বিচার বিভাগে যোগ্যতা ও সততার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি
বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে গত ১৫ বছরে মারাত্মকভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমরা বিচারিক (নিম্ন) আদালতের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য এরই মধ্যে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে বিচার বিভাগে দুঃশাসনের নজির স্থাপন করা হয়েছে। আমি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে আইনগত সংস্কার করে উপযুক্ত জায়গায় উপযুক্ত ব্যক্তিকে পদায়ন করে আমার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন ব্যাপারে যা যা করার আছে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে করা সব হয়রানিমূলক মামলা আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারাই এক্ষেত্রে অপরাধী হবে তাদের বিচার এই ট্রাইব্যুনালে হবে।
আমি আইন উপদেষ্টা হয়েছি। আমি মনে করি এটা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব। কীভাবে মিসক্যারেজ অব জাস্টিস হয়েছে, কীভাবে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে আমি জানি। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করবো। অধস্তন আদালতে আমরা প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি। রিপ্লেস করতে একটু সময় লাগবে কিন্তু এরই মধ্যে নির্দেশনা পৌঁছে গেছে।
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়কে যে সহযোগিতা করতে হয়, সেটা আমরা সম্পন্ন করেছি। এরইমধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা নিয়োগ পেয়েছেন। আমরা এমন একজন প্রধান বিচারপতি পেয়েছি, যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছেন। আমরা যোগ্যতা ও সততার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আগে যারা প্রধান আগে যারা প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তাদের সিভি, আর বর্তমান প্রধান বিচারপতির সিভি তুলনা করলে বুঝতে পারবেন, আমরা কীসের ওপর জোর দিচ্ছি।
সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সব বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে অবস্থিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব বিবরণী দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছি।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হলে জাতির কাছে আমরা দায়ী থাকব। এই বিচার না হলে জাতির কাছে আমরা দায়ী থাকব। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, এমন একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে কীভাবে প্রহসন করা হয়। জনগণের টাকা যারা বিদেশে নিয়ে গেছেন, তাদের অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করা ও তাদের বিচারের সম্মুখীন করার জন্য যতটুকু করা দরকার, অবশ্যই আমরা করব।
আমি সাইবার সিকিউরিটি আইনের আসামি ছিলাম, তাই এই আইনকে অবশ্যই পছন্দ করি না। এই আইনের সংস্কার প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে করা বিতর্কিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন বাতিল করা হবে। যদিও এটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয়। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা আছেন। আমি যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়টা তাকে বলবো। খুব দ্রুত এটা বাতিল করা হবে আশা করি।
ড. আসিফ নজরুল: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও রাজনীতি-বিশ্লেষক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে