আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পদক দেয়ার ব্যাখ্যা দিলেন ফারুকী
ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ছাত্রলীগের বেধড়ক মারধরে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০২৫-এ ভূষিত হচ্ছেন আবরার ফাহাদ। সোমবার (৩ মার্চ) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানানোর পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
এবার এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি আবরার ফাহাদকে ‘সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড’ বলে অভিহিত করেছেন।
ফারুকী পোস্টে লিখেছেন, এবারের স্বাধীনতা পদক একুশে পদকের মতোই অনন্য হবে। আবরার ফাহাদের কথাটা যে কোনোভাবেই হোক সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর অনেক সাংবাদিক ভাই-বোন এর সত্যতা জানতে চেয়েছেন। তাদের সবার জন্য উত্তর- একটু অপেক্ষা করেন, পুরা তালিকাই জানতে পারবেন। অসাধারণ সব নাম দেখতে পাবেন।
তিনি আরও লিখেছেন, এবার আসি এই পোস্ট লেখার আসল কারণে। আবরার ফাহাদের নাম সামনে আসায় সব স্তরের মানুষের উচ্ছ্বসিত প্রশংসার পাশাপাশি একটা নির্দিষ্ট দলের লোকদের অবুঝ প্রশ্ন দেখতে পাচ্ছি, ‘আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পদক কী বিবেচনায় দেওয়া হবে?’ কী বিবেচনায় দেওয়া উচিত সেটা ব্যাখ্যা না করে আমি বলতে চাই, কোন ক্যাটাগরিতে দেওয়া উচিত। তাহলেই কেনো দেওয়া উচিতের উত্তর পাওয়া যাবে। আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিবেচনা-আবরার ফাহাদের ক্যাটাগরি হওয়া উচিত ‘মুক্তিযুদ্ধ’! মুক্তিযুদ্ধের ফল স্বাধীনতা। স্বাধীনতার প্রধান শর্ত সার্বভৌমত্ব। আর সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড আবরার ফাহাদ।
সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আবরার ফাহাদ একটা সিম্বল, যার শক্তি যদি আপনি অনুমান না করতে পারেন, তাহলে বলবো জুলাইতে ফিরে যান। গিয়ে তরুণবক্ষে কান পাতেন। যার নিঃশ্বাস শুনবেন তার নামই আবরার ফাহাদ। ’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। দায়ের হয় হত্যা মামলা। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এরমধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে