কুমিল্লায় গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে, বাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে এলাকাবাসী
কুমিল্লা জেলায় গোমতী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে রবিবার (২৫ আগষ্ট) বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর ফলে লোকালয়ে প্রবেশ করছে নদীর পানি। এদিকে নদীর তীব্র স্রোতে কখন বাঁধ ভেঙে যায়, সেই আতঙ্কে দিন পার করছেন আরও ৪টি এলাকার মানুষেরা।
দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার খায়রুল ইসলাম খায়ের মেম্বার জানান, এসব এলাকাগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকাবাসীরা নিজ উদ্যোগে বাঁধ রক্ষায় মাটি ও বালুর বস্তা দিয়েছে। বাকিটা আল্লাহর হাতে।
ময়নামতি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিউল্লাহ জানান, রবিবার ভোর থেকেই গোমতীর পশ্চিমপাড় অংশের ময়নামতি ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া ও মীরপুর এলাকায় বাঁধের মাটি সরে যেতে থাকে। প্রায় তিন হাজার এলাকাবাসীর আপ্রাণ চেষ্টায় ওই দুটি স্থানে বাঁধকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।
এদিকে নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ষোলনল, পীরযাত্রাপুর ,বুড়িচং সদর, বাকশীমুল ও রাজাপুর ইউনিয়নের এলাকাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোঃ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোমতী নদীর পানি বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবেশ করছে। এতে করে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দূর্গতদের জন্য সামগ্রী আসছে। কিন্তু এসব সামগ্রী পরিবহনের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক নৌকা ও ট্রলার না থাকায় বন্যাকবলিত এলাকায় তা পৌঁছানো যাচ্ছে না।
জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, বন্যায় এ জেলার সাড়ে সাত লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদেরকে চিকিৎসা দিচ্ছে ২২৪টি মেডিকেল টিম।
এদিকে কুমিল্লার অন্যান্য উপজেলায় ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চললেও মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার পানিবন্দি মানুষেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাদের অভিযোগ, এ দুই উপজেলার অবস্থান একটু ভেতরে হওয়ায় এবং বন্যার ভয়াবহতার প্রচার না থাকায় কেউ তাদের উদ্ধার করতে আসছে না, তারা ত্রাণও পাচ্ছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে শুরু করে কয়েকটি স্থানে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সেখানকার বানভাসি প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে