সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদবিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে
একটি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের সহায়ক শক্তি হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কাজেই সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কিন্তু আমাদের দেশে এক শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার মাঝে সততা ও নৈতিকতার প্রচণ্ড অভাব পরিলক্ষিত হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিকতা উন্নয়নের জন্য তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। প্রচলিত নিয়মে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি বছর সম্পত্তির হিসাব বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও এই বাধ্যবাধকতা অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছে। তারা সঠিকভাবে সম্পদের হিসাব দেন না। তারপরও এটি একটি আইনি পদক্ষেপ।
সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদবিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা পরিহার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমি মনে করি, এ ধরনের একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলে তা আমাদের জন্য আত্মঘাতী হবে। এমনিতেই এক শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তারপর তাদের যদি এমন দায়মুক্তি দেয়া হয়, তাহলে তাদের মাঝে দুর্নীতিতে যুক্ত হবার প্রবণতা আরও বেড়ে যেতে পারে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিতে লিপ্ত রয়েছেন এক শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। তারা নানাভাবে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছেন। আর রাজনীতিবিদ যারা দুর্নীতি করেন তারাও সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তা করে থাকেন। প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা যদি সৎ এবং তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতেন, তাহলে দেশের অবস্থা আরও ভালো হতো, দুর্নীতি কমে আসতো। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতো। একই সঙ্গে বিদ্যমান সম্পদ বৈষম্য অনেকটাই দূর হতো। সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে সবাই দুর্নীতিবাজ বা খারাপ তা নয়। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন অত্যন্ত সৎ এবং দায়িত্বের প্রতি আন্তরিক; কিন্তু তারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে এক সময় নিশ্চুপ হয়ে যান। সরকারি কর্মকর্তারা যদি নিজে দুর্নীতি না করেন এবং অন্যকে দুর্নীতির ব্যাপারে সহায়তা না করেন, তাহলে দুর্নীতির মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসত।
যারা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হবেন, তাদের প্রত্যেকের নিয়মিতভাবে সম্পদবিবরণী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিলের বাধ্যবাধকতা থাকা প্রয়োজন। প্রতি বছর না হলেও অন্তত তিন বছর অন্তর এই বিবরণী দাখিল করতে হবে। সম্পদবিবরণীতে যাতে কোনো ভুল না থাকে এবং কোনো কিছু গোপন করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি বছর একজন সরকারি কর্মকর্তা যে বেতন-ভাতা পান, তা আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়; কিন্তু তিনি নানাভাবে যে সম্পদ অর্জন করেন তার কোনো বর্ণনা আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ করা হয় না। তারা অর্জিত সম্পদ গোপন করে থাকেন অথবা ভুল তথ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করে থাকেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার বেতন-ভাতা দেয়া হয় সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের অর্থ থেকে। কাজেই তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানার অধিকার সাধারণ মানুষের নিশ্চিতভাবেই রয়েছে।
একজন সরকারি কর্মকর্তার পদোন্নতি বা নিয়োগ-বদলির সময় অর্জিত সম্পদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা দরকার। দুর্নীতিবাজরা ‘দেশটাকে ফুকলা’ করে ছাড়ছে। সরকারি কর্মকর্তারা যখন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ বা সম্পদ অর্জন করেন তারা সেই সম্পদ বা অর্থ দেশে রাখেন না। নিরাপত্তার কারণে তারা অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ দেশের বাইরে পাচার করে দেন। আগে বিদেশি শাসক চক্র বাংলাদেশ থেকে সম্পদ লুটে নিতো। আর এখন আমাদের দেশের এক শ্রেণির মানুষ অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে তা বিদেশে পাচার করছেন। যে সম্পদ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যয়িত হতে পারতো, তা অন্য দেশের উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে।
আমার বন্ধু এক অর্থনীতিবিদ আমাকে বলেছিলেন, যদি সরকারি কর্মকর্তারা ঘুষ গ্রহণ করেন এটা ভালো। কারণ ঘুষটা সমাজের জন্য ভালো। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনুকূল। প্রত্যেকটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাথমিক পর্যায়ে ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার লক্ষ্য করা যায়। ঘুষ সরকারি কর্মকর্তাদের কাজেই উদ্দীপনা বাড়ায়। তিনি যুক্তি দেখান, হয়তো আমি বিদেশ থেকে ১০০ কোটি টাকার মাল আমদানি করলাম; কিন্তু বন্দরে ৫০ কোটি টাকার মালামাল আমদানি করা হয়েছে ঘোষণা দিয়ে কাস্টমস ডিউটি দেয়া হলো। এই অর্থ, যা ট্যাক্স ফাঁকি অর্জন করা হলো তা দেশের উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহৃত হবে। যদি ১০০ কোটি টাকার পণ্যের ওপর ট্যাক্স দেয়া হতো তাহলে সরকার বাড়তি কিছু অর্থ পেতো; কিন্তু সরকার যে অর্থ পায় তা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় না। এই অর্থ নানাভাবে অপচয় করা হয়; কিন্তু ৫০ কোটি টাকার পণ্যের ওপর ট্যাক্স না দিয়ে যে অর্থ একজন আমদানিকারক সাশ্রয় করলেন তার উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। একজন উদ্যোক্তা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যে অর্থ সাশ্রয় করলেন তা দিয়ে নতুন নতুন কারখানা তৈরি করবেন বা বিদ্যমান কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াবেন। এতে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কর ফাঁকি দেবার ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তার পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যয় সাশ্রয় হবে। এতে স্থানীয় বাজারের ভোক্তারা তুলনামূলক কম মূল্যে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। আন্তর্জাতিক বাজারেও পণ্যটি তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করতে পারবেন। বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ কর ফাঁকির মাধ্যমে যে অর্থ সাশ্রয় হবে তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এতে ব্যক্তি খাতের সম্ভাবনা বিকশিত হবার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমার বন্ধু অর্থনীতিবিদের বক্তব্য বিবেচনার দাবি রাখে।
কিন্তু আমাদের দেশে যারা মাধ্যমে অর্থবিত্ত অর্জন করেন তারা সেই অর্থ দেশের রাখেন না বা দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করেন না। এই টাকা তারা বিদেশে পাচার করে দেন। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে মার্কিন ডলারের রূপান্তর করে বিদেশে পাচার করে থাকেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ক্ষেত্রে যে সংকট চলছে তার পেছনে এক শ্রেণির মানুষের অর্থ পাচার বিশেষ অবদান রাখছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। আমাদের দেশে যারা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করছেন, তারা অত্যন্ত ক্ষমতাবান। তারা রাজনৈতিক দলের সাহচর্যে থাকেন বিধায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রায়শই সম্ভব হয় না। আর যেসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের কর্মদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়মিত সম্পদবিবরণী দেয়ার বিধান অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে চলেছেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সৎ এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করতে হবে। সৎ এবং আন্তরিক কর্মকর্তারা যাতে কর্মক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দ্বারা হয়রানির শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে যারা চাকরি করেন তাদের অনেকেই আছেন যারা সৎভাবে জীবনযাপন করতে চান; কিন্তু তারা যখন দেখেন দুর্নীতিবাজদের কোনো শাস্তি হয়না তখন তারা মানষিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন; কিন্তু কিছু কিছু অসৎ মানুষের কারণে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা মাঝে মাঝেই বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা দুর্নীতিমুক্ত স্বপ্নে সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্তি করেছি রাষ্ট্রীয়ভাবে। আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে চাই। এই প্রত্যয় কখনোই বাস্তবায়িত হবে না যদি আমরা সত্যিকার দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে না পারি। প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আমাদের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সত্যিকার দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ যদি দুর্নীতিমুক্ত না হয় তাহলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যতই অর্জিত হোক না কেনো তা অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে কার্যকর অবদান রাখতে পারবে না। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ যে সকল মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা; কিন্তু সেই অবস্থান থেকে এখনো আমরা অনেকটাই দূরে রয়েছি। যারা জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তাদের প্রতি ৫ বছর পর পর সম্পদবিবরণী দাখিল করতে হয়। এর মাধ্যমে এক ধরনের জবাবদিহি সৃষ্টি হয়। সরকারি কর্মকর্তাদেরও ঠিক তেমনি নিয়মিত সম্পদের বিবরণী দাখিল করা উচিত। দাখিলকৃত সম্পদবিবরণীর আলোকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরণী গ্রহণ করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত।
বাংলাদেশের এক শ্রেণির মানুষ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে তা দিয়ে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি ক্রয় করেছেন। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় আমাদের কনসাল জেনারেলকে নির্দেশনা দেই কানাডার বেগম পাড়ায় যেসব বাংলাদেশিদের বাড়ি রয়েছে তারা কারা। কারণ সেই সময় কানাডার বেগম পাড়া নিয়ে প্রচুর কথাবার্তা হচ্ছিল। নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে কনসাল জেনারেল আমাকে একটি তালিকা দিলেন। সেই তালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের ২৮ জন বাংলাদেশির মধ্যে ৪ জন হচ্ছেন রাজনীতিবিদ এবং অবশিষ্ট ২৪ জন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। এর মধ্যে একাধিক সচিব, পুলিশের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তা রয়েছেন। আগে আমার ধারণা ছিল বেগমপাড়ায় রাজনীতিবিদদেরই বাড়ি রয়েছে; কিন্তু তালিকা প্রাপ্তির পর আমার সেই ধারনা ভুল বলে প্রতীয়মান হলো।
কোনো কোনো মন্ত্রণালয় আমার নিকট এই তালিকা পাবার জন্য অনুরোধ করে; কিন্তু আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বললেন, স্যার আপনি এই তালিকা কাউকে দিতে পারেন না। কারণ এই তালিকা ভেরিফায়েড নয়। কাজেই এই তালিকা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। কানাডা সরকারকে এ ধরনের তালিকা প্রদানের ব্যাপারে অনুরোধ করা যেত; কিন্তু কানাডা সরকার প্রাইভেসি অ্যাক্টের কারণে এ ধরনের তালিকা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করে না। তবে বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করলে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে আনতে পারে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকারি প্রচেষ্টার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়।
আমাদের দেশে একটি প্রবণতা সব সময়ই পরিলক্ষিত হয়, যারা দুর্নীতিবাজ তাদেরই নানাভাবে সুরক্ষা দেবার চেষ্টা করা হয়। যারা সৎ এবং স্বচ্ছ তারা তেমন কোনো সুরক্ষা পান না। কানাডা সরকার সম্প্রতি একটি আইন করেছে, যেসব বিদেশি নাগরিক কানাডার ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ না করে সম্পদ ক্রয় করবেন তাদের সেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। এ ধরনের আইন প্রণয়ন এবং সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা হলে অর্থ পাচার অনেকটাই কমে আসবে বলে আমি মনে করি।
বাজেট আসছে। এই বাজেটে কিছু ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ থাকা দরকার। যেমন যে কোনো পেমেন্ট যদি ২০ হাজার টাকার বেশি হয় তাহলে তা চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট হতে হবে। যারা বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়া তাদের উভয়কে ভাড়া-সংক্রান্ত তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দিতে হবে। রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে। আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থা মোটেও আধুনিক এবং যগোপযোগী নয়। আমাদের দেশে যাদেরই জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তাদের ট্যাক্স রিটার্ন দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের সুবিধা যেহেতু তিনি পাচ্ছেন তাই তাকে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। বর্তমানে যে টিআইএন সিস্টেম চালু আছে তা কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা যেতে পারে। বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণের পরিমাণ প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। এটা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বাড়ানো গেলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।
লেখক: সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সভাপতি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
অনুলিখন: এম এ খালেক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে