Views Bangladesh Logo

গ্রীষ্মকালে যেসব খাবার শরীরকে সতেজ রাখবে

চলে এসেছে গ্রীষ্মকাল, বাড়ছে তাপমাত্রা। তাপ থেকে শরীরকে রক্ষায় যেমন থাকতে হবে শীতল পরিবেশে তেমন খেতে হবে শরীরকে সতেজ রাখে এমন খাবার। অনেকেই মনে করেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলেই হয়তো এই গরমে সুস্থ থাকা সম্ভব। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, কেবল আরামদায়ক পরিবেশেই নয়, শরীরকে সুস্থ রাখতে গ্রহণ করতে হবে মৌসুমি ফল, সবজি এবং পরিবেশ উপযোগী রান্না করা খাবার।

বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, পানির পরিমাণ বেশি আছে, এ সময় এমন খাদ্যই গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে মৌসুমি ফল খেতে হবে। তরমুজ, আপেল, শসা, লাউ, ঝিজ্ঞা, পটল, ধুন্দল, চিচিজ্ঞা, গাজর, কাঁচা পেঁপে, পালংশাক, টমেটো, যবের ছাতু, দই এসব গ্রহণ করা অত্যন্ত উপকারী।

তিনি বলেন, একটি আপেলে ৮৬ শতাংশ পানি থাকে। পরিমাণমতো পানিতে তিন চিমটি লবণ দিয়ে ঘণ্টাখানেক ভিজিয়ে রেখে আপেল খেলে গ্রীষ্মকালীন অনেক অসুখ বিসুখ কম হবে। গরমকালে সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তিনি জানান, শসাতে রয়েছে প্রচুর পানি। এতে ক্যালোরি এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি। শসা শরীরের ওজন কমানোসহ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্যকারী একটি খাদ্য। শুধু তাই নয় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে উপযোগী এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় শসা।

যবের ছাতু সম্পর্কে তিনি বলেন, যবের ছাতু অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর খাদ্য। গ্রীষ্মকালে ছাতুর পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। এমন কি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং দেহের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে।

দই সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ এই খাবার হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। পেটের প্রদাহ কমায়, হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। গরমকালে ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই নিয়ম করে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও পাতলা করে রান্না করা আম টক ডাল, সজনে ডাল শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

এক প্রশ্নের উত্তরে এই চিকিৎসক বলেন, ডাবের পানি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে ডাবের পানি এবং সেই সঙ্গে এটি হজমে সহায়ক শক্তি। তাই সুস্থ থাকতে অবশ্যই ডাবের পানি খেতে হবে।

এ সময় তিনি পর্যাপ্ত পানি পান করতে বলেন। একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দিনে অত্যন্ত ২.৫-৩ লিটার আর পূর্ণবয়োস্ক পুরুষের ৩.৫-৫ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন।
তবে কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। এই গরমে লেবু বা ফলের শরবত খাওয়া খুবই উপকারী।

পাশাপাশি মৌসুমি ফলের মধ্যে কাঁচা আম খুবই ভালো পানিশূন্যতা দূর করার জন্য। কাঁচা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। রয়েছে ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়ামও আছে যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। বাঙ্গি একটি খুবই পুষ্টিকর ফল যা খুবই সহজলভ্য এবং তুলনামূলক অন্যান্য ফলের চেয়ে দাম কম। তবে শরীর ঠান্ডা রাখতে বাঙ্গির তুলনা নেই।

এই গরমে আখের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে কার্যকরী। তবে এই পানীয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে খেতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গরমকালে প্রচুর বেল পাওয়া যায়। বেলের শরবত পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে কার্যকরী ফল। বেলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১ এবং বি-২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার। পুদিনা পাতার শরবত শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার শরবত স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর বলে জানান তিনি।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ