শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: আইনমন্ত্রী
বৈশ্বিক মন্দা ও নানামুখী চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরও বলেন, শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় শ্রম সম্পর্ক তৈরির জন্য সরকার সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।
আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নের আলোকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রম ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ৩৫০তম অধিবেশনে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে সরকারের এক প্রেস নোটে এসব জানানো হয়েছে।
অধিবেশনে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত রোডম্যাপের (২০২১-২৬) আলোকে আইনগত সংস্কার, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন, শ্রমসংক্রান্ত পরিদর্শন এবং শ্রমিকদের অন্যান্য অধিকার– এই ৪টি ক্ষেত্রের অগ্রগতি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কারখানা পরিদর্শকের পদ আড়াইগুণ বৃদ্ধি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিদর্শন মডিউল চালু করা, পরিদর্শকদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে কারখানা ও স্থাপনা পরিদর্শনে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। গত বছরের (২০২৩) শেষ ছয় মাসে ২০ হাজারেরও বেশি পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়াও ইপিজেডগুলোতে নিজস্ব উন্নত পরিদর্শন ব্যবস্থা থাকা স্বত্বেও মানোন্নয়নের লক্ষে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরও পরিদর্শন শুরু করেছে। ছয়টি নতুন শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার ফলে বর্তমানে ১৩টি শ্রম আদালত কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সেল চালু করা হয়েছে যা অদ্যাবধি প্রাপ্ত ৯০%-এর বেশি সালিশ আবেদনের নিষ্পত্তি করেছে।’
এ ছাড়াও শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিযোগ সহজে দায়ের করার জন্য সরকার কর্তৃক চালু করা হেল্পলাইন সফলভাবে কাজ করেছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধের লক্ষে সরকার গত তিন বছরে প্রায় ৩৬ হাজার শ্রমিক, ব্যবস্থাপক, মালিক, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী, আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। সরকার এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সালিশি অথবা বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’
তাছাড়াও প্রস্তাবিত বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন বিলে বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে এবং নৌ পরিবহন খাতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও পরিচালনা সহজীকরণ, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে আপিল আবেদন সহজীকরণ সংক্রান্ত বিধান যুক্ত করার কথাও জানান আইনমন্ত্রী।
তিনি প্রস্তাবিত সংশোধনী বিলে আইএলওর বিভিন্ন কনভেনশনের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে বলে অধিবেশনকে অবহিত করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে