Views Bangladesh Logo

বইমেলার আলোচনা সভায় বক্তারা

‘হায়দার কখনো কট্টরপন্থার অনুসারী ছিলেন না’

বিশিষ্ট সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেছেন, ‘হায়দার আকবর খান রনো কখনো কট্টরপন্থার অনুসারী ছিলেন না। তিনি ভিন্ন মেরুর বামপন্থী নেতাদের একসঙ্গে বসিয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে সচেষ্ট ছিলেন। বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রনোর ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ’।

অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিনের আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘রাজনীতির বাইরেও বিচিত্র বিষয়ে আগ্রহ ছিল রনোর। মার্ক্সবাদী দর্শন ও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজ ভাষায় পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি’।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার মূলমঞ্চে ‘হায়দার আকবর খান রনো : আজীবন বিপ্লব-প্রয়াসী’ শীর্ষক এ সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রাবন্ধিক সোহরাব হাসান।

দীপা দত্তের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, জলি তালুকদার এবং অনন্যা লাবণী পুতুল।

সোহরাব হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন হায়দার আকবর খান রনো। তিনি ছিলেন এদেশের বাম রাজনীতির একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষক। অগ্রজদের কাছ থেকে যে শিক্ষা নিয়েছেন সেটাই তিনি পৌঁছে দিয়েছেন অনুজ কমরেডদের কাছে’।

আলোচকরা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হায়দার আকবর খান রনো প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠেছেন। মার্ক্সীয় তত্ত্ব অধ্যয়ন ও অনুশীলনের সমন্বয় ঘটেছিল তার জীবনে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল গভীর। মানুষ হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী হায়দার আকবর খান রনো বামপন্থীদের অনেক বিভেদের মধ্যেও নিজের নীতিতে ছিলেন অটল’।

আলোচকরা বলেন, ‘সমাজতন্ত্রের যে স্বপ্ন তিনি নিজের ভেতর লালন করেছেন, তা নিয়েই আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন’।

সভাপতির বক্তব্যে দীপা দত্ত বলেন, ‘হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। তিনি কেবল কমিউনিস্ট নেতাই নন, একজন তাত্ত্বিকও। তার লেখনী, রাজনৈতিক আদর্শ, সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা আমাদের জন্য আগামীর প্রেরণা হয়ে থাকবে’।

মেলায় ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি চঞ্চল আশরাফ এবং শিশুসাহিত্যিক আতিক হেলাল।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মোহন রায়হান ও রেজাউদ্দিন স্টালিন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি এবং হ্যাপি হাবিবা।

ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামানের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাঁশরী’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী এ কে এম শহীদ কবির, রেজাউল করিম, মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া, রত্না দাস, দেবাশীষ শর্মা ও মাহমুদুল হাসান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার (তবলা), রবিনস্ চৌধুরী (কী-বোর্ড), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), ফিরোজ খান (সেতার)।

সোমবার বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া মেলা চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ৩২টি।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মেলার চতুর্থ দিনে বিকেল চারটায় মূলমঞ্চে হবে ‘কুমুদিনী হাজং’শীর্ষক আলোচনা সভা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পাভেল পার্থ। আলোচনায় অংশ নেবেন মতিলাল হাজং এবং পরাগ রিছিল। সভাপতিত্ব করবেন আবু সাঈদ খান।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ