চীন ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ‘ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যু’ যে দিকে ধাবিত হচ্ছে
চীন ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনের সমর্থক; কিন্তু সম্প্রতি, নতুন এবং অনেকটাই ভিন্ন রকমের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বেইজিং ও মস্কোকে। প্রায় এক বছর আগে গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষে তারা অবতীর্ণ হয়েছে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে। জুলাই মাসে, হামাস, ফাতাহ এবং অন্যান্য প্রায় এক ডজন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী মিলে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে একটি অস্থায়ী চুক্তি স্বাক্ষর করে। গাজার যুদ্ধ শেষে সেখানকার প্রশাসনের জন্য একটি জাতীয় পুনর্মিলনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে ওই চুক্তি হয়েছিল। এই গোষ্ঠীগুলো একই ধরনের চুক্তির জন্য ফেব্রুয়ারিতে মস্কোতেও বৈঠক করেছিল। চীন ও রাশিয়া উভয়ই ইরান, সিরিয়া আর তুরস্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তিমত্তার খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে। প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো, বেইজিং বা মস্কো কেউই হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে না। তাই হামাসকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানাতে কোনো সমস্যা নেই চীন ও রাশিয়ার। তবে এই ধরনের মধ্যস্থতায় কোনো বাস্তব ফলাফল হবে কি?
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সেটা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন। তবে এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, চীন ও রাশিয়া এই হস্তক্ষেপের মাধ্যমে কী করতে চাইছে? এক্ষেত্রে তাদের দুটি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে: আন্তর্জাতিক প্রভাব অর্জন এবং বিশ্বে আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তিকে প্রতিহত করা। যদিও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে মস্কো বা বেইজিং যে ফিলিস্তিনের প্রতি খুব একটা সহানুভূতি- শীল, এটা বলার সুযোগ নেই, বরং দুই দেশের সঙ্গেই ইসরায়েলের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়া ও চীন সংঘাত এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ পন্থায় সমস্যা সমাধানের তাগিদ দিয়েছে। এই শান্তিপূর্ণ পন্থা বলতে চীনের দিক থেকে স্পষ্ট করেই ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে হামাসকে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেয়া হলেও এ বিষয়ে চীন ও রাশিয়ার অবস্থান ভিন্ন। কৌশলগত কারণে তারা হামাসকে প্রতিরোধ যোদ্ধা বলে মনে করে আর সে জন্যই ইসরায়েলের কাছে তাদের বার্তা হলো আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা। অন্যদিকে চীন ও রাশিয়াকে ইসরায়েলের তরফ থেকে এই মর্মে বোঝানো হয়েছে যে ইসরায়েল হচ্ছে ওয়াশিংটনের গেটওয়ে। সেই বিবেচনায় চীন ও রাশিয়ার উচিত হবে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে ইসরায়েলকে আমলে নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলো সমাধান করা। এ ক্ষেত্রে চীন মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কূটনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে পরিবর্তন এনেছে। শি তার বৈদেশিক নীতিতে একটি আদর্শিক উপাদানকে পুনঃপ্রবর্তন করছেন, তবে তা বরাবরই চীনের স্বার্থ রক্ষার জন্য এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত চীনের এই পন্থা বাস্তবায়নে সহায়ক হতে পারে।
ফিলিস্তিনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক শুরু হয় একটু ভিন্নভাবে। যখন ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে, তখন জোসেফ স্ট্যালিনের অধীনে সোভিয়েত ইউনিয়ন এটিকে স্বীকৃতি দেয়া বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল। জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতির ইমেরিটাস অধ্যাপক মার্ক কাটজ বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন,'সেই সময় মনে হচ্ছিল ইসরায়েলের সমাজতান্ত্রিক ঝোঁক ছিল, যখন সমস্ত প্রতিবেশী দেশ ইউরোপীয় উপনিবেশ ছিল'। তবে, ইসরায়েল একটি সমাজতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়নি এবং ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি, সাবেক সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ আরব জাতীয়তাবাদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। ফিলিস্তিনের স্বার্থ দেখা মস্কোর জন্য খুব দরকার ছিল কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ইসরায়েলকে সমর্থন করেছিল, তখন সোভিয়েতরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করায় আরব দেশগুলোর মধ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল।
কিন্তু ফিলিস্তিনের স্বার্থ রক্ষা আরব বিশ্বের অনেকের কাছে নীতিগত বিষয় হলেও, মস্কোর জন্য এটি ছিল কেবলই একটা সুবিধা নেয়ার বিষয়। তারা ফিলিস্তিনকে অবশ্য এতটাও সমর্থন করতে যাচ্ছিল না যে তা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করবে এবং তারা কখনই ইসরায়েল বিরোধী ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সঙ্গে সঙ্গে, ইসরায়েলের প্রতি রাশিয়া নমনীয় হতে শুরু করে, এবং রুশ ইহুদিদের অভিবাসন থেকে বিরত রাখার নীতিগুলো শিথিল করা হয়। ভ্লাদিমির পুতিন ২০০০ সালে যখন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি হন, ইতিমধ্যেই ১০ লাখেরও বেশি ইসরায়েলি সোভিয়েত ঐতিহ্যকে ধারণ করেছিল, যাদের মধ্যে অনেকেই রুশ ভাষায় কথা বলত। ক্রেমলিন তখন থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।সম্প্রতি অবশ্য ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে এই সম্পর্ক বেশ ঠান্ডা হয়ে গেছে, যা আরও শীতল হয়েছে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে, যেদিন ইসরায়েলের ওপর হামাস আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে ১২শর বেশি লোককে হত্যা করে এবং ২৫১জনকে জিম্মি করে। ইসরায়েল এই হামলার জবাবে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। চীন ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানি কারক হয়ে উঠেছে,দেশটিতে তেলের আনুমানিক অর্ধেকই মধ্যপ্রাচ্য ও পারস্য উপসাগরের দেশগুলো থেকে আসে। এর অর্থ কি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টা চীনের অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। অনেক আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে এবং যারা এখনও সেটা করেনি, যেমন; সৌদি আরব, গাজা যুদ্ধ মিটে গেলেই তা করতে প্রস্তুত তারা। চীন এটি বুঝতে পেরেছে।
চীনের মূল লক্ষ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং বিশ্বে একটি প্রধান শক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান তুলে ধরা। চীন একটি যুক্তিসঙ্গত এবং দায়িত্বশীল মহান শক্তি হিসাবে নিজেকে দেখাতে চায়, যে কিনা মধ্যস্থতা এবং শান্তি বিনির্মাণে আগ্রহী। বেইজিং মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব ব্যবস্থার বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। বিশেষ করে বিশ্বের সেই অঞ্চলে, যেখানে বেশিরভাগ দেশ ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে। কীভাবে ফিলিস্তিনিদের একত্রিত করা যায় বা কীভাবে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে জটিল সংঘাতের সমাধান করা যায় সে বিষয়ে চীনের কোনো ধারণা নেই এবং এই দ্বন্দ্বের সমাধানের সঙ্গে এর কোনো বড় স্বার্থ জড়িত নেই। রাশিয়ার জন্য, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে খুবই কার্যকর হয়েছে। গত বছর ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধকে শুধু সংবাদের এজেন্ডা থেকেই দূরে ঠেলে দেয়া হয়নি, সেই সঙ্গে ইউক্রেনের মিত্ররা, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে যে অস্ত্র সহায়তা পাঠাচ্ছিল তার কিছুটা অংশ এখন ইসরায়েলেও চলে যাচ্ছে।
ক্রেমলিন বিশ্বাস করে যে পশ্চিমারা রাশিয়াকে ইউক্রেন দখলের দায়ে অভিযুক্ত করলেও একই সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের সঙ্গে যা করছে সে বিষয়ে নীরব থাকার মধ্য দিয়ে একটি দ্বৈত নীতি প্রয়োগ করছে। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার শীতলতা থেকে বেরিয়ে আসতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছে। রাশিয়া যখন ২০০৮ সালে জর্জিয়া আক্রমণ করেছিল, তখন হামাস ও হিজবুল্লাহ উভয়ই রাশিয়ার অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছিল। অর্থাৎ তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে মুসলমানদের পক্ষ নেয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা সত্ত্বেও, ক্রেমলিন গোষ্ঠীটিকে কোনো অস্ত্র পাঠিয়েছে বলে মনে হয় না। এর একটি কারণ হচ্ছে, ইউক্রেনকেও ইসরায়েল একই রকম সহায়তা দিক, এমন ঝুঁকি নিতে চায় না রাশিয়া।
তবে কৌশল গত তাদের কিছু লক্ষ্য একই হতে পারে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণাঞ্চলে মার্কিন প্রভাব খর্ব করতে, কিন্তু এক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়ার পদ্ধতি ভিন্ন।রাশিয়া এই অঞ্চলে সামরিকভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে, যেমনটি সিরিয়ার যুদ্ধে হয়েছিল। তবে চীনের এমন কিছু করার কোনো ইচ্ছা নেই। চীন তার স্বার্থের জন্য কিছু সমন্বয় করে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতে চায়, অন্যদিকে, রাশিয়া চায় এটিকে পুরোপুরি ভেঙে দিয়ে এমনভাবে পুনর্গঠন করতে, যাতে রাশিয়ার স্বার্থের জন্য সুবিধা হয়। যদিও রাশিয়া ও চীন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষ্যে কথা বলছে, সার্বিকভাবে ভেবে দেখলে বুঝতে অসুবিধা হবে না যে এটি আসলে এই মুহূর্তে তাদের দিক থেকে এক ধরনের কূটনৈতিক অবস্থান।
বাস্তবে তাদের দিক থেকে প্রত্যাশা হচ্ছে, এই যুদ্ধটি আরও প্রলম্বিত হোক ও এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের পুরোটাই মধ্যপ্রাচ্যে এসে নিবদ্ধ হোক। তাহলে এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রত্যাশিত ফলটা রাশিয়া ও চীন উভয়ের জন্যই অর্জন করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যের নয়া সংকটের জন্য পশ্চিমা বিশ্বকে দোষারোপ শুরু করেছে। তারা বলছে, পশ্চিমা বিশ্ব মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যার দিকে নজর না দিয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে সেখানে সংকট সৃষ্টি করেছে, যার মধ্য দিয়ে হামাসের শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যমে সেখানে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব হিজবুল্লাহসহ আরও অনেক ইসরায়েলের প্রতিপক্ষ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ব্যাপক হয়েছে। রাশিয়া সরকারের মতে, ৭৫ বছর ধরে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের মূলে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। মূলত যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের মদদে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব টিকে আছে, যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের স্বার্থের নিশ্চয়তা বিধানে কাজ করে। এরই মধ্যে সেখানে চীনের সরব উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেকটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন হামাসের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ এবং ইসলামী জিহাদসহ নতুন করে জেগে ওঠা অপরাপর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়াটা ইসরায়েলের একার পক্ষে যেমন সম্ভব নয়, একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের একক উপস্থিতিও যথেষ্ট নয়। রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অনেকভাবেই লাভবান হতে পারে; যেমন মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের পাশাপাশি ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পশ্চিমা জনমতে ফাটল ধরতে পারে, পশ্চিমা দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাতে পারে, এবং ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে এক ধরনের প্রচারণা চালানো হতে পারে যে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধকে উপেক্ষা করছে এবং সর্বোপরি পশ্চিমাদের যখন সম্মিলিতভাবে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সব শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করতে দেখবে, তখন চূড়ান্তভাবে ইউক্রেন সরকারের মনোবল ভেঙে যেতে পারে।
এসব কারণ বিশ্লেষণ করলে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে রাশিয়া এবং চীন যদিও ইসরায়েলের এই হামলাকে পছন্দ করছে না, কৌশলগত কারণে কিন্তু তারা এর জোরালো বিরোধিতাও করছে না। তারা বরং এখানে জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদের ভূমিকা দ্বারা আন্তর্জাতিক সমাজকে এই বার্তাই দিতে চাইছে যে যুক্তরাষ্ট্র আসলে একটি যুদ্ধপ্রিয় দেশ, সারা পৃথিবীতে বিরোধ টিকিয়ে রাখাই যাদের কাজ। বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে সংকট যত ঘনীভূত হবে এবং যত বেশি প্রলম্বিত হবে, রাশিয়া ও চীন ততই এর থেকে ফায়দা নেবে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির মারপ্যাঁচে আগামী দিনের জন্য তাদের অবস্থান সুসংহত করবে।
রায়হান আহমেদ তপাদার: গবেষক ও কলাম লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে