সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব চেয়েছেন হাইকোর্ট
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল ও প্রকাশ সংক্রান্ত বিধিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে ৩ মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (২ জুলাই) এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুবির নন্দী দাস। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক এবং দুদকের আইনজীবী ফজলুল হক।
রুলে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা- ১৯৭৯ এর ১৩ বিধি অনুসারে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল ও প্রকাশ করতে কেন নির্দশ দেওয়া হবে না এবং অবৈধ সম্পদ অর্জন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে একটি গাইডলাইন তৈরির কেন নিদের্দশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১০ জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী সুবির নন্দী দাস আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ আদেশের আগে শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি উন্নয়ন ও সুশাসনের অন্তরায়; তাই যেকোনো মূল্যে এটি থামাতে হবে। শুধু সরকার নয়, জনগণকেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে এবং আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এর বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।
প্রতি বছর সরকারি চাকরিজীবীদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আরও বলেন, দুর্নীতি বন্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে হারে দুর্নীতির খবর দেখা যাচ্ছে, তা বিস্ময়কর।
আদালত বলেন, সোনার মানুষ তৈরি করলে সোনার দেশ গড়া যাবে। সরকার একাই এটি রোধ করতে পারবে তা নয়, সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শুধু বড় বড় কথা বললে হবে না, কাজ করে দেখাতে হবে।
এর আগে, সোমবার দুর্নীতিরোধে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসেব আইন অনুযায়ী দাখিল ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করেন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়।
এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইনে উল্লেখিত যথাযথ নিয়মে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেছি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে