বান্দরবানে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট ফের সক্রিয়
বান্দরবানে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই জেলা সদরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। মোটরসাইকেল চুরি করে ঘটনাস্থলে যোগাযোগের জন্য দেয়ালে লিখে রেখে যান মোবাইল নাম্বারও। তাদের চাহিতামতো চাঁদা বা মুক্তিপণ দিলেই পাওয়া যাচ্ছে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল। চোর সিন্ডিকেট ভিন্ন কৌশলে মোটরসাইকেলের মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বান্দরবান জেলায় শতাধিকের বেশি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। তার মধ্যে জেলা সদরে সবচেয়ে বেশি। চলতি মাসেই জেলা শহরে ১৭টি এবং সদর উপজেলায় ৩৫টি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। তার মধ্যে শুধু মেম্বার পাড়া থেকে গত সপ্তাহে চুরি হয়েছে ৫টি মোটরসাইকেল। আর এ বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলায় মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে ২৮৭টি। এদিকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেলগুলো চোরদের চাহিদামতো অর্থ দিলেই পাওয়া যাচ্ছে পুকুরে, পাহাড়ের ঢালুতে জঙ্গলে এবং পরিত্যক্ত বিভিন্ন জায়গায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একের পর এক মোটরসাইকেল চুরি হলেও সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের কাউকেই ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মোটরসাইকেল চুরি করে যোগাযোগের জন্য লিখে রাখা ০১৮৯১৭৮৮২২৮ মোবাইল নম্বরেই অর্থের লেনদেন হচ্ছে এবং একই মোবাইল নম্বরটি সারাক্ষণ সচল থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগীরা। মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন পাহাড়ি বাঙালি যুবকও জড়িত রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোর সিন্ডিকেট চক্রটি শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ক্ষতিগ্রস্ত চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের মালিক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, পৌর এলাকার মেম্বারপাড়ার ভবনের গেটের তালা ভেঙে পার্কিং থেকে ২টি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় চোর। দেয়ালে লিখে রেখে যাওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে দুটি গাড়ির জন্য ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। দাবিকৃত অর্থ দেয়ার পর চোর সিন্ডিকেটের তথ্য মোতাবেক বান্দরবান শহরের দেওয়ানজি পুকুরের পানি থেকে ১টি এবং অন্যটি সাতকানিয়া কেরানীহাট এলাকা থেকে পাওয়া যায়। অভিনব কৌশলে মোটরসাইকেল চুরি করে সিন্ডিকেট চোর চক্রটি গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, মোটরসাইকেল চোরের সিন্ডিকেট চক্রটি ধরতে কাজ করছে পুলিশ। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। সিন্ডিকেট চক্রটি ধরতে পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে