। সুতরাং এখানে অবশ্যই কিছু ঝামেলা হচ্ছে। তার থেকে বড় বিষয় হচ্ছে, আগে যে সরকার ছিল তাদের সঙ্গে যারা তাল মিলিয়ে দেশ চালাতো তারা তো রয়ে গেছে। এখনো সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্র চালানোর ক্ষমতা হচ্ছে সচিবদের। মন্ত্রীদের ক্ষমতা নেই। ক্ষমতায় ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিংয়ের দায় হচ্ছে সচিবদের। এই সচিবরা তো কনফিউজড। সচিবদের মধ্যে আগের সরকারের কিছু প্রিয়ভাজন লোক ছিল। হঠাৎ দেখলাম সাত-আট বছর আগে অবসর নেয়া সিনিয়র সেক্রেটারিদের আবার পদায়ন করা হলো। সমস্যা হচ্ছে, এই সচিবরা সাত বছরে যারা উপরে উঠেছে তাদের চেনেন না। সরকার পরিচালনার জন্য টিম ওয়ার্ক দরকার হয়। তার মধ্যে একজনকে ক্যাপ্টেন করা হলো যে প্লেয়ারদের চিনে না। কাজেই এই সরকার যে কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ক্ষমতা নিয়েছে, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। তারা কি নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেন? জানি না, তাদের মধ্যে কি হয়!

ছোট্ট উদাহরণ দিই: সেদিন খবরের কাগজে পড়লাম সরকার আদেশ দিয়েছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে স্থলবন্দর আছে, ভারত থেকে আমদানিকৃত আলু যেন অত্যন্ত দ্রুত খালাশ করা হয়। একই দিনের কাগজে আছে, বাংলাদেশ থেকে নেপালে আলু রপ্তানি হচ্ছে। এতে কি হলো। একদিকে রপ্তানি করছে, অন্যদিকে আমদানি করছে। একই মন্ত্রণালই-তো করে। আমি মনে করি বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমদানি-রপ্তানির প্রয়োজন হয়। আলু রপ্তানি করছে খুশি হয়েছি। দু-তিন বছর আগে আমরা দেখতাম আলু ওঠার সময় মুন্সীগঞ্জ কিংবা মানিকগঞ্জে ৫-৬ টাকা কেজিতে নেমে আসে। নিজে দেখেছি, মাঠের ওপর স্তূপ করে রেখেছে আলু। সে আনছে না। কারণ আনার খরচ পোষাবে না। এ বছর কিছু ভালো দাম আছে। কাজেই এটার জন্য আবার দুশ-তিনশ টাকা না হয়ে যায় সেটাও নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত। আমদানি যখন শুরু করেছিল ইতোমধ্যে তো নতুন ফসল চলে আসছে- এই জিনিসগুলো কি বুঝার মতো লোক কৃষি মন্ত্রণালয়ে নেই? কৃষি উপদেষ্টা, বাণিজ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা কি এগুলো বুঝেন না?

উপদেষ্টাদের থেকে আমি বেশি দোষ দিব আমলাদের, যারা এই মন্ত্রণালয়গুলো চালায়। কারণ এখনো ক্ষমতা তাদের হাতে। কাজেই বর্তমান সরকার এরা সবাই সৎ লোক এটা ভালো জিনিস। জ্ঞানী-গুণী পণ্ডিত মানুষ। কিন্তু শুধু পাণ্ডিত্য থাকলেই হবে না। তার সঙ্গে রাষ্ট্র চালনোর জন্য আরও অতিরিক্ত কিছু প্রয়োজন, সেটা তাদের নাই।

(চলবে)

শ্রুতলিখন: শাহাদাত হোসেন তৌহিদ

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ