এনবিআরকে প্রতিমন্ত্রী পলক
লাখ টাকার অনিবন্ধিত ফোন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
লাখ টাকা দামের অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরে আয়োজিত ‘দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এ নির্দেশনা দেন তিনি। সেমিনারটি আয়োজন করে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিকদের সংগঠন টেলিকম এন্ড টেকনোলজি রিপোর্টারস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি)। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি ও ভিউজ বাংলাদেশের সম্পাদক রাশেদ মেহেদী।
প্রতি বছর দেশে প্রায় ৫ কোটি মোবাইল ফোনের চাহিদা আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যাক ৩ কোটি মোবাইল ফোন বাংলাদেশে সংযোজন বা উৎপাদন করতে পেরেছিলাম। বিদেশ থেকে আমদানি হয়েছিল, আবার কিছু অবৈধ পথে এসেছে। ২০২৩-২৪ সালে এসে উৎপাদনের সংখ্যাটা কমে গেছে। কিন্তু মোবাইল ব্যবহারকীর সংখ্যা কিন্তু কমছে না।
মোবাইল ফোন উৎপাদনকারীদের দাবির বিষয়ে পলক বলেন, আপনাদের দাবির সাথে একমত পোষণ করছি। বিটিআরসি আপনাদের ইনফরমেশন এবং টেকনোলজি সাপোর্ট দেবে। বিটিআরসি এবং ডিবি প্রধান আশ্বস্ত করেছেন তার গোয়েন্দা বিভাগ পুলিশের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা দেবে। ভোক্তা অধিদপ্তরও আপনাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে কয়েকটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মোবাইলের রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম এবং কাস্টমস থেকে ট্যাক্স পেইড আমদানিকৃত মোবাইলে ফোনের ডেটাবেজ যেন বিটিআরসিতে সংরক্ষিত থাকে। যাতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোক্তা অধিদপ্তর যখনই অভিযানে যাবে তখন যেন ইনস্ট্যান্ট রিয়েল টাইম ভেরিফাই করতে পারে, যাতে করে তারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়।
দ্বিতীয়ত, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন থেকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন করছি। আমরা নিয়ন্ত্রণের থেকে সম্প্রসারণের দিকে নজর দিচ্ছি যাতে করে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়, রপ্তানি আয় বাড়ানো যায়। আইনে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং মোবাইল ফোনের বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল। আইনে সংযোজন করে যাতে অবৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীদের প্রতিরোধ করা যায়, নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া যায় তার জন্য চেষ্টা করছি।
তৃতীয়ত, এনইআইআর সিস্টেম আপডেট করবো। এটা এখন একটিভ আছে। সেটা যাতে কোনো নাগরিক নিজেরা চেক করতে পারে সেটি চালু আছে। আমরা মিডিয়াতে প্রচার করব।
তিনি আরও বলেন, সচেতনতামূলক বার্তা দেব যে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য তারা রেজিস্ট্রেশন করবেন। বিদেশ থেকে কোনো ফোন নিয়ে আসলে যেন রেজ্রিস্টেশন করেন। আর তা না হলে আমরা এনবিআরকে অনুরোধ করব, ডাটাবেজ দেখে যে ফোনের দাম দুই লাখ, এক লাখ, ৫০ হাজার; তারা নিশ্চয়ই ট্যাক্স দেয়ার যোগ্যতা রাখে। তাহলে এনবিআর সেই ডাটাবেজে ঢুকে অনিবন্ধিত ফোন ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা ব্লক করব না কিন্তু এনবিআরকে ডাটাবেইজ ব্যবহারের সুবিধা দেব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি আমরা রেগুলোর মার্কেট মনিটরিং করতে চাই। ডিবি প্রধানকে অনুরোধ করব, অবৈধ হ্যান্ডসেট যেগুলো চোরাপথে বা গ্রে চ্যানেলে এসেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে যেন একটা অভিযান শুরু করেন।
টুজি এবং ফোরজি ফোনের ইন্টিগ্রেশনের দাবির বিষয়ে পলক বলেন, সেটা আমরা বিবেচনা করব। তবে আমরা চাই স্মার্টফোন পেনিট্রেশন বাড়াতে। এক্ষেত্রে সহযোগিতা থাকবে।
তিনি বলেন, আজকে মোবাইল সিম ১৯ কোটি। যখনই প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৮ সালে মোবাইলের লাইসেন্স ওপেন করে দিলেন, আজকে তার ফলে ১৯ কোটি গ্রাহক। সরকারের মালিকানাধীন টেলিটকে ১৮ থেকে ২২ লাখের বেশি নয়। তাহলে এই ১৯ কোটি গ্রাহক কারা; গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক- প্রাইভেট কোম্পানি।
এ ছাড়াও মোবাইল উৎপাদনকারীদের পক্ষ থেকে কর ইনসেনটিভ প্রদান, চোরাই পথে ফোন আসা বন্ধকরার দাবি করা হয়। তাদের দাবির বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীকে দেবেন বলে জানান টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে