শক্ত অবস্থানে নারী ফুটবলাররা, গণ অবসরের হুমকি
কোচ পিটার জেমস বাটলারের অধীনে আর খেলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নারী ফুটবলাররা। কোচের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। দাবি না মানলে গণ অবসরের যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন সাবিনারা।
গালাগাল করা, বডি শেমিং, মানসিক নির্যাতনসহ কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন সাবিনা-মণিকারা।
বৃহস্পতিবার ‘নারী জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ পিটার বাটলার ইস্যু নিয়ে আমাদের অবস্থান, প্রশ্ন এবং যত অভিযোগ’ শিরোনামে দুইবারের সাফ জয়ী অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, রূপনা চাকমা, মাতসুশিমা সুমাইয়াসহ মোট ১৮ ফুটবলার যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, একটা ক্রান্তিকালে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষ জেনেছে কতটা প্রতিকূল পথ পাড়ি দিয়ে আমরা টানা দুইবার দেশের মানুষের জন্য সাফ শিরোপা এনে দিয়েছি। এই পর্যায়ে আসতে আমাদের কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে, এ সব কিছুই আপনাদের জানা। গত বছর অক্টোবরে নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকবার প্রমাণ দিয়েছি, আমরাই সেরা। সেই টুর্নামেন্ট চলাবস্থায় কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে দলের খেলোয়াড়দের দূরত্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। ইচ্ছেমতো একাদশ গড়ে তিনি দলকে ডোবাতে চেয়েছিলেন।
দেশের জন্য সবটুকু নিংড়ে দিয়েও বাফুফের কাছ থেকে প্রতিদান না পাওয়ার অভিযোগও তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়, সাফে আমরা যদি ব্যর্থ হই, বাফুফে কর্তারা এবং দেশের মানুষের কাছে আমরা ভিলেন হয়ে যেতাম। ওই ম্যাচেই আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত। এটা বুঝেও আমরা ঝুঁকি নিয়েছিলাম দেশের হয়ে লড়াই করার জন্য। দেশের জন্য আমাদের এই লড়াই ও আবেগ, ভালোবাসার মূল্য ফুটবল ফেডারেশন থেকে আশা করেছিলাম। সেটা হয়নি। বরং সাফ থেকে ফেরার পর যা হলো, তার জন্য আমরা মোটেই প্ৰস্তুত ছিলাম না। এই বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্তে মেয়েদের দাবি-দাওয়াকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে।
বর্তমান তৈরি হওয়া জটিলতা নিরসনের জন্য বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নারী ফুটবলাররা। তারা বলেন, আমরা আশা করছি, বাফুফের মাননীয় সভাপতি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা পিটারের অধীনে কোনো ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রাখে না। তারপরও যদি সেরকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং পিটার বাটলারকেই রেখে দেয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব। ভেবে নিব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।
বর্তমানে বাফুফে সভাপতি লন্ডনে রয়েছেন।
নারী ফুটবলের অচলাবস্থার ব্যাপারে কোচ বাটলার কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। ছুটি কাটিয়ে গত সোমবার ঢাকায় ফিরেন এই কোচ।
নারী ফুটবলারদের নিয়ে মিটিং করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাড়া দেননি সাবিনারা। অনুশীলন ক্যাম্পেও যোগ দেননি সিনিয়র ফুটবলাররা। এরপর থেকেই উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে ফুটবল অঙ্গনে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে