ফ্যাসিবাদী শাসক জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় পলায়নে বাধ্য হয়েছেন: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কারণে ফ্যাসিবাদী শাসক পলায়নে বাধ্য হয়েছেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব নিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের যে সংকটের সম্মুখীন ছিল, তার সমাধান করার প্রয়াস। তবে, শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন যথেষ্ট নয়। তার জন্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করা, গণতন্ত্রের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর একত্রিত থাকা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়নে বাধ্য করেছে। এই ঐক্য বজায় রেখে, ঐক্যের চেতনায় এগিয়ে যেতে হবে। এটি আমাদের অঙ্গীকারই নয়, আমাদের দায়।’

তিনি বলেন, ‘যারা প্রাণ দিয়েছেন, যারা লড়াই করেছেন, যারা গত জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহত হয়েছেন, তাদের জন্য আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। আরও, গত ১৬ বছর ধরে যেসব মানুষের বিরুদ্ধে নিপীড়ন-জুলুম চালানো হয়েছে এবং ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, সকলের অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে, তাদের সবার কাছে আমাদের দায় রয়েছে।’

সংস্কারের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংলাপের মাধ্যমে কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তবে, এই অগ্রগতি ধরে রাখা এবং বিকশিত করা না গেলে, তা আমাদের জন্য এক বড় সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে। আমাদের একত্রিতভাবে এই অর্জন টিকিয়ে রাখতে হবে, যা শুধুমাত্র আমাদের জন্য নয়, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্যও একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।’

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও মনে করেন, সবাই একমত হয়ে দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের ভূমিকা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, ‘তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে যুক্ত ছিল এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ও অংশগ্রহণ করেছে।’

বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।